বিদেশ বোস: সুরজিৎ সেনগুপ্ত (Surajit Sengupta) কত বড় ফুটবলার ছিল সেটা আমরা জানি। তা ইতিহাসেও লেখা থাকবে। কিন্তু মানুষ সুরজিৎও কম বড় ছিল না। আমি কিছুটা জুনিয়র ছিলাম। তাই সুরদা বলে ডাকতাম। মোহনবাগানে একটা বছর সুরদার সঙ্গে খেলি। কিন্তু বাংলার হয়ে আমরা একসঙ্গে সন্তোষ ট্রফিতে বহুবার খেলেছি। ১৯৭৮ সালে সন্তোষ খেলতে গিয়েছিলাম কাশ্মীরে। সুরদা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল স্ত্রী ও শাশুড়ি মা’কে। কত স্মৃতি মনে পড়ছে। প্রতিদিন রাতে সুরদার রুমে গিয়ে জমিয়ে আড্ডা দিতাম। আমি, মানস, ভাস্কর, চিন্ময় খুব ভাল বন্ধু ছিলাম বলে আমাদের নিয়ে খুব মশকরা করত সুরদা। ময়দানে সুরজিৎ সেনগুপ্ত হাতেগোনা কয়েকজন ফুটবলারের মধ্যে পড়ে, যারা অজাতশত্রু। বিতর্ক থেকে শত হাত দূরে থাকতে ভালবাসত। তাই ফর্ম থাকলেও কর্তাদের সঙ্গে মতের মিল হচ্ছে দেখে বুটজোড়া তুলে রেখেছিল সুরদা। এত বড় ফুটবলার হওয়া সত্ত্বেও কোনও অহঙ্কার ছিল না মানুষটার। অবলীলায় আমাদের মতো জুনিয়রদের দেখিয়ে দিত ফুটবলের টেকিনিক্যাল দিকগুলো। প্র্যাকটিসের পর আমরা কিছু জানতে চাইলেই বল নিয়ে স্কিল দেখিয়ে দিত। কীভাবে আউটসাইড, ইনসাইড করে বল নিয়ে এগোতে হবে, কীভাবে পজিশন নিতে হবে। সুরদা নিজে মাঠে এগুলো দেখিয়ে দিত। ফুটবলের বাইরে পড়াশোনা, গানবাজনার মধ্যে থাকলেও খেলার মাঠে নিজেকে জাহির করত না। আদর্শ টিমম্যান ছিল সুরদা। একটা ঘটনা জানি, ১৯৭৮ সালে সুরদা (Surajit Sengupta) ইস্টবেঙ্গলে অধিনায়ক থাকাকালীন পরের মরশুমে দলবদলের সময় সইয়ের আগে পুরো দলকে নিজের বাড়িতে রেখেছিল। যাতে বিপক্ষ দল কোনও ফুটবলারকে তুলে নিতে না পারে। এতটাই সত্তরের ময়দানে সুরদার প্রভাব ছিল।