প্রতিবেদন : বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। ক্ষমতার লড়াইয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চাপে রেখেছে। এই মুহূর্তে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল সামাল দেওয়াই মোদি সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন-তৃণমূলের সুরেই দাবি কর্নাটকের বিজেপি বিধায়কেরও, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজি
ক্ষমতায় থেকেও মধ্যপ্রদেশের উপদলীয় কোন্দল এতটাই গুরুতর যে চারবারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না মোদি-শাহরা। বছর শেষে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের মতো দুটি বড় হিন্দিভাষী রাজ্যে ভোট। তার আগে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জেরবার পদ্ম শিবির। মধ্যপ্রদেশে ইতিমধ্যে দু’দফা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হলেও এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে তুলে না ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে চোরাস্রোত ঠেকাতেই এই কৌশল। মধ্যপ্রদেশের ক্ষেত্রে অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটে জিতলে তারপর ঠিক হবে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন। দু’দফার প্রার্থী তালিকায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজের নাম নেই। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-শান্তির পাহাড়ে প্রশিক্ষণের সূচনা
শিবরাজকে আড়াল করে তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং চার সাংসদকে প্রার্থী করতে হয়েছে বিজেপিকে। বিশেষত যে আসনগুলিতে গতবারের বিধানসভা নির্বাচনে দল হেরে গিয়েছিল সেইসব কেন্দ্রে বিভিন্ন স্তরের নেতাকে প্রার্থী করা হচ্ছে। দলের সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নাম আছে এই তালিকায়। কিন্তু ভোটে দাঁড়ানোর কোনও ইচ্ছে ছিল না বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন এই কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, আমি একদমই খুশি নই। আমার ভোটে লড়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না, এক শতাংশও ইচ্ছে ছিল না। একজন প্রবীণ নেতা হয়ে এখন হাতজোড় করে ভোট চাইতে বেরোতে হবে।
আরও পড়ুন-প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য প্রশাসন, মিথ্যে অজুহাতে আজব দাবি রাজ্যপালের
একই পরিস্থিতি রাজস্থানেও। রাজ্যে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসে গেহলট বনাম পাইলট দ্বন্দ্বকেও এখন ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের খেয়োখেয়ি। মরুরাজ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে একাধিক বড় নেতার নাম। সকলেই শীর্ষ পদের অভিলাষী। দৌড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত ও অর্জুন রাম মেঘওয়াল। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান রাজ্যসভার সাংসদ খিড়োরি লাল মিনা, লোকসভার সাংসদ দিয়া কুমার, রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর, সুখবীর সিং জৌনপুরিয়া। অন্যদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির প্রভাবশালী নেত্রী বসুন্ধরা রাজে সাফ জানিয়েছেন, তাঁর পক্ষে দলের অন্য কোনও নেতার মুখ্যমন্ত্রিত্বে বিধায়কের আসনে বসা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন-আধার-তথ্য সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ
বসুন্ধরা চান, আগে থেকেই তাঁর নাম মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হোক। এতে তীব্র আপত্তি মোদি-শাহর। আপাতত ঠিক হয়েছে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান দুই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম আগে থেকে ঘোষণা করা হবে না। পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সামনে রেখেই নির্বাচনে নামবে গেরুয়া শিবির। বিরোধীদের বক্তব্য, মোদির নামে যে জেতা যাচ্ছে না তার প্রমাণ হিমাচলপ্রদেশ ও কর্নাটক। ওই কৌশলে এবারও ভরাডুবি হবে বিজেপির। মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতাসীন বিজেপির লাগামছাড়া দুর্নীতিকেই হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস। রাজস্থানেও বসুন্ধরা রাজে বনাম অন্য একাধিক নেতার দ্বন্দ্বের সুফল ভোটবাক্সে টানতে চায় কংগ্রেস।