দেবী সুরেশ্বরী ভগবতী গঙ্গে।
ত্রিভুবন তারিণী তরল তরঙ্গে।
শঙ্করাচার্যের লেখা এই গঙ্গাস্তুতির সঙ্গে প্রতিটি ভারতীয় পরিচিত। গঙ্গা এক এমন নদী যাঁর বারিকে আমরা ‘ব্রহ্মবারি’ বলে চিহ্নিত করি। এই ব্রহ্মবারি কথাটির অর্থ অনেক গভীরে নিহিত কারণ, আমাদের ধর্মজীবনের সঙ্গে এই গঙ্গাবারি মিলেমিশে রয়েছে। কোনও অপবিত্র বস্তুর স্পর্শজাত অপবিত্রতা দূর করতে আমরা মাথায় ছিটিয়ে নিই দু-ফোঁটা গঙ্গার জল। আসনের দেবতা বা দেবীকে ফুল উৎসর্গ করি সেই গঙ্গাবারি স্পর্শ করিয়ে। গঙ্গাজলে দেবতার ভোগ রান্না হয়। অর্থাৎ পবিত্র এই জলবিন্দু নিমেষে অপবিত্র স্থানকে পবিত্র করে তুলতে সক্ষম। দেবীর জলময় দেহ মানব কুলকে পরিত্রাণ করছেন। আমাদের জীবন গঙ্গাজল ছাড়া অচল। সুরধুনীর তীরবর্তী অঞ্চলও নাকি পবিত্র। এ-যুগের অবতার শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনস্থল ছিল গঙ্গাতীরে রানি রাসমণি-নির্মিত কালীমন্দিরে। তিনি তাঁর যুবক ভক্তদের বলতেন, গঙ্গাজলে রন্ধন করা মা কালীর ভোগ অতি-পবিত্র। কেবল তাই-ই নয়, তিনি গঙ্গাজলে শৌচকর্ম করতে নিষেধ করতেন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রী আজ এগরায় মৃতদের পরিবারের পাশে
শ্রীরামকৃষ্ণ জীবনে দেখেছি জগন্নাথের প্রসাদের সঙ্গে গঙ্গাবারি নিজে প্রতিদিন গ্রহণ করতেন আর ভক্তদেরও গ্রহণ করতে বলতেন। তাঁর মতে, জগন্নাথের প্রসাদ, বৃন্দাবনের রজ এবং গঙ্গাজল হল এই ধূলির ধরণীতে থেকেও তা অতি-জাগতিক বস্তু। এদের মাধ্যমে আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনে উত্তরণ সম্ভব। আমরা আধ্যাত্মিক ভাবনায় গঙ্গাকে যতই দেবীভাবে সম্মান দিয়ে থাকি না কেন পুরাণে কিন্তু গঙ্গা খুবই বিষণ্ণ ও বিপন্ন এক চরিত্র। কখনও তিনি দেবী পার্বতীর ভগিনী, কখনও তিনি ভগবান বিষ্ণুর পত্নী। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে দেখি গঙ্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী– এই তিনজন হলেন বিষ্ণু ঘরনি। গঙ্গা এবং সরস্বতী– এই দুই সপত্নীর মধ্যে অত্যন্ত বিবাদের সম্পর্ক। একদিন স্বামীর ভালবাসা নিয়ে দুই নদীর মধ্যে বিবাহ সৃষ্টি হলে সরস্বতী গঙ্গাকে শাপ দেন, ‘তুমি মর্ত্যে নদী হয়ে বয়ে যাও’। এই ভাবে অভিশপ্ত হয়ে গঙ্গাও সরস্বতীকে নদী হয়ে বয়ে যাওয়ার অভিশাপ প্রদান করেন। ফলে দু’জনেই নদী রূপে মর্ত্যে প্রবাহিত হন।
আরও পড়ুন-প্রতি সপ্তাহে কোভিডে ৬ কোটি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা চিনে!
