পোস্ত চাষের অনুমতি চেয়ে ফের চিঠি, রেশনে চালের দাম মিটিয়ে দিক কেন্দ্র, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, বহু পণ্যে স্বাবলম্বী পশ্চিমবঙ্গ

বাংলার তিন কোটি মানুষকে বিনামূল্যে চাল দিতে রাজ্য সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। রাজ্যকে এই চালের অর্থ দিক কেন্দ্র।

Must read

প্রতিবেদন : বাংলার তিন কোটি মানুষকে বিনামূল্যে চাল দিতে রাজ্য সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। রাজ্যকে এই চালের অর্থ দিক কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় তাঁর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে এই দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বাংলা কেন পোস্ত চাষের অনুমতি পাবে না সেই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, অন্য তিনটি রাজ্য যদি পোস্ত চাষ করতে পারে তাহলে বাংলা কেন পারবে না?

আরও পড়ুন-কোচবিহারকে সমৃদ্ধ শহর বানাতে একগুচ্ছ প্রকল্প

এ-রাজ্যের মানুষ পোস্ত খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু অসম্ভব দামের জন্য সকলে কিনতে পারেন না। বাংলায় পোস্ত চাষ হলে রাজ্যের মানুষ তা কম দামে কিনতে পারবেন। স্পষ্ট কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পোস্ত চাষের অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। ২০১৯ সালের ২ মে একটি চিঠি দিয়েছিল। ২০২৩ সালের ৩ মার্চ আবারও কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। চাল-পোস্ত ছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মাছ-পেঁয়াজ-আলু-ইলিশ মাছ-ড্রাগন ফল-সহ একাধিক সবজি ও ফল উৎপাদনে যে বাংলা আজ স্বনির্ভর সে-কথাও তুলে ধরেন। এদিন রাজভবন থেকে বেরিয়ে বিধানসভা অধিবেশনের একেবারে শেষ বেলায় এসে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী। সে-সময় খাদ্য দফতরের বাজেট নিয়ে জবাবি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ। তার রেশ ধরেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। গোবিন্দভোগ চালের উপর থেকে কর কমানোর দাবিও করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন-হাসপাতাল থেকে সুস্থ সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন বিপন্মুক্ত মা, রাজ্যে প্রথম বিরল অস্ত্রোপচারে সাফল্য

রেশন কার্ড : রাজ্যে ১ কোটি ৮৬ লক্ষ এমন রেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে যাঁরা নাম থাকলেও রেশন তুলতেন না। অন্য কেউ নিয়ে নিত। এতে রাজ্যের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল।
কৃষকদের থেকে চাল ক্রয় : আগে এফসিআই থেকে চাল আসত। কিন্তু তা এতটাই খারাপ মানের যে রাজ্য সরকার তা নেওয়া বন্ধ করে দেয়। তার বদলে বাংলার কৃষকদের থেকে চাল নিতে শুরু করে। এতে কৃষকরা উপকৃত হন। এ-বছর প্রায় ১০০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল কিনেছে রাজ্য।
আলু সংরক্ষণ : আগে অনেক আলুচাষি দাম পেতেন না। রাজ্য সরকার আলু কিনে তা সংরক্ষণ করে। আইসিডিএস ও মিড-ডে মিলে তা কাজে লাগানো যায়। এতে চাষিরা উপকৃত হন।

আরও পড়ুন-দিল্লিকে হারিয়ে শীর্ষে হরমনরা

কৃষক ক্ষতিপূরণ : এ-রাজ্যে কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু হয়েছে। তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। বিমার টাকাও দেওয়া হয়। কোন‌ও কৃষক মারা গেলে তার পরিবার ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পায়।
স্বর্ণধান : আয়লা-আম্ফানের মতো সামুদ্রিক ঝড়ে জমিতে নোনা জল ঢুকে চাষের ক্ষতি করে। কৃষি বিজ্ঞানীদের সহযোগিতায় সেখানেই নষ্ট হয়ে যাওয়া ধান থেকেই নতুন ধান তৈরি হয়। একে স্বর্ণধান বলে। এতে উপকূলের মানুষ উপকৃত হন।
পোস্ত চাষ : ১১০০ টাকায় গ্যাস কিনব আবার ২০০০ টাকায় পোস্ত কিনব কেন? বাংলাকে পোস্ত চাষের অনুমতি দেওয়ার দাবি কেন্দ্রের কাছে। অনেক সময় কোনও সিদ্ধান্ত একসঙ্গে মিলে নিতে হয়। পোস্ত তো সকলেই খান। বিরোধীদের প্রতি আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর। আর সব পোস্ত থেকে ড্রাগ হয় না। বক্তব্য তাঁর।

আরও পড়ুন-পুরীধামে আগুন

পেঁয়াজ : আগে নাসিক থেকে পেঁয়াজ আনতে হত। এখন রাজ্যেই প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়। বাঁকুড়া-মুর্শিদাবাদ-বীরভূমে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হশেছিল। এখন ভাল হচ্ছে রাজ্য।
হাঁস-মুরগির পোলট্রি : রাজ্যে হাঁস-মুরগির পোলট্রির জন্য সরকার সাহায্য করছে। ভর্তুকি দিচ্ছে। ডিমের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। আগে হায়দরাবাদ থেকে আনতে হত। এখন ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ নিজেরাই উৎপাদন করছি।

আরও পড়ুন-মিডিয়ার প্রচারে কান নয়, বাড়ি বাড়ি যান, শ্রমিকভাইদের উদ্দেশে বললেন ঋতব্রত

ইলিশ মাছ : বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ কিনতে হত। এখন ডায়মন্ড হারবারে ইলিশ চাষের গবেষণা ও চাষ হচ্ছে।
এ-ছাড়াও অন্যান্য নানা ধরনের মাছ-সবজি উৎপাদনে এগিয়ে রয়েছে। আরও এগবে। আজ বাংলা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন তিনি উপস্থিত সকলকে দোল-হোলির শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Latest article