প্রতিবেদন : ঝাড়খণ্ডে বিজেপির স্বপ্ন পূরণ হল না। পেছনের দরজা দিয়ে ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন ভেস্তে গেল। সোমবার ৪৭-২৯ ভোটে বিরোধীদের কুপোকাত করে দিয়ে বিধানসভায় আস্থা অর্জন করল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার চম্পাই সোরেনের নেতৃত্বাধীন সরকার। ছ’দিনের অচলাবস্থা অবশেষে কাটল ঝাড়খণ্ডে। ঘোড়া কেনাবেচার বিজেপির যাবতীয় পরিকল্পনা ব্যর্থ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার চম্পাই সোরেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর পক্ষে ভোট দিলেন ৪৭ জন বিধায়কই। বিপক্ষে ২৯ জন বিধায়ক।
আরও পড়ুন-প্রতিবন্ধীদের পাশে রাজ্য
৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরই সরকার গঠনের দাবিদার হন জেএমএম-এর চম্পাই সোরেন। সেদিনই ৪৭ জন বিধায়ককে নিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে রাজভবনে যান চম্পাই সোরেন। যদিও জেএমএম-কংগ্রেস-জেডিইউ-সিপিআইএম(এল) জোটের পক্ষ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছিল বিধায়ক ছিনিয়ে নেওয়ার নোংরা খেলায় নামবে বিজেপি। তবে বিজেপির পক্ষ থেকে কোনও বাধা সেই রাতে না এলেও ঝাড়খণ্ড রাজভবন সহযোগিতা করেনি। রাজভবনের তরফে পরের দিন বৃহস্পতিবারও শপথ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি চম্পাই সোরেনকে। অন্যদিকে, তাঁর পক্ষে বিধায়কের সংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি হতে থাকায় ঝুঁকি এড়াতে বিধায়কদের নিয়ে হায়দরাবাদ পাড়ি দিতে হয় চম্পাই সোরেনকে। কিন্তু সকালে কুয়াশার কারণ দেখিয়ে প্রাইভেট প্লেনও বাতিল করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কার্যত যেনতেনপ্রকারেণ বিধায়ক ভাঙানোর খেলায় নামে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু ওই পর্যন্তই। শেষে মুখ থুবড়ে পড়ে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন-পাঁচ বছরে ১২ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ৩ লক্ষ কোটির জালিয়াতি! অভিষেকের প্রশ্নে স্বীকার কেন্দ্রের
সোমবারের আস্থা ভোটে অংশ নিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও অনুমতি দেয় ইডি। এদিন ইডি হেফাজত থেকেই বিধানসভায় এসেছিলেন সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হেমন্ত সোরেন বলেন, আমার গ্রেফতারি গণতন্ত্রের কলুষিত অধ্যায়। এর পিছনে রাজ্যপালেরও হাত রয়েছে। আমাকে গ্রেফতার করার পটভূমি রচনা করা হয়েছিল ২০২২ সালেই। আমি হার মানব না, চোখের জলও ফেলব না। সময়ের জন্য তুলে রাখলাম আমার চোখের জল।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন চম্পাই সোরেন। তাঁর সমর্থনে বিধায়কদের তালিকা দিয়ে চিঠি রাজ্যপালের কাছে জমা দিলেও সোমবার আস্থা ভোটের নির্দেশ দেয় রাজভবন। সেইমতো সোমবার বিধানসভার ৮১ আসনে মধ্যে ৪৭ জনের সমর্থন তাঁর পক্ষে যায়। ম্যাজিক ফিগার ৪১ পেরোতে কোনও সমস্যাই হয়নি জেএমএম-কংগ্রেস জোটের।
আরও পড়ুন-গ্র্যামি এল ভারতে! দেশকে গর্বিত করলেন জাকির, শঙ্কর ও রাকেশ
মূলত ছ’দিন ধরে বিজেপির চক্রান্তে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর আসন ফাঁকা পড়ে থাকারই অভিযোগ জানিয়েছে জেএমএম। তাদের দাবি, মাত্র কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পর প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে সরকার গঠন করতে মোটেও অপেক্ষা করতে হয়নি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিধায়কদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথও নিয়ে ফেলেন। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করার পরেও বিরোধী দলের মনোবল ভাঙতে না পারায় সেখানে অপারেশন লোটাস ব্যর্থ হয়। সেই প্রতিহিংসাতেই ছ’দিন ধরে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে মুখ্যমন্ত্রীর পদ খালি রেখেছিল রাজভবন।