দেবীর হিমালয়কন্যা রূপে প্রকাশিত হওয়ার পিছনে ছিল দীর্ঘ কাহিনি। দেবলোক আর মর্ত্যলোকের মধ্যে হিমালয়। সেখানে দেবতারা যেমন বিচরণ করেন ঠিক তেমনই ঋষি ও মানবেরাও বিচরণ করেন। কিন্তু হিমালয়ের রাজা এখন বিব্রত। কারণ, দেবতা আর মর্ত্যলোকে খুব দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তাই সকলেই ব্যতিব্যস্ত। দেবলোকে ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর পাশে মহাদেবের স্থান হবে কি না এ-নিয়ে বেশ টানাটানি। ব্রহ্মার প্রতিনিধি দক্ষ প্রজাপতি মহাদেবকে একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। বড্ড ত্যাগের অহংকার। গায়ে বাঘছাল ছাড়া কিছু নেই। থাকে শ্মশানে। বাহন একটা বৃদ্ধ ষাঁড়। এ-পর্যন্ত সহ্য করা যায়, কিন্তু গলায় ঝোলানো সাপটিকে মানতে পারেন না দক্ষ। চিৎকার করে অন্য দেবতাদের বলেন, ‘‘কী বোঝাতে চায় এভাবে থেকে? দেবকুলের আমরা সকলে খুব ভোগী? এত অহংকারী যে পিতামহ ব্রহ্মা দেবী সরস্বতীকে দেখে কামাতুর হয়েছিলেন বলে তাঁকে আকাশমার্গ থেকেই ঠাট্টা করে ওঠে। কত লজ্জা পেয়েছেন পিতামহ! আমাকে লজ্জিত মুখে এ-কথা বললেন। আমার সাম্রাজ্যের মধ্যে এই শিব, চালচুলোহীন দেবতার কোনও স্থান নেই। এই রাজ্যের ত্রিসীমানাতে কেউ যদি শিবপুজো করে তবে তা হবে দণ্ডনীয় অপরাধ।” কিন্তু দক্ষ জানেন না তাঁর সর্বাধিক স্নেহের কন্যা সতী শিবপ্রেমে মগ্ন। দক্ষকন্যা সতীর পিতার যজ্ঞস্থলে প্রাণত্যাগের পর সতীর দেহ নিয়ে শিবের, তাণ্ডব এবং বিষ্ণুর সুদর্শনচক্র দিয়ে সতীর দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলার পর শিব মহাশোকে গভীর তপস্যায় মগ্ন হলেন।
আরও পড়ুন-অসুস্থ আপ নেতা সত্যেন্দ্র, দেওয়া হল অন্তর্বর্তী জামিন
এদিকে, আরেকটি সমস্যা দেবলোক আর মানবলোককে বিব্রত করে তুলেছে। হঠাৎই পর্বতকুল কেমন যেন চঞ্চল হয়ে উঠেছে। তাদের পাখা থাকার দরুন অত বড় চেহারা নিয়ে একস্থান থেকে আরেক স্থানে সহজেই উড়ে যেত। কিন্তু এতে সকলের অসুবিধা হতে পারে বুঝে রাতের সময় তারা এদিক-সেদিক উড়ে বেড়াত। কিন্তু এতেও দেবতাদের অসুবিধে! তাঁরা তো রাতেই ঘুরে বেড়ান। আর মানুষের মতো চব্বিশ ঘণ্টায় তাঁদের দিন-রাত নয়! ৬ মাস পর রাত আসে। তাই তাঁরা যখনই বিমানে করে চলাফেরা করেন তখন কোনও না কোনও পর্বতের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়া জলভাত। এই সেদিনের কথা— পিতামহ ব্রহ্মা চলেছিলেন গোলোকের উদ্দেশ্যে। বিষ্ণুর সঙ্গে তাঁর কিছু বিষয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু পথে বিন্ধ্য পর্বতের সঙ্গে ধাক্কা খেলেন। খুব ক্রুদ্ধ হলেন ব্রহ্মা। এইরকম ঘটনার জন্য প্রতিদিন দেবরাজকে অভিযোগ করে দেবকুল। আর দেবরাজ ইন্দ্র হিমালয়কে জানান। হিমালয়ের দুই পুত্র, মৈনাক আর ক্রৌঞ্চ। এরা কেউ দেবতাদের কথা শুনতে রাজি নয়। হিমালয় বিবাহ করেছেন সুমেরু পর্বতের কন্যা মেনকাকে। হিমালয় শ্বশুরমশাইকেও বলেন, ‘‘দেবতারা ক্রমশই বিরক্ত হয়ে উঠেছেন। কিন্তু আমাদের সন্তানরা দেবতাদের গ্রাহ্য পর্যন্ত করে না। আমরা সবসময় দেবকুলকে সামলে চলেছি। কিন্তু এরা সে-সবের ধার ধারে না।” সুমেরু মৈনাককে খুব স্নেহ করেন। তিনি মৈনাক আর ক্রৌঞ্চের পক্ষ নেন। দেবতাদের মধ্যে যা ঘটনা ঘটে তার মধ্যে কেউ নাক গলায় না। কিন্তু দেবকুল কাউকে ছেড়ে কথা বলে না। ওদের সমস্যা ওদের মিটিয়ে নিতে দাও হিমালয়! সুমেরু বলেন। কিন্তু হিমালয় বোঝেন সমস্যাটি ছোট নয়। এর পরিণতি ভাল হবে না। এদিকে, কৈলাসে শিবের বাসভূমি বলে প্রজাপতি দক্ষ পর্বতদের উপর একেবারেই অসন্তুষ্ট। শিব হলেন হিমালয়ের প্রাণ। তাঁর তপস্যায় সমস্ত হিমালয় পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন তিনি শিবের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য পাঠান।
আরও পড়ুন-প্রকাশিত জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল: কারা হলেন প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়?
