কলকাতার রাস্তায় হিট এন্ড রান ঘটনা হামেশাই ঘটছে। রাস্তায় মানুষকে পিষে দিয়ে লরি ফেলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পালিয়ে যায় চালক। পথচারীদের ধাক্কা মেরে তাকে বাঁচানোর সামান্যতম চেষ্টা করতে দেখা যায় না চালককে। থানায় হাজিরা অনেক পরের কথা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত চালককে খুঁজেই পাওয়া যায় না। পেলেও অনেকটা সময় লেগে যায়। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাস নিয়ে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, বা বাস ফেলেই পালিয়ে যান চালক ও কন্ডাক্টর। পুলিশের তরফে মনে করা হয় চালক ব্যক্তি এমন ব্যবহার না করলে কিছু না হলেও সামান্য চিকিৎসা পেতে পারতেন আহতরা।
আরও পড়ুন-আনন্দপুরে বেসরকারি হাসপাতালের সামনে বিস্ফোরণ, ভস্মীভূত ঝুপড়ি
একাধিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার কড়া অবস্থান নিতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। জানা যাচ্ছে, নতুন ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৬/২ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও গাড়ি কাউকে ধাক্কা মারে এবং চালক পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দ্রুত বিষয়টি না জানিয়ে পালিয়ে যায়, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ১০৬/২ ধারা যুক্ত করতে পারে। দোষী প্রমাণিত হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এই বিষয়ে, আইনজীবী দেবকুমার চন্দ্র বললেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪এ, গাফিলতির কারণে মৃত্যুর ধারার পরিবর্তে এই নতুন ধারা ব্যবহার করা হবে। পুরনো ধারায় দু’বছরের কারাদণ্ড ছিল। সেটা এবার বাড়ানো হয়েছে। আসলে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কাউকে গাড়ি বা মোটরবাইক দিয়ে ধাক্কা মারার পরে তাঁকে ফেলে রেখে চালকের পালিয়ে যাওয়ার কারণে চিকিৎসার সুযোগটাও পাওয়া যায় না। দায় না নিয়ে পালিয়ে বাঁচার জায়গাটা বন্ধ করতে এই নতুন ধারা কার্যকর করার ভাবনা চলছে।’
আরও পড়ুন-স্কুলের সামনে মদের দোকান তুলতে কোর্টের দ্বারস্থ পাঁচ বছরের শিশু
কলকাতা পুলিশ একটি পরিসংখ্যান তুলে জানিয়েছেন, গোটা দেশে ২০২২ সালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার জনের। প্রতিদিন ৪৬২ জন মারা গিয়েছেন। গোটা বিশ্বে পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বছরে পাঁচ শতাংশ কমছে, সেখানে ভারতে সেই সংখ্যা প্রতি বছর ১২ শতাংশ করে বাড়ছে। ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরো’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২২ সালে দেশে ৪৭ হাজার ৮০৬টি ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলা হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫০ হাজার ৮১৫ জনের।