সংবাদদাতা, হাওড়া : কেন্দ্রের ছাড়পত্র না মেলায় শহরের জল সরবরাহ আরও উন্নত করার কাজ শুরু করতে পারছে না হাওড়া কর্পোরেশন। যে জেটির মাধ্যমে গঙ্গা থেকে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পে জল আসে, সেটি বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতর অবস্থিত। শহরের জল সরবরাহের মান আরও বাড়াতে ওই জেটিটিকে সংস্কার করে সেখানে একটি পাম্প হাউস তৈরির পরিকল্পনা করেছে কেএমডিএ ও হাওড়া কর্পোরেশন। কিন্তু কেন্দ্রের অধীনে থাকা বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ নানা অযৌক্তিক ও অনৈতিক অজুহাত দেখিয়ে কাজ শুরু করার অনুমতি দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন-স্টেফির সঙ্গে নাম জড়ানোয় গর্বিত : জকো
ফলে ৩০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। এর পেছনে বিজেপির ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃণমূলের হাওড়া সদরের সভাপতি ও বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ সরাসারি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘‘বিজেপি উন্নয়নের বিরোধী। তাই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অধীনে থাকা বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ এই কাজ করতে দিচ্ছে না। এই কাজ হলে হাওড়ায় জল সরবরাহের মান আরও বাড়বে। যেটা বিজেপির মানতে কষ্ট হচ্ছে।’’ গঙ্গা থেকে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের জন্য বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতর ইনটেক জেটি থেকে জল তোলা হয়। এই ইনটেক জেটির পেছনে কিছটা দূরে রয়েছে পাম্প হাইস। পাম্প হাউসে থাকা ৪টি পাম্পের সাহায্যে গঙ্গা থেকে জল তুলে পাইপলাইনের মাধ্যমে তা পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পে পাঠানো হয়। সেখান থেকে জল পরিস্রুত করে হাওড়া শহরে সরবরাহ করা হয়। হাওড়া কর্পোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরি জানান,এখন জল তোলার পাম্প হাউসটা গঙ্গা থেকে কিছুটা দূরে। সেখানকার পাম্পের ক্ষমতাও কমেছে। এর মধ্যে জলস্তর কমে যাওয়ায় ওই পাম্প চালিয়ে বেশি জল তোলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন-বক্স বাজিয়ে দলীয় কর্মসূচি বন্ধ করলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা
ফলে গ্রীষ্মকালে জল সরবরাহ কমে যাবার সম্ভাবনা থাকছে। এই সমস্যার সমাধানে কেএমডিএ ও হাওড়া কর্পোরেশন যৌথভাবে ