ব্যুরো রিপোর্ট : ঘটনা: স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। হাসপাতালে ভর্তি করতে পারছেন না স্বামী। রাতারাতি বাতিল হয়েছে আধার। ঘটনা মালদহের হবিবপুরের।
তামিলনাড়ুতে চাকরি করেন স্বামী। সংসার খরচের টাকা পাঠান স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আধার বাতিলে ব্যাঙ্কের কাজ করতে পারছেন না।
কোচবিহারের দিনহাটার পরিবারের সদস্যদেরও মাথায় হাত এসেছে বাতিলের চিঠি।
চাপড়ার নিখিল বিশ্বাস বলেন,‘‘রেশন দিচ্ছে না। ব্যাঙ্কে গেলে টাকা পাচ্ছি না। বাড়ির লোকজনদের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও আসছে না। একটা চিঠি এসেছে। আমি নাকি এদেশের নাগরিক নয়। আমরা এ নিয়ে কোথায় কী করব বুঝতে পারছি না। রাজ্যজুড়ে আধার বিভ্রাটে এভাবেই বিপাকে পড়েছেন মানুষ। এককথায় বলতে গেলে আধার নিয়ে এখন আতঙ্কের কারণ হয়েছে দাঁড়িয়েছে।
ধূপগুড়ির পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর ছেলের আধার বাতিলের নোটিশ।
আরও পড়ুন-নবম থেকে দ্বাদশ এবার থেকে বই খুলেই পরীক্ষা
রাতারাতি আধার বাতিল হয়ে যাওয়ায় এভাবেই বিপাকে পড়েছেন মানুষ। এককথায় আধার এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধার নিয়ে চোখে আঁধার দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন মোদি? বসিরহাটের হাসনাবাদ থানার বরুণহাট-রামেশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বরুণহাট এলাকার প্রায় ২৬ জনের আধার কার্ড বাতিলের চিঠি এসেছে। এরমধ্যে ১২ জনের চিঠি স্থানীয় পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌছে গেছে গত তিন চারদিন আগে। বাকিদের ঠিকানা না মেলায় ও বাড়িতে না পাওয়াতে চিঠিগুলো পোস্ট অফিসে ফেরত গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমাদের একমাত্র ভরসা। আমরা তাঁর কাছেই আর্জি জানাচ্ছি আমাদের এই সমস্যা থেকে মুক্ত করানোর জন্য। মালদহের হবিবপুরের আলিও গ্রাম পঞ্চায়েতের খোট্টাপাড়ার পাল পরিবার গত মঙ্গলবার আধার বাতিলের চিঠি পেয়েছে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভয়বাণীতেই আশ্বস্ত হয়েছেন পাল পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তাঁরা। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস ও ব্লক প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে ভোলেননি গৃহকর্তা প্রদীপ পাল। আইহো বাজারে ছোটখাটো মিষ্টির দোকান রয়েছে প্রদীপবাবুর। তার ওপর নির্ভর করেই চলে সংসার। স্ত্রী চামেলি পাল ও পাপ্পু পাল এবং শ্রাবণ পাল নামের দুই সন্তানের আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেটের চিঠি বাড়িতে এসে পৌঁছয়। নদিয়ার চাপড়ার নিখিল বিশ্বাস বলেন,‘‘রেশন দিচ্ছে না। ব্যাঙ্কে গেলে টাকা পাচ্ছি না। বাড়ির লোকজনদের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও আসছে না। একটা চিঠি এসেছে। আমি নাকি এদেশের নাগরিক নয়। আমরা এ নিয়ে কোথায় কী করব বুঝতে পারছি না। এ প্রসঙ্গে আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট করার চিঠি পাওয়া বৃদ্ধ গজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন,‘‘আধার কার্ড বাতিল হয়েছে মানে সবই বাতিল হয়েছে। রেশন পাচ্ছি না। ব্যাঙ্কে টাকা যাচ্ছে না। আর কী হবে? খুবই কষ্টে আছি। আমরা এখন কলকাতা যাব।’’