ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর : হাসান মাহমুদ যখন আউট হলেন, ৩৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ ১৩৬/৯। ম্যাচটা ভারত (India vs Bangladesh) জিতছে, শুধু প্রশ্ন ছিল কখন।
পরের ৩৯ বলে নাটকীয়ভাবে মিরপুরের ম্যাচ ঘুরে গেল। চার ওভার বাকি রেখে প্রথম একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দিল ১ উইকেটে। নায়ক বলে যদি কাউকে বাছতে হয় এই ম্যাচে, তাহলে তিনি মেহেদি হাসান মিরাজ। তামিম ইকবাল চোটের জন্য ছিটকে যাওয়ায় যাঁকে দলে নেওয়া হয়েছিল। ৩৯ বলে ৩৮ নট আউট থেকে বাংলাদেশকে এই জয় এনে দিলেন তিনি। তবে শেষ উইকেটের এই রেকর্ড পার্টনারশিপে মেহেদির সঙ্গে ১০ রানে নট আউট থেকে গিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমানও। কাটিয়েছেন ১১ বল।
মেহেদির ইনিংসের শুরুতে তাঁর ক্যাচ ফেলেছেন কে এল রাহুল। যিনি এই ম্যাচে উইকেটের পিছনে ছিলেন। এরপর মেহেদির আরও একটা উঁচু ক্যাচ থার্ডম্যানে উঠলে কাছে যাওয়ার চেষ্টাই করেননি ওয়াশিংটন সুন্দর। এই দুটো ক্যাচের একটাও যদি ধরা যেত, তাহলে শেষ উইকেটে ৫১ রান তুলে ম্যাচ বের করে নিয়ে যেতে পারত না বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ (India vs Bangladesh) ইনিংসে শুরুতেই ঝটকা দিয়েছেন দীপক চাহার। ইনিংসের প্রথম বলে তিনি তুলে নেন নাজমুল হুসেন শান্তকে (০)। এরপর দলের ২৬ রানে আউট হয়ে যান তিন নম্বরে নামা আনামুল হক (১৪)। কিন্তু ১৮৬ রান পুঁজি নিয়ে ভারতীয় বোলাররা যখন বাংলাদেশকে চেপে ধরেছেন, তখন ৪৮ রানের পার্টনারশিপ খেলে দলকে শক্ত জায়গায় ফেরত আনেন অধিনায়ক লিটন দাস (৪১) ও শাকিব আল হাসান (২৯)।
তবে এই জুটি ফিরে যাওয়ার পর মাঝখানে আর বাংলাদেশ ব্যাটিং জমেনি। মাঝে মাহমদুল্লাহ (১৪) ও মুশফিকুর রহিম (১৮) মিলে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ব্যাপারটা বেশিদূর যায়নি।
আরও পড়ুন-সেনেগালকে উড়িয়ে শেষ আটে ইংল্যান্ড
শার্দূল ঠাকুরকে রোহিত ইনিংসের মাঝখানে নিয়ে এসেছিলেন। তাতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হল। মিরপুরের উইকেট বোলারদের সাহায্য করেছে। শার্দূল সেই সুবিধাটা নিয়ে গেলেন। প্রথম স্পেলে ৭ ওভারে তিনি দেন ১৩ রান। পাশে সাহায্য করেছেন মহম্মদ সিরাজ। এই ম্যাচে অভিষেক হয়েছে কুলদীপ সেনের। তিনিও গতিতে চেপে ধরেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাটিংকে। কতটা চাপ সেটা বোঝার জন্য একটা তথ্যই যথেষ্ট। একটা সময় ১০২ বলে প্রথম বাউন্ডারি পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষপর্যন্ত মেহেদির দাপটে শেষ হাসি হাসলেন তাঁরাই।
আমিরশাহি লিগে খেলে সবে ঢাকা ফিরেছেন শাকিব। আর ফিরেই ভয়ঙ্কর বোলিং করলেন। মিরপুরের উইকেট তাঁকে সাহায্য করেছে। কিন্তু তাতেও ভারতীয় ব্যাটিংয়ের এভাবে ভেঙে পড়ার কোনও ব্যাখ্যা হয় না। ভারতের ৬টি উইকেট পড়েছে ৩৬ রানে। ২০১১-র পর এতবড় ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটেনি টিম ইন্ডিয়ায়।
ভারতীয় ব্যাটিং সর্বত্র সমাদৃত হয় রোহিত, বিরাট ও রাহুলের জন্য। কিন্তু এদিন দেখা গেল রাহুল ছাড়া কেউ দাঁড়াতে পারেনি। রাহুল ৭৩ রান না করে গেলে আরও খারাপ অবস্থা হত সফরকারীদের। রোহিত এদিন ভাল শুরু করেও ফিরে গিয়েছেন ২৭ রানে। বিরাট করেছেন ৯ রান। শিখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে এসেছে ৯ রান। শ্রেয়স আইয়ারের সংগ্রহ ২৪ রান।
বাংলাদেশ বোলিংয়ে শাকিব ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন ৫টি উইকেট। এবাদত হোসেন ৮.২ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ঋষভ পন্থকে এই সিরিজে না খেলিয়ে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বোর্ডের মেডিক্যাল টিম অনুমতি দিলে তিনি টেস্ট সিরিজে দলে ফিরবেন। প্রসঙ্গত, প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১৪ ডিসেম্বর।