প্রতিবেদন : দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়াকারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরতে পরতে রয়েছে রহস্যের মোড়ক। শ্রদ্ধার খুনের তদন্তে যত এগিয়েছে, ততই মিলেছে নতুন নতুন তথ্য। একজন তরুণ এত নির্মমভাবে কী করে তারই প্রেমিকাকে খুন করতে পারে, তা দেখে শিউরে উঠছে দেশবাসী। এই খুনের তদন্তে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায়নি পুলিশ। শ্রদ্ধার দেহ যে অস্ত্র দিয়ে আফতাব টুকরো করেছিল তার খোঁজ এখনও মেলেনি। পাওয়া যায়নি দেহের বেশিরভাগ অংশ।
আরও পড়ুন-বিশ্বের দূষিত রাজধানী শহরের শীর্ষস্থানে দিল্লি
শ্রদ্ধার মোবাইলের হদিশও এখনও মেলেনি। খুনের দিন শ্রদ্ধা ও আফতাব যে পোশাক পরে ছিলেন সেই পোশাকের সন্ধানও পায়নি পুলিশ। আফতাব পুলিশকে জানিয়েছে যে, ময়লা ফেলার ভ্যানে শ্রদ্ধার পোশাক ফেলে দিয়েছিল। পাশাপাশি পুলিশ অবাক হয়েছে আফতাবের ফ্ল্যাটের জলের বিল দেখে। মে মাসে আফতাব জল কিনতে খরচ করেছিল ৩০০ টাকা। বর্তমানে দিল্লির সাধারণ মানুষকে জলের জন্য টাকা খরচ করতে হয় না। কিন্তু আফতাবকে কেন টাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ জল কিনতে হল, তা নিয়ে পুলিশের মনে সন্দেহ জাগে। পুলিশের অনুমান, শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করার পর রক্তের দাগ মুছতেই প্রচুর জল কিনেছিল আফতাব। এদিন দিল্লির সাকেত আদালত আফতাবকে আরও পাঁচদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন-এত বিশ্রাম কেন কোচের : শাস্ত্রী
মেলেনি শ্রদ্ধার মাথার খোঁজ : দেহের বেশ কিছু অংশ উদ্ধার হলেও শ্রদ্ধার মুন্ডুর হদিশ এখনও মেলেনি। জেরায় আফতাব জানিয়েছে, সে শ্রদ্ধার মুন্ডু পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ যাতে শ্রদ্ধাকে শনাক্ত করতে না পারে তার জন্যই সে এটা করেছে। মে মাসে দিল্লির রামলীলা ময়দানে পুলিশ একটি কাটা মুন্ডু উদ্ধার করেছিল। যা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ঘনঘন সিমকার্ড বদল আফতাবের : এক বছর ধরে শ্রদ্ধার মোবাইল ফোনের সমস্ত ডেটা হাতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল আফতাব। অন্যদিকে গত এক বছরে সে নিজের ফোনের সিমকার্ড ঘনঘন বদলেছিল। শ্রদ্ধাকে খুনের পরে নিজের মোবাইলটি বিক্রি করে দেয় সে। পুলিশের অনুমান, নেটদুনিয়ায় হয়তো আরও অনেক অপরাধমূলক কাজ করেছে আফতাব। সে কারণেই নিজের মোবাইল নিয়ে তার এত গোপনীয়তা।
আরও পড়ুন-বাংলার নতুন রাজ্যপাল প্রাক্তন আইএএস সিভি আনন্দ বোস
শ্রদ্ধার দেহ কেটে বিয়ার খায় আফতাব : পুলিশের দাবি, জেরায় আফতাব জানিয়েছে, শ্রদ্ধার দেহ পুরোপুরি কেটে ভাগ করতে তার প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। কাটতে কাটতে এক সময় সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেসময় সে ফ্রিজ থেকে বিয়ারের বোতল বের করে তাতে চুমুক দেয়। এমনকী, ধূমপানও করে। শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করার কাজ শেষ হলে একটি অনলাইন খাবার সরবরাহকারী সংস্থায় সে খাবারের অর্ডারও দিয়েছিল। খেতে খেতে সিনেমা দেখেছিল নেটফ্লিক্সে।
আরও পড়ুন-রবিবার সাড়ে ৭টায় বিশ্বকাপ উদ্বোধন আল বায়েত স্টেডিয়ামে
আরও পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজত : শ্রদ্ধার খুনিকে আরও পাঁচদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠাল আদালত। বৃহস্পতিবার দিল্লির সাকেত আদালতের বিচারক ওই নির্দেশ দেন। তবে আফতাবকে আদালতে আনার খবরে আইনজীবী ও সমাজকর্মীরা আদালতের সামনে প্রবল বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা এই নৃশংস খুনির ফাঁসির সাজার দাবি জানান। ফলে আফতাবকে আদালতে ভার্চুয়ালি পেশ করা হয়।