শিব সর্বকার্য ত্যাগ করেছেন এমন সময় জগতে তারকাসুরের প্রাদুর্ভাব হল। স্বর্গে দেবতারা স্বর্গচ্যুত হলেন। বলা হল, একমাত্র শিবপুত্রই তারকাসুর বধ করতে সক্ষম। কিন্তু শিব তপস্যামগ্ন, সতী ব্যতীত তাঁর তপস্যা ভঙ্গ করে এমন কোনও নারী নেই। ঠিক হল গঙ্গারূপে আবার সতী জন্মগ্রহণ করবেন নগাধিরাজ হিমালয়ের কন্যা হয়ে।
সতী হিমালয়-কন্যা গঙ্গা হয়ে জন্মগ্রহণ করবেন এই কথা শুনে দেবগণ আশ্বস্ত হলেন। কিন্তু মহাশক্তি নিজ খেয়ালে নিজেকে দ্বিধাবিভক্ত করলেন। মেনকার প্রথম কন্যাসন্তান জন্ম নিল সতীর এক অংশ থেকে। সেই শুভ্রদেহী কন্যার নাম রাখলেন গঙ্গা। গঙ্গাকে আশীর্বাদ করতে হিমালয় গৃহে ব্রহ্মা আর বিষ্ণু উপস্থিত হয়েছিলেন। তখনই হিমালয় জেনেছিলেন দেবতাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই গঙ্গার জন্ম। একথা শুনে হিমালয় মৌন রইলেন। মা মেনকার মুখ কালো হয়ে গেল। বিষ্ণু-সহ আমি আর অন্যান্য দেবগণ বুঝতে পেরেছিলাম এই দৈব পরিকল্পনায় হিমালয়ের সম্মতি নেই।
আরও পড়ুন-আমূলের আগ্রাসন রুখতে শাহ’র হস্তক্ষেপ দাবি স্ট্যালিনের
সতীর অংশ জাত বলে জন্মমুহূর্ত থেকেই গঙ্গা শিবের প্রতি অনুরক্তা ছিলেন। শিবের তপস্যাকে ভঙ্গ করতে চেষ্টা করলেও শিব কোনও সাড়া দিলেন না। কিন্তু দেবাদিদেবের তপস্যা ভঙ্গ করা একান্ত প্রয়োজন। সতী এবার সম্পূর্ণ রূপ নিয়েই জন্মগ্রহণ করলেন হিমালয়ের গৃহে। সেই কৃষ্ণা কন্যার নাম রাখলেন হিমালয় ‘পার্বতী’। কেউ কেউ তাঁকে কালী বলেও সম্বোধন করত। গঙ্গার ভগিনী হলেন পার্বতী।
পার্বতীর জন্ম হওয়ার পর পিতৃগৃহে গঙ্গা যেন একটু ম্লান হলেন। হিমালয় পার্বতীকে নিয়ে শিব-সন্নিধানে উপস্থিত হলেন। কিন্তু শিব চোখ তুলে তাকালেও পার্বতীকেও অস্বীকার করলেন। পার্বতী শুরু করলেন শিবলাভের জন্য তপস্যা। এই তপস্যা গঙ্গাও করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু হিমালয়ের তাতে আপত্তি ছিল। পার্বতীর ক্ষেত্রে হিমালয় কোনও আপত্তি করলেন না। আবার গঙ্গা দৈব-আনুকূল্যও পেলেন না। অথচ দেবতারা পার্বতীকে সাহায্য করতে অগ্রসর হলেন। শিবের তপস্যা ভঙ্গ করতে কামদেবকে নিযুক্ত করা হল। কিন্তু শিব তাঁকে ভস্ম করলেন। অবশেষে পার্বতীর তপস্যায় তুষ্ট হলেন শিব।
আরও পড়ুন-প্রকাশিত জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল: কারা হলেন প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়?
