সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর : শুক্রবার সপ্তমীর সকালে সুতির রাজুয়া দিঘিতে মঙ্গলঘটে জল ভরে শুরু হল রাজরাজেশ্বরী মায়ের পুজো। বংশবাটি গ্রামের অন্যতম সেরা উৎসব এই রাজরাজেশ্বরী দুর্গোৎসব। মাঘ মাসে শীতের বিদায়লগ্নে পূজিত হন দেবী। প্রতি বছর এই পুজোয় মেতে ওঠেন এলাকার মানুষ। দেবীর দর্শন পেতে মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার বিভিন্ন গ্রামের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকেও প্রচুর মানুষ জড়ো হন। বসে মেলা। সঙ্গে যাত্রা, বাউলগান, নাটক ও কবিগানের আসরে নজরকাড়া ভিড় হয়। রাজরাজেশ্বরী দুর্গোৎসব সম্প্রীতির উৎসব। হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোয় শামিল হন।
আরও পড়ুন-পুরুলিয়ার জঙ্গলে কৃষি দফতরের সাহায্যে চলছে তসর গুটি চাষ
মহাসপ্তমী তিথিতে রাজরাজেশ্বরী মায়ের পুজো শুরু হয়ে চলে পরবর্তী মাঘী পূর্ণিমা পর্যন্ত। মন্দিরের পুরোহিত নিতাই চক্রবর্তী ও বাবুরাম মজুমদার বলেন, ‘রাজরাজেশ্বরী হলেন দেবী দুর্গার ষোড়শী রূপ। এখানে দেবী শবাসনে বিরাজমানা।’ বংশবাটির মন্দিরে দেবীর কাঠামোতে শবরূপী শিব শায়িত। শিবের নাভি থেকে প্রস্ফূটিত হয় দুটি পদ্ম। দেবী রাজরাজেশ্বরী শবাসনে বিরাজ করে ধরিত্রীকে ধারণ করে থাকেন। একই কাঠামোতে বিরাজ করেন চতুর্মুখী ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর এবং ধর্মরাজ। মা রাজরাজেশ্বরী চতুর্ভূজা। তাঁর দুপাশে থাকেন দুই সখী জয়া এবং বিজয়া। দেবীর বাহন সিংহ। জনশ্রুতি, বহু বছর আগে ভয়ঙ্কর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় বংশবাটি গ্রাম। সেই সময় রাজুয়া দিঘি নামে একটি বৃহৎ জলাশয় থেকে দেবী উঠে এসে গোটা গ্রামকে রক্ষা করেন। তারপর থেকেই গ্রামে রাজরাজেশ্বরই দুর্গা হিসেবে পূজিতা হয়ে আসছেন। তবে দশমীর দিন তাঁর বিসর্জন হয় না। দশমী শেষে পূর্ণিমা পার করে কোনও এক শুভদিনে ভক্তরা কাঁধে চাপিয়ে নিরঞ্জনের জন্য দেবীকে নিয়ে রাজুয়া দিঘিতে।