ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি গল্প
অভিরূপ ঘোষ
গল্পটা কী নিয়ে?
মূলত একটি সাসপেন্স থ্রিলার। ইনসিওরেন্স স্ক্যামের উপর বেসড একটি স্টোরি। সত্য ঘটনা অবলম্বনে। পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্য আমার লেখা। এই ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত, কিঞ্জল নন্দ, সোনামণি সাহা-সহ আরও অনেকেই।
এঁদের চরিত্র সম্পর্কে কিছু বলুন…
কিঞ্জল এবং সোনামণি অভিনয় করেছেন দুই ইয়ং ইনসিওরেন্স কোম্পানির এজেন্টের ভূমিকায়। এঁরা একটা ইনসিওরেন্স পলিসি রিলেটেড ইনভেস্টিগেশনে জড়িয়ে যান। রজতাভ দত্ত অভিনয় করেছেন একটি মিস্টিরিয়াস চরিত্রে। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলব না।
কীভাবে শিল্পীদের নির্বাচন করা হয়েছে?
কিঞ্জল-সোনামণি-সহ অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নির্বাচন করা হয়েছে স্ক্রিন টেস্টের মাধ্যমে। দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন দুজনেই। রজতাভ দত্ত প্রথম থেকেই আমাদের পছন্দের তালিকায় ছিলেন। অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রীরাও খুব ভাল কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন-অটিজম ভয় নয়, সচেতন হোন
টার্গেট অডিয়েন্স?
‘বেঙ্গল বীমা কোম্পানি’ একটি ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি গল্প। তাই আট থেকে আশি সবাই দেখতে পারবেন। আশা করি সবার ভাল লাগবে। কমেডি, থ্রিল, অ্যাকশন সমস্ত কিছুই আছে।
কোথায় শুটিং হয়েছে?
শুটিং হয়েছে মূলত কলকাতায়। পাশাপাশি বানতলা, উলুবেড়িয়া-সহ কয়েকটি জায়গায়।
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কীরকম?
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা খুবই ভাল। অন্য ধরনের গল্প। খুব ডিফিকাল্ট ছিল কাজটা করা। বেশিরভাগ শুটিং হয়েছে গরমের মধ্যে। ছিল বেশকিছু অ্যাকশন দৃশ্য। সবাই মিলে হইহই করে কাজটা করেছি। শুট করতে খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। ইট ওয়াজ গুড ফান।
কবে দেখা যাবে?
প্রযোজক বিনোদ ভাল্লা। দেখা যাবে এসভিএফ-এর ডিজিটাল প্লাটফর্ম হইচই-এ। মোট আটটি পর্বের ওয়েব সিরিজ। দর্শকদের সামনে কবে আসবে, সেই দিনটা এখনও ঠিক হয়নি। আশাকরি খুব শীঘ্রই জানাতে পারব।
আরও পড়ুন-নৃতত্ত্বের নারী পথিকৃৎ
চরিত্রটায় একটা মজা আছে
রজতাভ দত্ত
পরিচালকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কীরকম?
