ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। হিন্দুসমাজে প্রচলিত একটি লোক-উৎসব। এর পিছনে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনি। সেটা হল, কোনও এক কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তাঁর ভাই যমের পুজো করেন। তার পুণ্যপ্রভাবে অমরত্ব লাভ করেন যম। এই কারণে তিথির নামান্তর হয় যমদ্বিতীয়া। যমুনার পুজোর ফলে ভাই যমের অমরত্বলাভের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পরবর্তীকালে হিন্দু রমণীরাও ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় এই উৎসব পালন শুরু করেন। সামান্য ভিন্ন রীতিতে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
কার্তিক মাসের দ্বিতীয়া তিথিতে উপবাস থেকে বোন ভাইয়ের কপালে বাঁ-হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে চন্দন অথবা দইয়ের ফোঁটা এঁকে দেন। দীর্ঘায়ু কামনা করে বলেন,‘‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা/ যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।’’ এই থেকেই উৎসবের আরেক নাম হয় ‘ভাইফোঁটা’। এই উৎসব উপলক্ষে বোন ভাইকে উপহার সামগ্রী দেন। ভাইও বোনকে দেন প্রত্যুপহার। বাড়িতে বিশেষ খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়। ঘরোয়া এই অনুষ্ঠান ভাইবোনের বন্ধন দৃঢ় করে। কালে কালে পালাবদল ঘটেছে ভাইফোঁটার। বদলে গেছে অনেক কিছুই। লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সাধারণের পাশাপাশি এই উৎসবে মেতে ওঠেন বিশিষ্টরাও। দিনটি কীভাবে পালন করেন? উৎসবে বদল দেখছেন কতটা? জানালেন তাঁরা।
আরও পড়ুন-সারা বছর ধরেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
সারা বছর অপেক্ষায় থাকি
হৈমন্তী শুক্লা
ভাইফোঁটা আমার কাছে একটি বিশেষ দিন। সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। ছোটবেলায় খুব হইহই করে কাটত। মামারা আসতেন আমাদের বাড়িতে। মা তাঁদের ফোঁটা দিতেন। নিজে হাতে রান্না করতেন মা। এলাহি আয়োজন হত। আমরা চার ভাই, চার বোন। বোনেরা ফোঁটা দিতাম ভাইদের। আনন্দের মধ্য দিয়েই কাটত দিনটা। মা এবং মামারা চলে যাওয়ার পর সাময়িক ভাটা পড়েছিল। তারপর আবার ভাইফোঁটার মিলন উৎসব শুরু হয়। আমার গল্ফগ্রিনের বাড়িতে। সেটা এখনও চলছে। আমার নিজের ভাই চারজন। তাদের মধ্যে দু’জন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। চলে গেছে দুই বোনও। এবারও আমার বাড়িতে ভাইফোঁটা আয়োজিত হবে। আমার সেজ ভাই এবং ছোট ভাই আসবে।
আরও পড়ুন-বঞ্চনার জবাব দেবে বাংলা, বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে শপথ, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, ধরা পড়ল একই দৃশ্য
পাশাপাশি আসবে আমার সংগীত-জগতের ভাইয়েরা। অজয় চক্রবর্তী, রশিদ খান, দেবজ্যোতি বোস, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার প্রায় প্রতিবছর ভাইফোঁটায় আমার বাড়িতে আসেন। আমাকে নিজের দিদির মতো দেখেন। আমি তাঁদের ফোঁটা দিই। মঙ্গল কামনা করি। দেবজ্যোতি বোস তো আমার ছোট ভাইয়ের মতো। বড় আদরের। এঁদের সবাইকে নিয়ে দারুণভাবে আমার দিনটা কাটে। খাওয়াদাওয়া হয়। যদিও এখন নিজের হাতে রান্না করতে পারি না। ভরসা করি ক্যাটারারের উপর। বদল ঘটেছে এইটুকুই। আমার কয়েকজন ছাত্রও আসে। তাদেরও ফোঁটা দিই। অনেকেই আছে যারা দেশের এবং রাজ্যের বাইরে থাকে। ভাইফোঁটার দিন তারা ফোন করে। অথবা মেসেজ। প্রণাম জানায়। আমি তাদের শুভেচ্ছা জানাই। আসলে আমি সকলের দিদি। ইউনিভার্সাল দিদি বলা যায়। সবাই খুব ভালবাসে।
