রাজকোট, ২৭ সেপ্টেম্বর : রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা দলে ফিরলেন। কিন্তু ভারত হেরে গেল! বুধবার রাজকোটে আয়োজিত তৃতীয় ম্যাচ ৬৬ রানে জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াল অস্ট্রেলিয়া (India-Australia)। প্রথম দুই ম্যাচ জেতার সুবাদে ভারতীয় দল অবশ্য আগেই সিরিজ পকেটে পুরে ফেলেছিল।
জেতার জন্য ৩৫৩ রান তাড়া করতে নেমে, ২৮৬ রানেই গুটিয়ে গেল ভারতের ইনিংস। রোহিত ও বিরাটের হাফ সেঞ্চুরি কাজে এল না। কারণ বাকিরা ব্যর্থ। চলতি সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার (India-Australia) হয়ে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ব্যাট হাতে মাত্র পাঁচ রান করে আউট হলেও, বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে নজর কাড়লেন অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপের আগে এটাই ছিল ভারতীয়দের শেষ ম্যাচ। ৮ অক্টোবর এই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই কাপ অভিযান শুরু করবেন রোহিতরা। তার আগে এই জয় প্যাট কামিন্সদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
খেলা শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, জ্বরের জন্য এই ম্যাচ খেলতে পারছেন না ঈশান কিশান। বিশ্রাম দেওয়া হয় রবিচন্দ্রন অশ্বিনকেও। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে এসেছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। যদিও এই ফাটকা কাজে লাগেনি। ৩০ বলে মাত্র ১৮ করে আউট হন ওয়াশিংটন।
তবে রোহিত শুরু থেকে খুনে মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। তিনি এবং বিরাট কোহলি যখন একসঙ্গে ব্যাট করছিলেন, তখন রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ব্যক্তিগত ৮১ রানে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রোহিত। হিটম্যানের ৫৭ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও ছ’টি ছয়। অন্যদিকে, বিরাটও ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যাক্সওয়েলের দ্বিতীয় শিকার হন। তিনি ৬১ বলে ৫৬ রান করেছেন।
এরপর ভারতকে টানছিলেন শ্রেয়স আইয়ার ও কে এল রাহুল। কিন্তু ২৬ রান করে রাহুল আউট হতেই ফের চাপে পড়ে যায় ভারত। কিছুক্ষণের মধ্যেই আউট হন সূর্যকুমার যাদবও (৮)। দু’ওভার পর শ্রেয়সও ৪৮ করে ম্যাক্সওয়েলের চার নম্বর শিকার হন। ম্যাচ তখনই অস্ট্রেলিয়ার দিকে ঢলে পড়েছিল। রবীন্দ্র জাদেজা শেষ দিকে ৩৬ বলে ৩৫ রান করলেন ঠিকই। কিন্তু তাতে শুধুই হারের ব্যবধান কমেছে।
এদিন অস্ট্রেলিয়ার বড় রানের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। শুরু থেকেই চালিয়ে খেলে ঝড়ের গতিতে স্কোরবোর্ড সচল রেখেছিলেন দু’জনে। ওয়ার্নারকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন প্রসিধ কৃষ্ণ। ততক্ষণে অবশ্য প্রথম উইকেটে ৭৮ রান উঠে গিয়েছে। মাত্র ৩৪ বলে ৫৬ করেন ওয়ার্নার।
তবে ওয়ার্নার প্যাভিলিয়নে ফেরার পরেও অস্ট্রেলিয়া দ্রুত গতিতে রান তুলছিল। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের উপর রীতিমতো ছড়ি ঘোরাচ্ছিলেন স্টিভ স্মিথ। অন্যদিকে, মার্শও চেনা মেজাজে ব্যাট করছিলেন। দু’জনে মিলে মাত্র ২৫ ওভারেই দলীয় রানকে দুশোয় পৌঁছে দেন। সেই সময় মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া চারশোর বেশি রান তুলে ফেলবে।
কিন্তু ব্যক্তিগত ৯৬ রানে কুলদীপ যাদবের বলে আউট হন মার্শ। তাঁর ৮৪ বলের ইনিংস ১৩টি চার ও ৩টি ছয় দিয়ে সাজানো ছিল। স্মিথও ব্যক্তিগত ৭২ রানে (৬১ বল) প্যাভিলিয়নে ফেরেন মহম্মদ সিরাজের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে। এর পরেই অস্ট্রেলীয়দের রানের গতি কমে যায়। এর পরেও যে স্কোরবোর্ডে সাড়ে তিনশোর বেশি রান উঠেছে, তার জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্য মার্নাস লাবুশেনের। মাত্র ৫৮ বলে ৭২ রান করে বিশ্বকাপ দলে ঢোকার দাবিটা আরও জোরালো করলেন লাবুশেন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে জসপ্রীত বুমরা তিন উইকেট নেন। দু’টি উইকেট পান কুলদীপ।
আরও পড়ুন-কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা মামলা : কর্মবিরতির পথে লন্ডন পুলিশের একাংশ