ফের হেফাজত আফতাবের, আজ হতে পারে পলিগ্রাফ

বুধবার আফতাবের পলিগ্রাফ টেস্ট হতে পারে বলে খবর। ইতিমধ্যেই আফতাব আদালতের সামনে তার নারকো টেস্টের অনুমতিতেও সায় দিয়েছে।

Must read

প্রতিবেদন : পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয় মঙ্গলবার। তাই এদিন শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুনের ঘটনায় তার প্রেমিক আফতাব পুনাওয়ালাকে দিল্লির সাকেত আদালতে তোলা হয়। এদিন আফতাব আদালতকে জানায়, আচমকাই রাগের মাথায় সে শ্রদ্ধাকে খুন করেছে। যদিও তার এই বয়ান কুৎসিত অপরাধ ঢাকার ফন্দি বলেই মত তদন্তকারীদের। কারণ জেরায় আফতাব আগে জানিয়েছিল সে ক্রাইম থ্রিলার দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে খুনের পুঙ্খানুপুঙ্খ কাজ করেছে। আদালতকে বিভ্রান্ত করতে এদিন তদন্তে সহযোগিতা করার কথাও জানায় আফতাব।

আরও পড়ুন-এনপিএ বেড়েছে ৩৬৫ শতাংশ!

খুনের পর সে শ্রদ্ধার দেহাংশগুলি কোথায় ফেলেছিল তা পুলিশকে জানিয়েছে। তবে পুলিশ আফতাবের দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা জানায়, আফতাব তদন্তে সেভাবে সহযোগিতা করছে না। সে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এদিন পুলিশ আফতাবকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানালে আদালত অভিযুক্তকে আরও চার দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। তবে এই খুনের তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার যে আর্জি জানানো হয়েছিল তা এদিন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। নিরাপত্তার কারণে পুলিশ এদিন আফতাবকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাকেত আদালতে হাজির করে। অন্যদিকে মঙ্গলবার আদালত দিল্লি পুলিশকে আফতাবের পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদনে সায় দিয়েছে। বুধবার আফতাবের পলিগ্রাফ টেস্ট হতে পারে বলে খবর। ইতিমধ্যেই আফতাব আদালতের সামনে তার নারকো টেস্টের অনুমতিতেও সায় দিয়েছে।

আরও পড়ুন-শৌচাগারে উদ্ধার মানব ভ্রূণ, তদন্তে পুলিশ

প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহ একটি ধারালো করাত ও ব্লেড দিয়ে টুকরো টুকরো করেছিল আফতাব। খুনের কাজে ব্যবহৃত করাত ও ব্লেড গুরুগ্রামের একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল সে। শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করার জন্য আফতাব ব্যবহার করেছিল মাংস কাটার একটি ধারালো চাপাতি। সেই চাপাতিটি সে মেহরৌলির জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেয়। দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, করাত ও ব্লেডের খোঁজে গুরুগ্রামে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এ পর্যন্ত দেহের যে সমস্ত অংশ উদ্ধার হয়েছে সেগুলি শ্রদ্ধারই কি না তা জানতে ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন-অসম-মেঘালয় সীমান্তে সন্ত্রাসের ফলে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, একাধিক জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা

আফতাবের ছতরপুরের ফ্ল্যাট থেকে প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা একটি ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। মেহরৌলির জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছে উরু ও হাতের হাড়। ওই সমস্ত হাড়গুলি শ্রদ্ধার কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পুলিশ ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ-র নমুনাও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। জঙ্গল থেকে পাওয়া হাড়ের সঙ্গে শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ মিলিয়ে দেখার পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

আরও পড়ুন-এবার তেলেঙ্গানার শ্রমমন্ত্রীর বাড়িতে আয়কর হানা, বিজেপিকেই নিশানা মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের

নারকো টেস্ট : নারকো টেস্ট এমন এক পরীক্ষা যেখানে বেশ কিছু ওষুধ ব্যবহার করে মানুষের অগ্রমস্তিষ্ককে খানিকক্ষণের জন্য অকেজো করে দেওয়া হয়। ওষুধের মাধ্যমে অবচেতন মনকে জাগ্রত করে প্রকৃত তথ্য জানতে চাওয়ার পদ্ধতি হল নারকো টেস্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের অবচেতন মনকে সাধারণত নিষ্পাপ ধরা হয়। সাধারণ জিজ্ঞাসাবাদে কেউ তথ্য গোপন করলেও অবচেতনে মস্তিষ্কের দেওয়া তথ্য সত্যি বলে মনে করা হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তা তদন্তে কাজে লাগে। তবে নারকো স্টেস্টের বয়ান যে সব সময় ঘটনাকে সম্পূর্ণ ভাবে তুলে ধরে তা নয়।

আরও পড়ুন-সংঘর্ষে নিহত ৭০

পলিগ্রাফ টেস্ট : পলিগ্রাফ পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় যে, পলিগ্রাফ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কোনও একজন মিথ্যা বলছে নাকি সত্য বলছে। যখন কেউ মিথ্যা বলে, তখন তার হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটে। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় সেই শারীরিক পরিবর্তনগুলি ধরা পড়ে। পলিগ্রাফ যন্ত্রে সাধারণত চারটি বিষয় লক্ষ্য করা হয়। এগুলি হল শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি, পালস রেট, রক্তচাপ এবং কতটা ঘাম বের হচ্ছে।

Latest article