আরও পড়ুন-গাজায় ১০ মিনিটে এক শিশুর মৃত্যু, জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
এ আমার পরম প্রাপ্তি। ভাইফোঁটা উপলক্ষে উপহার দেওয়ার চল আছে। আমি ভাইদের কাছে অনেক কিছু পাই। আমিও দিই। এখন খুব একটা দোকানে যাওয়া হয় না। টাকা দিয়ে দিই। যে যার পছন্দমতো জিনিস কিনে নেয়। ভাইরা আমার খুব প্রিয়। আমি তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করি। সংগীত-জগতে আমি যেমন অনেকের দিদি, তেমন কারও কারও বোনও। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ছিলেন আমার বাবার মতো। কিন্তু ওঁকে দাদা বলতাম। হেমন্তদাকে ভাইফোঁটা দেওয়ার সুযোগ আমার হয়নি। মান্না দে-ও আমার দাদার মতো ছিলেন। ওঁদের কাছে অনেক কিছু শিখেছি। স্নেহ পেয়েছি। ভালবাসা পেয়েছি। সলিল চৌধুরীও স্নেহ করতেন। এখন মাঝেমধ্যেই ওঁদের কথা খুব মনে পড়ে। বছরে তিনটে দিন আমি কোনও কাজ রাখি না। অনুষ্ঠান বা অন্য কোথাও যাই না। দিনগুলো হল আমার জন্মদিন, সরস্বতী পুজো এবং ভাইফোঁটা। এই দিনগুলো নিজের জন্য রাখি। সবাইকে নিয়ে আনন্দ করি। এবারের ভাইফোঁটায় মেতে উঠব ভাইদের নিয়ে।
আরও পড়ুন-আইসল্যান্ডে ১৪ ঘণ্টায় ৮০০ ভূমিকম্প! জরুরি অবস্থা জারি
এটা একটা ফ্যামিলি গেট টুগেদার
নবমিতা চট্টোপাধ্যায়
ভাইফোঁটায় আমরা প্রায় আট-ন’জন ভাইকে ফোঁটা দিই। ফোঁটা হয় সকালবেলায়। তারপর ভাইয়েরা যে যার কাজে বেরিয়ে পড়ে। আবার সবাই একসঙ্গে হই সন্ধেবেলায়। আড্ডা, গানবাজনা, খাওয়াদাওয়া হয়। মূলত বোনেরাই সমস্ত আয়োজনের দায়িত্বে থাকে। ভাইদের পাশাপাশি ডাকা হয় তাদের স্ত্রীদেরও। সবাই মিলে আনন্দ করি। পুজো, লক্ষ্মীপুজোর পরে এটা আরও একটা ফ্যামিলি গেট টুগেদার। প্রতিবছর লক্ষ্মীপুজোর পরেই প্ল্যান করে নিই। এবার কী হবে, আগেই ঠিক হয়ে গেছে। ভাইফোঁটা সচরাচর আমরা মিস করি না। আমার ভাই গৌরব অবশ্য একবার থাকতে পারেনি। তখন ও দার্জিলিং সেন্ট পলসে পড়ত। যে কোনও কারণেই হোক ছুটি পায়নি। সেই বছর ওর জন্য আমাদের খুব মনখারাপ হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতিবছরই ও এই দিনটা আমাদের সঙ্গে কাটায়। গৌরব এখন অভিনয় নিয়ে খুবই ব্যস্ত থাকে। একসঙ্গে অনেক কাজ করছে। তবু প্রতিবছর সকালে ফোঁটা নিয়ে কাজে বেরিয়ে যায়। আবার রাতে ফিরে আমাদের সঙ্গে হই-হুল্লোড়ে মাতে। আসে ওর স্ত্রী দেবলীনাও। এই দিনে ওরা দূরে কোনও কাজ নেয় না। শুনেছি আমার দাদু মহানায়ক উত্তমকুমারও ভাইফোঁটা নিতেন। কাজিন সিস্টার বা পাতানো বোনেরা বাড়িতে আসতেন। তাঁরা ফোঁটা দিতেন। আমি দাদুকে পাইনি। তবে ছোটদাদু তরুণকুমারকে পেয়েছি। ছোটদাদুকে আমি প্রতিবছর ফোঁটা দিতাম। তিনি আমাকে টাকা দিতেন। এখন আমরা ভাইদের উপহার দিই। আগে থেকে জেনে নিই কার কী প্রয়োজন। সেই মতো কেনা হয়। ভাইয়েরাও আমাদের উপহার দেয়। ভাইফোঁটা মিটে গেলেই শুরু হবে কাজ। একটি সিনেমায় অভিনয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে। শীতের দিকেই শুরু হবে শ্যুটিং।
