নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : ১৩ ডিসেম্বর সংসদে হামলার পর প্রকাশ্যে এসেছে বিরাট গোয়েন্দা ব্যর্থতা ও নিরাপত্তার গাফিলতি। একদিকে যেমন নতুন সংসদভবনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হয়নি, তেমনই সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্বে জয়েন্ট সেক্রেটারি পর্যায়ের পদটিও গত এক মাস ধরে ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সাধারণত সংসদের নিরাপত্তাজনিত বিষয়টির দায়িত্বে থাকেন ডেপুটি স্পিকার। ২০১৯ সাল থেকে খালি পড়ে রয়েছে সেই পদটিও। প্রবাদ আছে, চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। ঠিক তেমনি বুধবারের ঘটনার পর সচিবালয়ের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে সংসদ ভবনের নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে নতুন কিছু নিয়ম চালু করা হয়েছে সংসদভবনে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে।
আরও পড়ুন-সংখ্যার জোরে বলীয়ান নয় যারা আসুন আজ তাদের কথা ভাবি
সংসদ ভবনের আধ কিলোমিটার দূরে বসেছে নতুন ব্যারিকেড।
নির্দিষ্ট স্টিকার ছাড়া কোনও গাড়ির প্রবেশ নিষেধ।
এবার থেকে ফেসিয়াল রিকগনিশন ডিভাইস দ্বারা ফটো তোলা হবে।
প্রবেশের সময় খানাতল্লাশির জন্য বডি স্ক্যানার বসানো হবে।
সাংসদ, সংসদের কর্মী, সাংবাদিক এবং দর্শকদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ নির্দিষ্ট করা হবে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভিজিটর পাস তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সংসদের ভিতরে প্রবেশ করতে হলে টুপি-জুতো খুলে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সংসদ ভবনের উত্তরে ইউটিলিটি বিল্ডিংয়ের ইউএন ২০-তে একটি মিডিয়া ব্রিফিং সেন্টার করা হয়েছে। সেখানেই সাংসদরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। আগে সাংবাদিকরা মকরদ্বারের সামনে দাঁড়াতে পারতেন।
আরও পড়ুন-ভূমধ্যসাগর পেরোতে গিয়ে জাহাজডুবি, মৃত ৬০
লোকসভা সচিবালয় সাংসদদের নতুন ভবনে পৌঁছনোর জন্য ‘স্মার্ট কার্ড’ তৈরি রাখতে বলেছে।
লোকসভা এবং রাজ্যসভার লবি এবং সংসদ চত্বরের বেশ কিছু জায়গায় ফেস ডিটেকশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে।
মূল অধিবেশন কক্ষ ও দর্শক আসনের মধ্যে বসানো হবে কাচের দেওয়াল।
দর্শকদের বেপরোয়া আচরণ ঠেকাতে অধিবেশন চলাকালীন নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এবার থেকে ভিজিটরদের সম্পূর্ণ চেকিং করে ঢোকানো হবে, এমনকী সদনের ভিতরে তাদের পেন বা বই নিয়েও প্রবেশের অনুমতি নেই। এমনকী সঙ্গে খুচরো পয়সাও রাখা যাবে না। ভিজিটরদের আধার কার্ডের প্রতিলিপি জমা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে।
আরও পড়ুন-বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য আকর্ষণ বাড়াতে পদক্ষেপ রাজ্যের
সাংসদদের অনুমতি নিয়ে যদি কেউ সদনের কার্যক্রম দেখার জন্য প্রবেশ করে তাহলে তাদের এসকর্ট করে নিয়ে যাবে পিএসএস স্টাফরা।
লোকসভার স্পিকার বা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অতিথি হিসেবে আসা দর্শকদের মধ্যে থাকেন কূটনীতিক ও বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এদের বিশিষ্ট দর্শক হিসাবে বিবেচনা করে কিছু নিরাপত্তা শিথিল রাখা হয়েছে।
দর্শনার্থীরা ফিরে যাওয়ার সময়ে চতুর্থ গেট দিয়ে বেরোতে হবে।
এয়ারপোর্টের মতো বডি স্ক্যানিং মেশিন সংসদে বসানো হবে।
এবার থেকে পাস বিলির আগে বাধ্যতামূলকভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাকগ্রাউন্ড চেকিং হবে।