৩ আগস্ট থেকে ৩ আগস্ট, পাল্টে গেল বাবুল সুপ্রিয়র রাজনৈতিক জীবনের ভবিষ্যৎ

নতুন মন্ত্রিসভায় বাবুল সুপ্রিয়কে পার্থর হাতে থাকাই তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Must read

সোমনাথ বিশ্বাস: ৩ আগস্ট ২০২১ থেকে ৩ আগস্ট ২০২২র মধ্যেই বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। এবার শুধু মন দিয়ে কাজ করতে চান তিনি। পশ্চিমবঙ্গের নতুন পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী হওয়ার পর আজ, বৃহস্পতিবার দফতরের দায়িত্ব নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়।

আরও পড়ুন-মাঙ্কিপক্স রুখতে সতর্ক নবান্ন, জারি নির্দেশিকা

গতবছর ৩ আগস্ট তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোস্টে বিজেপির সঙ্গে সমস্ত রকমভাবে সঙ্গ ত্যাগের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এক বছর পর একইদিনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দু’দুটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী হিসেবে রাজভবনে শপথ নিয়েছেন। তিনি জ্যোতিষে বিশ্বাস করেন না, তবে এমনটাই হয়তো ছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ভবিতব্য। নিজের সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুসারে একশো শতাংশ দেওয়ার পরও তাঁর প্রতি অন্যায় হয়েছিল। কলকাতা মেট্রোর অগ্রগতিতে বড় অবদান ছিল বাবুলের। তারপরও মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই একটা সময় রাজনীতি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে এনেছেন। ভোটে জিতিয়েছেন। এবার মন্ত্রী করলেন। তাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ, ঋনী।

আরও পড়ুন-কিশোর কুমারের ৯৩ তম জন্মদিন, শ্রদ্ধা মুখ্যমন্ত্রীর

মন্ত্রিত্ব নিয়ে একটু বাড়তি চাপ অনুভূতি হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে স্ট্রেট ব্যাটে খেলে বাবুল জানালেন, মন্ত্রিত্ব তাঁর কাছে নতুন কিছু নয়। মাঝে কয়েকটা মাস শুধু পরিবেশ পরিস্থিতি বদলেছে। রাজ্যের নতুন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী জানালেন, টেনশন নামক বস্তুটির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব নেই। ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রি ভবিষ্যতের জন্যে বড় জায়গা। তবে চাপ হল, যিনি তাঁর উপর ভরসা রেখেছেন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভরসার মর্যাদা রাখা। দিদি সবসময় ভালো কাজ করার মোটিভেশন বাবুলের কাছে।

আরও পড়ুন-তোষামোদই পছন্দ মোদি সরকারের, তোপ রাজনের

এরপরই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাবুলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসটি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে তাঁর প্রথম ইনিংসের তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল হবে। বাবুলের কথায়, “দিদির হাত দিয়ে পোয়েটিক জাস্টিস এসেছে। কারণ আমি রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছিলাম, এবং তিনিই আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন, আমাকে সাহস যোগান এবং আমাকে বালিগঞ্জ আসনের প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করেন এবং তারপরে পুরো দল আমাকে সমর্থন করেছিল।”

আরও পড়ুন-তোষামোদই পছন্দ মোদি সরকারের, তোপ রাজনের

এদিন সল্টলেক সেক্টর ফাইভে তথ্য-প্রযুক্তি দফতরে নিজের ঘরে বসে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “আমার সত্যিই এই কাকতালীয় ঘটনা সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। হ্যাঁ, জীবন অবশ্যই বৃত্ত সম্পূর্ণ করেছে। গত বছর ৩ আগস্ট আমি বিজেপি ছেড়েছিলাম, সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেছিলাম। এবং আজ আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী হিসাবে দফতরের দায়িত্ব নিলাম। আর শপথ নিয়েছি সেই ৩ আগস্ট।”

আরও পড়ুন-‘সেরা’ জালিয়াত মেহুল

পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন সরকার ও দলের কাছে অতীত। নতুন মন্ত্রিসভায় বাবুল সুপ্রিয়কে পার্থর হাতে থাকাই তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে পর্যটন দফতরের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব নিয়ে বাবুল বলেন, “আমার আগের ৮ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাবো। দিদির গাইডেন্সকে কাজে লাগাবো। ৩ আগস্ট থেকে ৩ আগস্ট বৃত্ত সম্পন্ন হলো।


যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজে ঢুকে পড়ব। বিরোধীরা অনেক কথাই বলবে এখন। কোনও একজনের জন্য দিদির গায়ে কাদা ছেটাবে এটা ঠিক নয়। যে যা বলছেন বলুন। দিদিকে ধন্যবাদ। দিদির আস্থার মর্যাদা দেওয়ার আমার কাছে মুখ্য বিষয়।”

Latest article