ভিখারি শিবের সঙ্গে বিবাহ হল পার্বতীর।
এই বিবাহে মা মেনকার আপত্তি ছিল। কারণ শিব সম্পত্তিবিহীন। আর দ্বিতীয় জন হলেন গঙ্গা। তাঁর জীবন লাভের উদ্দেশ্যই শিবঘরনি হওয়া। কিন্তু শিব তাঁকে গ্রহণ করলেন না। আর পিতা হিমালয় ও দেবকুল গঙ্গাকে তেমন কোনও সাহায্য করলেন না। শিবের প্রতি অনুরক্তা হয়েও তিনি শিবলাভে সমর্থ হলেন না। সতীর মতোই পবিত্র পুণ্য কন্যা। কিন্তু জন্ম থেকেই অসফল।
গঙ্গা শিবকে স্বামীরূপে লাভ করতে অসফল হলেও শিব-বীর্যকে ধারণ করলেন গঙ্গা। গঙ্গার ব্যথাভরা মনটিতে প্রলেপ দিতে দেবতারা অগ্নিকে নিযুক্ত করলেন। পার্বতী অগ্নির উপস্থিতিতে সচেতন হওয়ার ফলে শিব-বীর্য অগ্নিতে গিয়ে পড়ল। অগ্নি সেই তেজ সহ্য করতে না পেরে গঙ্গাকে দিলেন। গঙ্গাগর্ভে লালিত হতে লাগল সেই বীজ। গঙ্গা সেই শিশুর জন্ম দিলে কৃত্তিকাগণ তাঁকে পালন করে যুদ্ধের উপযুক্ত করে তুলল। শিবপুত্র কার্তিক তারকাসুর বধ করলেন। ব্রহ্মা দেখলেন, শিবপুত্রকে ধারণ করে গঙ্গার শোক একটু প্রশমিত হয়েছে। জগৎ-পালক বিষ্ণুর সঙ্গে পরামর্শ করলেন ব্রহ্মা। মহাশক্তির অংশ যখন গঙ্গা, তখন হিমালয়গৃহে নয়, স্বর্গেই সে ভাল থাকবে। গঙ্গাকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে হিমালয় ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলেন। কিন্তু গঙ্গা খুব খুশি। পিতার অসন্তোষ দেখে দেবী ব্রহ্মার কমণ্ডলুতে আশ্রয় নিলেন। কিন্তু এ-ঘটনায় পিতা হিমালয় রেগে তাঁকে অভিশাপ দিলেন। ‘তোমায় ধরিত্রীতেই বয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন-কমরেড! মনে পড়ছে, সে-সব কথা?
স্বর্গে এসে গঙ্গা আকাশগঙ্গা নামে প্রবাহিত হলেন। কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর অষ্টবসু এক ব্রাহ্মণের কাছে অভিশপ্ত হলে তাঁরা নিজেদের স্বার্থে গঙ্গার কাছে তাঁদের উদ্ধারের জন্য নিবেদন করলেন। তখন গঙ্গা দেবী হস্তিনাপুরের রাজা শান্তনুকে মোহিত করে সাতজন পুত্রের জন্ম দিলেন এবং অষ্টবসুর মধ্যে সাতজনকে উদ্ধার করে শেষ জনকে নিয়ে আবার স্বর্গে ফিরে এলেন। সেই শান্তনু পুত্র দেবব্রত উপযুক্ত হলে তিনি তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন পিতার কাছে। পরে যিনি ভীষ্ম নামে পরিচিত হন। গঙ্গার জীবন ত্যাগের জীবন। জন্মকাল থেকেই দেবকুলের জন্য সে ত্যাগ করেছে। হিমালয়ের উচ্চে জন্মগ্রহণ করে সে বারংবার নেমে এসেছে ধরিত্রীতে। সমতল পেয়েছে শস্য, বৃক্ষ, শীতলতা। ব্রহ্মার কমণ্ডলুতে দেবী আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন বলে তার জলকে বলা হয় ব্রহ্মবারি।
আরও পড়ুন-অনলাইন গেমিং সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তল্লাশি চালাল ইডি
রাজা শান্তনুর জন্য সমতলে নেমে আসার পরে দ্বিতীয়বার গঙ্গা প্রবাহিণী হয়ে বয়ে গিয়েছিলেন সগর রাজার ষাট হাজার পুত্রকে উদ্ধারের চেষ্টায়। কপিল ঋষি অত্যন্ত ক্রোধী। সগর রাজা অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। সেই যজ্ঞের অশ্ব হারিয়ে যাওয়ায় তাঁর ষাট হাজার পুত্র অশ্বটি খুঁজতে বের হয়। যজ্ঞের অশ্ব বাঁধা ছিল কপিল মুনির আশ্রমে। তাঁরা অশ্বটি নিতে গেলে মুনির ক্রোধে ভস্মীভূত হন। পরে ঋষি জানান, গঙ্গাবারিই এঁদের উদ্ধার করতে পারবে। দুই প্রজন্ম ধরে তপস্যা করেন সগর রাজার পুত্র, পৌত্র। অবশেষে ভগীরথের প্রার্থনায় তুষ্ট হন শিব। তিনি গঙ্গাকে নদীরূপে বহমান হতে আদেশ করেন। এই প্রবাহকে তিনি নিজের জটায় ধারণ করে গঙ্গার চিরকালের ক্ষোভকে শান্ত করেন। ভগীরথের তপস্যায় গঙ্গা নদী হলেন বলে তাঁর অপর নাম ভাগীরথী।