‘বেঙ্গল বীমা কোম্পানি’র আগেও আমি অভিরূপের সঙ্গে কাজ করেছি। এটা আমাদের দুজনের একসঙ্গে চতুর্থ কাজ। আগে তিনটে কাজ একসঙ্গে করার ফলে দুজন দুজনের পালস জেনে গেছি। অভিরূপ বরাবর আমাকে আলাদা আলাদা রকমের চরিত্র দিয়েছে। সেটা আমার কাছে খুবই লোভনীয়। খুব ভাল ন্যারেটর নয় অভিরূপ। যখন গল্প ব্রিফ করে, তখন মনে হয় ছবিটা কিছু দাঁড়াবে না। কিন্তু যখন ছবিটা বানায়, তখন অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়। একটা কমফোর্ট জোন তৈরি করে। দারুণ একটা জিনিস দর্শকদের সামনে তুলে ধরে। অভিরূপ উচ্চশিক্ষিত। নিজে এডিটিং জানে, অসাধারণ স্ক্রিপ্ট লেখে। সবকিছু মিলিয়ে একটা অদ্ভুত জিনিস দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। আগে খুব কম বাজেটে কাজ করত। এখন বড় সাপোর্ট পাচ্ছে। কমফর্টেবল বাজেট। ফলে কাজ করতে সুবিধা হচ্ছে। আশা করা যায় দর্শকরা জমজমাট বিনোদন-ভরপুর একটা ওয়েব সিরিজ উপহার পেতে চলেছেন।
আরও পড়ুন-হারানো দিনের স্মরণীয় নায়িকা, বিবি পটেশ্বরীতেই বাজিমাত সুমিত্রা দেবীর
আপনার চরিত্রটি সম্পর্কে কিছু বলুন…
আমার চরিত্রের নাম বিদ্যুৎ। চরিত্রটায় একটা অদ্ভুত মজা আছে। পাশাপাশি আছে রহস্য। লার্জার দ্যান লাইফ। দুটো বয়স দেখানো হয়েছে। ছোটবেলা এবং বড়বেলা। বড়বেলায় অবশ্য কোনও নামে ডাকা হয় না। শুরুতেই যা নাম ধরে ডাকা হয়।
কিঞ্জল-সোনামণির সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
কিঞ্জল এই ওয়েব সিরিজের নায়ক। খুব ভাল অভিনেতা। ভাল মানুষ। ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি পেয়েছে। ওর সঙ্গে আমার সেই অর্থে দ্বিতীয় কাজ। তবে ওয়ান টু ওয়ান, ভালভাবে কাজ বলতে এটাই প্রথম। একসঙ্গে বেশ কয়েকটি দৃশ্য ছিল। সোনামণি ভাল অভিনয় করেছে। যদিও এই সিরিজে আমরা একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করিনি। ভাল লেগেছে দেবরাজের কাজ। আর একজনের কথা বলতেই হয়। শুভ। চমৎকার ডিওপি। খুব ভাল লেগেছে ওর সঙ্গে কাজ করে। ঠান্ডা মাথা। আশা করি ভবিষ্যতে আরও বড় জায়গা করে নেবে। সবমিলিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভাল। আশা করি সিরিজটা দর্শকদের ভাল লাগবে।
আরও পড়ুন-নিঃশব্দ বিপ্লব: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ করতে চলেছেন কাজের খতিয়ান
অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা
সোনামণি সাহা
কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
খুব ভাল অভিজ্ঞতা। এটাই আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ।
ওয়েব সিরিজে আত্মপ্রকাশের জন্য ‘বেঙ্গল বীমা
কোম্পানি’কে বাছলেন কেন?
গল্পটা একটু অন্যরকম মনে হয়েছে। আর পাঁচটা ওয়েব সিরিজের থেকে আলাদা। তাই করেছি। এটা ইনসিওরেন্স স্ক্যামের উপর বেসড একটি স্টোরি। তৈরি হয়েছে সত্যি ঘটনা অবলম্বনে। এমনটা যে ঘটে সেটা বহু মানুষ জানেন না। বিষয়টা তুলে ধরা হয়েছে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য। সতর্ক করার জন্য। জানানোর জন্য।
চরিত্রটা কতটা চ্যালেঞ্জিং?
যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। ‘দেবী চৌধুরানী’ এবং ‘মোহর’ দুটি সিরিয়ালেই অভিনয় করেছি প্রতিবাদী নারীর চরিত্রে। একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা, অন্যটি আধুনিক সময়ের। ‘বেঙ্গল বীমা কোম্পানি’ ওয়েব সিরিজেও আমি অভিনয় করেছি একজন প্রতিবাদী নারীর চরিত্রে। আমার চরিত্রের নাম মোহনা।
আরও পড়ুন-নিঃশব্দ বিপ্লব: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ করতে চলেছেন কাজের খতিয়ান
অফারটা কীভাবে এল?
হঠাৎ করেই। আসলে অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন রকমের অফার আসছিল। তবে সিরিয়ালে কাজ করছিলাম বলে অবসর পাচ্ছিলাম না। করতে পারছিলাম না বাইরের কোনো কাজ। ‘মোহর’ শেষ হওয়া মাত্রই এই কাজটা করার সিদ্ধান্ত নিই। শুরু হয় শুটিং। মে মাসের শেষ থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এখন চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। ইচ্ছে আছে আরও সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজে অভিনয় করার। কথাবার্তা চলছে। এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। টানা পাঁচ বছর সিরিয়াল করার পর ওয়েব সিরিজ। খুব ভাল লেগেছে। একদম অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা। শুটিংয়ের প্যাটার্নটাও অন্যরকম।
কেমন লাগল পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে?
