উন্মাদনায় ফিরল আসিয়ানের স্মৃতি

অপেক্ষা বোধহয় একেই বলে! এক যুগ পর সর্বভারতীয় ট্রফি জিতে তিলোত্তমায় ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল। সোমবার মহানগরীর আকাশ-বাতাস লাল-হলুদময়।

Must read

চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: অপেক্ষা বোধহয় একেই বলে! এক যুগ পর সর্বভারতীয় ট্রফি জিতে তিলোত্তমায় ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল। সোমবার মহানগরীর আকাশ-বাতাস লাল-হলুদময়। সুপার কাপ জয়ের জন্য ইস্টবেঙ্গলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কোচ এবং ফুটবলারদের নিয়ে সুপার কাপ জয়ী ইস্টবেঙ্গলের বিমান কলকাতা বিমানবন্দরে নামে দুপুর তিনটে পঁয়তাল্লিশ নাগাদ। প্রবল দর্শক উন্মাদনা ও জনজোয়ারের কারণে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে বাসে ওঠার রাস্তাই ছিল না।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

প্রায় হাজার সাতেক সমর্থক তাঁদের নায়কদের বরণ করতে বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন। ক্লেটন সিলভাদের বেরোতে সময় লাগে এক ঘণ্টারও বেশি সময়। পুলিশি নিরাপত্তা বাড়িয়ে কার্লেস কুয়াদ্রাতদের বিমানবন্দরের বাইরে এনে টিম বাসে তোলা হয়। ক্লেটন, জেভিয়ার সিভেরিও, সাউল ক্রেসপোদের দেখে স্লোগান উঠল, ‘হাতে মশাল বুকে বারুদ, আমরা হলাম লাল-হলুদ’, ১০০ বছর ধরে মাঠ কাঁপাচ্ছে যে দল, লাল-হলুদ ঝড়ের নাম ইস্টবেঙ্গল’। বিমানবন্দর চত্বর তখন যেন লাল-হলুদ সমুদ্র। ২১ বছর আগে ইস্টবেঙ্গল জাকার্তা থেকে আসিয়ান কাপ জিতে ফেরার পর বাইচুং ভুটিয়া, মাইক ওকোরোদের নিয়ে এমনই আবেগের বিস্ফোরণ দেখেছিল শহর।

আরও পড়ুন-বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে

ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের বাইকবাহিনী কুয়াদ্রাতদের নিয়ে এগিয়ে চলা টিম বাসের পাশে থেকে এগিয়ে যায়। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থকরা বাসে থাকা কুয়াদ্রাত, ক্লেটনদের ছবি মুঠোফোনে তুলে রাখেন। ইস্টবেঙ্গল টিম বাসের গন্তব্য ছিল ক্লাব তাঁবু। সেখানেই চ্যাম্পিয়নদের বরণ করার জন্য আয়োজন ছিল। দীর্ঘ ১২ বছর পর ট্রফি জয়, প্রথা মেনে ফুটবলারদের দিয়েই ক্লাব লনে পতাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু জনস্রোত সামলে সন্ধ্যার আগে ক্লাবে পৌঁছতে পারেনি লাল-হলুদের টিম বাস। তাই প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, অলোক মুখোপাধ্যায়দের নিয়ে পতাকা উত্তোলন করেন ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার।
আসল সেলিব্রেশনটা হল অবশ্য মাঠে। জনস্রোত ও যানজটে বিমানবন্দর থেকে কুয়াদ্রাত, ক্লেটনদের লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবে পৌঁছতে সময় লেগে যায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময়। অপেক্ষায় থাকা সমর্থকরা গ্যালারি ভরিয়েছিলেন। রাত আটটার সময় ট্রফি নিয়ে মাঠে আসেন ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। তারপর কোচ, ফুটবলাররা। উচ্ছ্বাস, আবেগের ঢেউ ওঠে গ্যালারিতে। উড়ল লাল-হলুদ আবির।

আরও পড়ুন-‘হাইকোর্টের ঘটনা অনভিপ্রেত’:অভিষেক

জ্বলল রংমশাল। স্লোগান, ব্যান্ড, আতশবাজিতে মুখরিত ইস্টবেঙ্গল তাঁবু। কোচ কুয়াদ্রাতকে নিয়ে কেক কাটলেন সুপার কাপ জয়ের নায়ক ক্লেটন। সেই সময় সমর্থকরা মাঠে ঢুকে পড়েন। আনন্দে তাঁরা মাঠেই শুয়ে পড়েন। কোচ, ফুটবলারদের জড়িয়ে ধরে ভালবাসায় ভরিয়ে দেন। ভক্তদের কাছ থেকে ফুটবলারদের উদ্ধ্বার করে ক্লাব তাঁবুতে নিয়ে যান কর্তারা। ক্লেটন বলেন, ‘‘সমর্থকদের জন্য আরও ট্রফি জিততে চান ইস্টবেঙ্গলের জন্য।’’ ক্লাবের ইনভেস্টর কর্তারাও তাঁদের প্রথম ট্রফি জয় উপভোগ করেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, ইস্টবেঙ্গলের উন্নতিতে তাঁরা দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে ক্লাবের সঙ্গে থাকবেন। সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দলের ছেলেদের দু’দিনের ছুটি দিয়েছেন কুয়াদ্রাত। তাই ভারতীয় প্লেয়ারদের অনেকেই বাড়ি গিয়েছেন। ক্লেটন, হিজাজি, ক্রেসপোরা অবশ্য কোচের সঙ্গেই কলকাতায় ফেরেন।

Latest article