২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের (Loksabha Election)নির্ঘণ্ট প্রকাশ করছে নির্বাচন কমিশন (Election commission)। কত দফায় লোকসভা ভোট হবে, কবে কবে ভোটগ্রহণ হবে, কবে কোথায় ভোট হবে, কবে ভোটগণনা হবে, সেইসব যাবতীয় তথ্য আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে। একইসঙ্গে ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম ও অন্ধ্র প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের দিনও ঘোষণা করা হবে। আজ, লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গেই জারি হবে আদর্শ আচরণবিধি। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সাত দফায় লোকসভা ভোট হয়েছিল। বৈঠকে উপস্থিত আছেন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার রাজীব কুমার-সহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর মন্তব্য শুভেন্দুর, খেজুরিতে প্রতিবাদে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস
আজ, শনিবার বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, সপ্তদশ লোকসভা লোকসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৬ জুন। অরুণাচল প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা এবং সিকিমের বিধানসভা ভোটের মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুনে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। ৪৯.৭ কোটি পুরুষ ও ৪৭.১ কোটি মহিলা ভোটার। নতুন ভোটার ১.৮২ কোটি। ৫৫ লাখ ইভিএমের ব্যবস্থা করা হবে। ১০.৫ লাখ বুথ আছে। ৫৫ লাখের বেশি ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ১.৫ কোটি বুথকর্মী এবং সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিক থাকছেন। প্রথমবার ভোট দেবেন ১.৮ কোটি তরুণ-তরুণী (১৮ বছর থেকে ১৯ বছর)। শতায়ু ভোটারের সংখ্যা হল ২.১৮ লাখ। ট্রান্সজেন্ডার ভোটারের সংখ্যা হল ৪৮,০০০। ৮৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারের সংখ্যা হল ৮২ লাখের বেশি। এবারে বেড়েছে মহিলা ভোটারের সংখ্যা। ৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১২ রাজ্যে পুরুষ ভোটারের তুলনায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি।
আরও পড়ুন-দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিধায়ক মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির বিলে সই করলেন রাজ্যপাল
সব পোলিং স্টেশনে থাকবে জলের ব্যবস্থা। প্রতিটি জেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম থাকবে। ১৯৫০ হল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর। সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং হবে, সি ভিডিল্যান্স এবং গ্রিভ্যান্স সেল থাকবে। একজন ভিজিল্যান্স অফিসার সেখানে থাকবেন। তিনি সবদিকে নজর রাখবেন। সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক অফ চেকপোস্ট করা হয়েছে। ড্রোন দিয়ে সম্পূর্ণ ঘটনার ওপর রাখা হবে নজর। এদিন তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার নিয়ে আমরা সতর্ক। ফেক নিউজ করা যাবে না। এবারের নির্বাচনে রাজ্যের হাতে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিলিট করার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। তথ্য যাচাই করা হবে তাই এবার নিজেরাও সতর্ক হন। যাচাই না করে কোন কিছু শেয়ার করবেন না। সংবাদমাধ্যমকেও কড়া বার্তা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। কোনও বিজ্ঞাপন হলে, সেটা জানাতে হবে। মোট ২১০০ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। তারাই বাহিনী নিয়োগ করবেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কোনওভাবে শিশুদের ব্যবহার করা যাবে না। থ্রি-এম-কে রুখে দেবে নির্বাচন কমিশন। এই থ্রি-এম হল মাসেল পাওয়ার, মানি পাওয়ার ও মিস ইনফরমেশন।
আরও পড়ুন-অনলাইনে সরকারি ছুটির আবেদনের বিজ্ঞপ্তি জারি করল অর্থ দফতর
৮৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের কাছে ফর্ম পৌঁছে দেওয়া হবে। তারা বুথে না আসলে, বাড়ি গিয়ে ভোট গ্রহণ করা হবে। সতর্কবার্তা দিয়ে এদিন রাজীব কুমার কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে হিংসার কোনও জায়গা নেই। লোকসভা নির্বাচনে রক্তগঙ্গা আশা করা যায় না। এই মর্মে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেকোন প্রার্থীর অপরাধের ইতিহাস বা ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে, তাঁকে তিনবার সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক দলকেও জানাতে হবে, কেন এমন ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রার্থী করা হল। শুধু তাই নয় নির্বাচনী ডিউটিতে সরকারি কর্মীদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে থাকছে কড়া নিয়ম। নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও কাজে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ব্যবহার করা যাবে না। ১১ রাজ্যের নির্বাচনে ৩৪০০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন আটকানো হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ভোটারদের প্রভাবিত করা যাবে না। সব এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিকে এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিনামূল্যে উপহার দেওয়া চলবে না। টাকা, মদ, শাড়ি, প্রেসার কুকারের মতো জিনিস দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার খবর পেলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যে কোনও পণ্যের চাহিদা হঠাৎ বাড়ছে কি না জিএসটি-র মাধ্যমে সেই বিষয়ে নজর রাখা হবে। বিমানবন্দরে থাকবে কড়া নজরদারি। যে রাজ্যে হেলিকপ্টার অবতরণ করে, সেখানে চেকিং হবে। রেল ও সড়কপথে থাকবে কড়া নজরদারি।