মুখোশ খুলে গেল আব্বাস-নওশাদদের

এর থেকে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে? এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপন করা জরুরি। এবং একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত।

Must read

প্রতিবেদন : আব্বাস সিদ্দিকিদের আইএসএফ যে আসলে বিজেপির এজেন্ট তার প্রমাণ দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার কালীঘাটে নির্বাচন কমিটির বৈঠক শেষে তৃণমূল একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আনে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আব্বাস সিদ্দিকি বলছেন, আমরা যারা বিজেপিকে পছন্দ করি, তারা তৃণমূলকে ভোট দেব কেন? আব্বাসের কথায় পরিষ্কার, আইএসএফ আসলে ছদ্মবেশী ভারতীয় জনতা পার্টি। খুলে গেল মুখোশ। বাম-বিজেপি-আইএসএফ গোপন আঁতাঁত প্রকাশ্যে, এর জবাব দিন নওশাদ।

আরও পড়ুন-যতবার কেন্দ্রীয় বাহিনী-ততবার জয়

শুধু তাই নয়, নওশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে দুই বিজেপি নেতার হোয়াটসঅ্যাপ-চ্যাট প্রকাশ্যে চলে আসায় ২০২১-এর হাই ভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাঁত করেছিল আইএসএফ। এর সঙ্গে সিপিএমের জড়িত থাকার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য এই গোপন চ্যাট ফাঁস করে দেওয়ায় প্রবল বিপাকে পড়েছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধায় শুক্রবার গভীর রাতে এটি রি-ট্যুইট করেন।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

এর ফলে বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়ে যায়। চ্যাটে দেখা যাচ্ছে ২০২১-এর ভোটের আগে ভাঙড়ের আইসি শ্যাম সাহা ও সেকেন্ড অফিসার রেফাজুল ইসলামকে সরানোর জন্য বলছে। কিন্তু কেন? এখানেই গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেবাংশু। তিনি পাঁচটি প্রশ্ন তুলেছেন। নওশাদবাবুর এই কথোপকথন যদি ‘ফেক’ হয় তাহলে—
১. শেষ ১২ ঘণ্টায় তাঁর কোনও বিবৃতি নেই কেন? কারও বিরুদ্ধে আনা কোনও অভিযোগ মিথ্যা হলে মানুষ ১৫ মিনিটে তা খারিজ করে। সময় কেনার অর্থ হল স্রেফ গল্প সাজানো।
২. মামলা করছেন না কেন? তিনি যদি নিশ্চিত হন এই কথোপকথন তাঁর নয়, তবে বুক-ঠুকে তদন্তের দাবি করছেন না কেন?
৩. ওই কথোপকথনে যে আলোচনাগুলি হয়েছে, গত বিধানসভা নির্বাচনে সেগুলো ঘটেছিল কি না খোঁজ করে দেখলেই তো হয়!
৪. আলোচনায় নওশাদবাবুকে যে ইলেকশন অফিসারের নাম্বার নিত্যানন্দ রায়ের পিএ পাঠিয়েছেন, সেটা অরিজিনাল কি না চেক করে দেখলেই তো দুধ কা দুধ, পানি কা পানি হয়ে যায়! প্রয়োজনে, ওই নির্দিষ্ট তারিখের দিন ও নিকট কয়েকদিনের ওই ইলেকশন অফিসারের নাম্বারে ভাঙড় এলাকার কোন কোন নাম্বার থেকে কল এসেছিল, আদালতে মামলা করে তার কল হিস্ট্রির রেকর্ড আদায় করার ব্যবস্থা করছেন না কেন?
৫. তিনি কি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য সময় নিচ্ছেন উত্তর দিতে? কারণ, তিনি যদি এটাকে ফেক বলেন, তবে কৈলাস বিজয়বর্গীয়কেও ফেক বলতে হবে! তাই শুভেন্দুবাবুর মাধ্যমে কি কৈলাসবাবুর থেকে গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষা করা হচ্ছে? এগুলোর উত্তর দিন ক্ষমতা থাকলে।

আরও পড়ুন-বিএসএফের গুলিতে নিহত গ্রামবাসী, পরিবারের পাশে তৃণমূল

বাংলায় যে কোনও নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ভোট কাটার জন্য বেশ কিছু দলকে ব্যবহার করে বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও তারা এ-কাজ করেছিল এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ ছিল। দেবাংশুর ট্যুইট শেয়ার করে বিজেপি ও জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে তুলোধোনা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে অভিষেক লেখেন, এটি এই দাবির একটি প্রমাণ যে ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির নেতারা নির্বাচন কমিশনের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। এর থেকে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে? এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপন করা জরুরি। এবং একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত।

Latest article