আরও পড়ুন-মণ্ডপ-প্রতিমা থেকে আলোকসজ্জা বারাসতের কালীপুজোয় জোর টক্কর
ভাইফোঁটার মধ্যে পরিবর্তন এসেছে
সৈকত মিত্র
আমার বড় পিসি থাকতেন চন্দননগরে। বিরাট পরিবার। পিসেমশাইরা সাত ভাই। পাশাপাশি বাড়ি। ভাইফোঁটার দিন পরিবারের সবাই যেতাম পিসির বাড়িতে। অন্যান্য পিসি, কাকা, কাকিমাও যেতেন। দুই প্রজন্ম মিলে একটা মোচ্ছব হত। পিসিরা ফোঁটা দিতেন বাবা-কাকাদের। তারপর আমরা। হাত-মুখ ধুয়ে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে বসতাম। শুরু হত ভাইফোঁটা। নিজের দিদির পাশাপাশি আমাকে ফোঁটা দিত পিসতুতো দিদিরা। উপহার দিতাম এবং পেতাম। খুব মজা হত সারাদিন। জমিয়ে খাওয়াদাওয়া। বাড়ি ফিরতে ফিরতে বিকেল-সন্ধে। ছোটবেলার ভাইফোঁটার স্মৃতি এটাই। বড়বেলা পর্যন্ত কেটেছে এইভাবেই। আমাদের নৈহাটির বাড়িতেও বসেছে ভাইফোঁটার আসর। আসলে ভাইফোঁটা উপলক্ষে সবাই এক জায়গায় মিলিত হতে পারাটাই মজাদার। ফোঁটা নেওয়ার পর খাওয়াদাওয়াটা খুব এনজয় করতাম।
আরও পড়ুন-৭১ বছর শ্মশানে বাঁধা তেনাদের একদিনের মুক্তি ভূতচতুর্দশীতে
এখন ভাইফোঁটার দিন দিদির কাছে যাই। ফোঁটা নিই। তারপর চলে আসি। আগের আড়ম্বর আর নেই। তবে চালিয়ে যাচ্ছি। একটা জিনিস উপলব্ধি করি, ভাইফোঁটার মধ্যেও অদ্ভুত একটা পরিবর্তন এসেছে। ভাই অথবা বোন রাজ্যের অথবা দেশের বাইরে থাকলে অনেক সময় ভার্চুয়ালি ভাইফোঁটা সারে। ফোনে অথবা ভিডিও কলে। এটাকে আমি একেবারেই খারাপ চোখে দেখি না। ভাইফোঁটার মধ্যে সামাজিক বন্ধনের একটা ব্যাপার আছে। এটা মানুষের তৈরি উৎসব। যাতে বিশেষ দিনে সবাই একসঙ্গে হতে পারি। আমার পুত্র-কন্যা মুম্বইয়ে থাকে। সেখানে তারা ভাইফোঁটা পালন করে। দু’জন দেশের দুই প্রান্তে থাকলে এক জায়গায় ভাইফোঁটা পালন করা তাদের পক্ষে সম্ভব হত না। তখন ভার্চুয়ালি সারতে হত। আসলে পৃথিবীটা অনেক ছোট হয়ে গেছে। মানুষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বদল ঘটছে চিন্তা-ভাবনার। আগে ঘরে রান্না হত। এখন অনেকের ভরসা রেস্তোরাঁ। এই পরিবর্তনটা মেনে নিতেই হবে। চলতে হবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। তবে দেখতে হবে, ভাই-বোনের মনের বন্ধন যেন অটুট থাকে।
আরও পড়ুন-সারা বছর ধরেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
প্রতিবছর আমি বোনফোঁটা দিই
সপ্তর্ষি মৌলিক
ছোটবেলা থেকেই আমরা ভাইফোঁটার দিনটা একটু অন্যরকম ভাবে পালন করি। আমার বোন আছে। সে আমাকে ফোঁটা দেয়। আমার মাসির উদ্যোগে চালু হয়েছে বোনফোঁটা। প্রতিবছর আমি ফোঁটা নেওয়ার পর আমার বোনকে ফোঁটা দিই। তারপর আমরা একে অপরের হাতে তুলে দিই উপহার। বড় হওয়ার পরও সেটা বজায় রাখতে পেরেছি। আমরা চেষ্টা করি এই বিশেষ দিনটা একসঙ্গে কাটাতে। তবে কোনও কোনও বছর আমরা অন্য দিন ভাইফোঁটা উদযাপন করেছি। কখনও বোনের ব্যস্ততার কারণে, কখনও আমার ব্যস্ততা। সেই বছর ভাইফোঁটায় ফোন অথবা ভিডিও কলে আমরা কথা বলেছি। পরে কোনও একটি দিন একসঙ্গে কাটিয়েছি। খাওয়াদাওয়া