দোহা, ৩ ডিসেম্বর : অঘটনের বিশ্বকাপে আরও এক অঘটন। পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে হারিয়ে চমক দিল ক্যামেরুন (Brazil vs Cameroon)। আফ্রিকার দেশটি খেলার ইনজুরি টাইমে (৯২ মিনিট) গোল করে হারিয়ে দিল ব্রাজিলকে। খেলার ফল ১-০। তবে ব্রাজিলকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল ক্যামেরুন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার আফ্রিকার দেশের কাছে হারল ব্রাজিল। ব্রাজিলীয়রা যখন উপরে উঠে গোলের জন্য মরিয়া তখন পাল্টা প্রতিআক্রমণে উঠে গোল করে ক্যামেরুন। চুপো মোটিংয়ের সেন্টার থেকে দুরন্ত হেডে জয়সূচক গোলটি করেন আবুবাকার। জার্সি খুলে গোলের সেলিব্রেশন করে লাল কার্ড দেখলেন ক্যামেরুনের গোলদাতা। শেষ সাত মিনিট ক্যামেরুন ১০ জনে খেললেও গোল আর শোধ করতে পারেনি তিতের ব্রাজিল। ম্যাচ হেরেও ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘জি’ গ্রুপের সেরা হয়েই শেষ ষোলোয় পা রাখল সেলেকাওরা। মাঠে বসে দলের হার দেখলেন নেইমার। গোল নষ্টের খেসারত দিল তিতের দল।দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল খেলবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে। এই গ্রুপের রানার্স হয়ে শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ড খেলবে পর্তুগালের বিরুদ্ধে। সুইসরা এদিন ৩-২ গোলে হারাল সার্বিয়াকে।আগেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তার উপর বেশ কিছু ফুটবলারের অসুস্থতা। এই সুযোগে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে নামার আগে রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি পরখ করে নিলেন ব্রাজিল কোচ তিতে। প্রথম একাদশে আটটি বদল এনে গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রডরিগো, অল্যান্টনি, মার্টিনেল্লি, ফ্যাবিনহোদের খেলান। নিয়মিত দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা ও মার্কুইনহোসকে বিশ্রাম দিয়ে এদিন ব্রেমার এবং এডের মিলিটাওকে শুরু থেকে খেলান সেলেকাও কোচ। রাইট ব্যাকে খেলেন ৩৯ বছর বয়সী বহু যুদ্ধের পোড়খাওয়া সৈনিক দানি আলভেস। ব্রাজিলের হয়ে সব থেকে বেশি বয়সে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়লেন তিনি।
আরও পড়ুন-বিশ্বকাপ শেষ লুকাকুদের, নজির মরক্কোর
মাঝমাঠে ব্রাজিল (Brazil vs Cameroon) আক্রমণে নেতৃত্ব দেন রডরিগো। অল্যান্টনি, মার্টিনেল্লিরা ক্যামেরুন রক্ষণকে ব্যস্ত রাখেন। লেফট ব্যাকে স্ল্যান্দ্রোর পরিবর্ত অলেক্স টেলেস ওভারল্যাপে উঠে আক্রমণে সাহায্য করলেন। প্রথমার্ধে ব্রাজিল সব কিছুই করেছে, শুধু গোলটি ছাড়া। ফ্রেডের সেন্টার থেকে মার্টিনেল্লির হেড দুর্দান্তভাবে বাঁচিয়ে দেন ক্যামেরুন গোলরক্ষক ডেভিস এপাসি। ফাইনাল থার্ডে বারবার গতি, স্কিলে ক্যামেরুন রক্ষণকে বিব্রত করেন অল্যান্টনি, মার্টিনেল্লিরা। দুই ব্রাজিলীয় তারকার দু’টি শট প্রতিহত করেন এপাসি। ক্যামেরুনের গোলরক্ষক গোলের নিচে একা কুম্ভ হয়ে লড়ে যান। প্রথমার্ধে বার দু’য়েক প্রতিআক্রমণে উঠে ব্রাজিল রক্ষণে ফাটল ধরায় ক্যামেরুন। কিন্তু এলিসনের জায়গায় খেলা ব্রাজিল গোলরক্ষক এদেরসনকে পরাস্ত করতে পারেননি আবুবাকার, চুপো মোটিংরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রক্ষণাত্মক খোলস ছেড়ে বেরিয়ে উইং দিয়ে আক্রমণ তুলে এনে ব্রাজিলের রক্ষণে চাপ বাড়ায় ক্যামেরুন। গোলের সুযোগ তাদের অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এই সময় ব্রাজিল কোচ তিতে তাঁর প্ল্যান ‘বি’ প্রয়োগ করেন। ফ্রেড, রডরিগো, জেসুস, অল্যান্টনি, টেলেসকে তুলে নিয়ে গুইমারেস, মার্কুইনহোস, এভার্টন, পেদ্রো এবং রাফিনহাকে নামিয়ে দেন। এর পর একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গোলের লকগেট খোলার চেষ্টা করে সেলেকাওরা। কিন্তু ক্যামেরুন রক্ষণ এবং তাদের গোলরক্ষক এপিসা বার বার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। শেষ পর্যন্ত ইনজুরি টাইমে আবুবাকারের গোলে বাজিমাত ক্যামেরুনের।