অভিরূপ ঘোষ অসাধারণ পরিচালক। গল্পটা ওঁর নিজের লেখা। চমৎকার লেখনী। আমার খুব ভাল লেগেছে এই পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে। সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেও আনন্দ পেয়েছি। সিনিয়রদের কাছে অনেক কিছু শিখেছি।
আরও পড়ুন-মানবিক মন্ত্রী, কলকাতায় চিকিৎসা ক্যান্সার-রোগীর
সিরিয়াল এবং ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের কোনও তফাত আছে?
সিরিয়াল এবং ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের একটু তফাৎ আছে। কাজ করতে করতে বুঝেছি। সিরিয়ালে একটা চরিত্রকে অনেক দিন মনের মধ্যে ধারণ করে রাখতে হয়। ওয়েব সিরিজে সেটা করতে হয় না। অভিনয় করতে আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। এখানে অনেক আগেই স্ক্রিপ্ট দেওয়া হয়েছিল। সময় পেয়েছি নিজেকে তৈরি করার। সিরিয়ালে সাধারণত স্ক্রিপ্ট দেওয়া হয় শুটিংয়ের দিন। ‘বেঙ্গল বীমা কোম্পানি’র টিমটাও দারুণ। খুব এনজয় করেছি সবাই মিলে। আশা করি দর্শকদের ভাল লাগবে।
খুব যত্ন নিয়ে সবাই কাজ করেছেন
কিঞ্জল নন্দ
আপনার চরিত্রটা সম্পর্কে জানতে চাই…
‘বেঙ্গল বীমা কোম্পানি’ ওয়েব সিরিজে আমার চরিত্রের নাম সমুদ্র। চরিত্রটির সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলার নেই। এমন চরিত্র চারপাশে প্রচুর দেখতে পাই। অনেক মানুষ থাকে, যারা জীবন সম্পর্কে সচেতন নয়। কোনও টার্গেট নেই। কিন্তু জীবন উপভোগ করতে ভালবাসে। পূরণ করে নিজের ছোট ছোট চাহিদা। কোনও কাজ থেকে পিছিয়ে আসে না। খুব ক্যাজুয়েল থাকে। বিভিন্ন জায়গায় চাকরি নেয় এবং ছেড়েও দেয়। কারণগুলো অদ্ভুত। বাড়ির দায়িত্ব পালন করেন দাদা। এইসব নিয়েই সমুদ্র। তবে যখন একটা রহস্যের গন্ধ পায়, বুঝতে পারে অন্যায় হচ্ছে, তখন প্রতিবাদ করে। দেখা যায় তার মানবিক দিক।
আরও পড়ুন-রাজ্যে অগ্নিগর্ভ অগ্নিপথ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতে বিক্ষোভ-অবরোধ
কাজের অভিজ্ঞতা কীরকম?
কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভাল। সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করেছি।
পরিচালকের কথা বলুন…
পরিচালক অভিরূপ ঘোষের আমি খুব ভক্ত। ওঁর ‘রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ’, ‘ব্যাধ’ আমার খুব ভাল লেগেছিল। উনি যখন আমাকে এই কাজটার কথা বলেন, খুব এক্সাইটেড ফিল করেছিলাম। কাজের সময় খুব হেল্প করেছেন। আলাপ আলোচনা করে এগিয়েছি। ঢালাও লাইসেন্স দিয়েছেন। আটকে রাখেননি। এটা বড় পাওনা। অভিরূপদার সঙ্গে আরও কাজ করতে চাই। ডিওপি শুভ খুব ভাল। আমাদের সুবিধা-অসুবিধার দিকটা দেখেছেন প্রযোজক বিনোদ ভাল্লা। রনিদা, রজতাভ দত্ত খুব বড় মাপের অভিনেতা। দেবরাজদাও দারুণ অভিনেতা। দুজনের সঙ্গে অভিনয় করে খুব ভাল লেগেছে। খুব যত্ন নিয়ে, যথেষ্ট পরিশ্রম করে সবাই কাজ করেছেন। এক-একদিন অনেক রাত পর্যন্ত শুটিং হয়েছে। কাজটা কেমন হয়েছে, সেটা দর্শকেরা বলবেন।