করেছি। তবে আমি খুব চেষ্টা করি ভাইফোঁটার দিন থিয়েটার অথবা শ্যুটিং না রাখার। কিন্তু অনেক সময় উপায় থাকে না। ভাইফোঁটার খাওয়াদাওয়ার মধ্যে একটা অদ্ভুত আকর্ষণ থাকে। ছোটবেলায় বাড়ির রান্না-করা খাবারের থেকেও বাইরের খাবার খেতেই বেশি আনন্দ পেতাম। তখন এত জাঙ্ক ফুডের চল ছিল না। মিষ্টির থেকেও নোনতা বেশি পছন্দ করতাম। উত্তরপাড়ার একটি মিষ্টির দোকানের কচুরি ছিল আমাদের খুব প্রিয়। ভাইফোঁটায় ওটা প্রতিবছর আনা হত। একটু বড় বয়সে ভাইফোঁটার প্লেটে জায়গা করে নিল কেক, পেস্ট্রি, মিষ্টি। বোন এবং আমি নিজে গিয়ে দোকান থেকে খাবার পছন্দ করে কিনে আনি। প্যাটিস জাতীয় খাবার খুব ইন্টারেস্টিং লাগে। এর পাশাপাশি দুপুরবেলা হয় কবজি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়া। এখন কোনও কোনও বছর বোন সল্টলেকে চলে আসে। কোনও কোনও বছর আমি উত্তরপাড়ায় যাই। একসঙ্গে দিনটা কাটাই। সোহিনীও থাকে, বাবা-মাও থাকে। সবাই মিলে একসঙ্গে কোথাও যাই। এবারেও জমিয়ে ভাইফোঁটা সেলিব্রেট করব।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রে বিকল্প সরকার হলে একমাসে গ্রেফতার গদ্দার
দিদির ডাকের অপেক্ষায় থাকি
পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস
সংগীত-জগতে আমাদের দিদি হৈমন্তী শুক্লা। তিনি প্রতিবছর আমাকে ভাইফোঁটা দেন। বহু বছর ধরেই দিচ্ছেন। সংগীত-জগতের আরও অনেকেই আসেন। ফোঁটা নেন। আগে আমার দাদাও আসত। এখন আর পারে না। শুধু ভাইফোঁটার দিনেই নয়, সারা বছর হৈমন্তীদির আশীর্বাদ আমার সঙ্গে থাকে। খোঁজখবর নেন। আমার জীবনে ওঁর ভূমিকা বিরাট। পাশে থেকেছেন দুঃসময়ে। আমরা তিন ভাই। আপন দিদি নেই। নিজের দিদি থাকলেও এতটা করতেন কি না সন্দেহ। উনি আমার দিদির অভাব পূরণ করেছেন। প্রতি বছর ভাইফোঁটার আগে দিদির ডাকের অপেক্ষায় থাকি। এমনিতে ভাইফোঁটায় উপহার দেওয়ার একটা চল আছে। দিদি সারা বছর ধরেই আমাকে অনেক কিছু দেন। যেখানেই অনুষ্ঠানে যান না কেন, কিছু না কিছু আনেন। গত জন্মে নিশ্চয়ই আমার কোনও পুণ্য ছিল, তাই এইরকম দিদি পেয়েছি। এবার বলি ছোটবেলার কথা। তখন খুড়তুতো-জেঠতুতো বোনেরা ফোঁটা দিত। ১০-১৫ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের ফোঁটা নিয়েছি। কয়েকটি পরিবার একসঙ্গে মিলে ভাইফোঁটা হত। আসতেন মাসিরাও। আমরা ভাইবোনেরা হইহই করতাম। তখন ভাইফোঁটার থেকেও আমাদের কাছে খাওয়ার গুরুত্ব বেশি ছিল। কী মিষ্টি দেবে, প্লেটে কী কী খাবার থাকবে, সেদিকেই নজর থাকত। সেই বোনেদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ এবং যোগাযোগ এখন অনেকটাই কমে গেছে। কারণ তারা প্রায় সবাই কলকাতার বাইরে থাকে। কেউ কেউ ভাইফোঁটার দিন মেসেজ পাঠায়। এইটুকুই। হৈমন্তীদি যেদিন থেকে ভাইফোঁটা দিতে শুরু করলেন, সেদিন থেকেই ভাইফোঁটার গুরুত্ব বুঝতে শিখেছি। অনেকটা বড় বয়সে। বুঝেছি মাথার উপর একজন দিদি থাকা কতটা দরকার। রক্তিয়েরা আত্মীয় হয় না। আত্মার সঙ্গে যাদের সম্পর্ক, তারাই আত্মীয়। হৈমন্তীদির সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক নেই। আত্মার সম্পর্ক আছে। এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এবারেও যাব ভাইফোঁটায়।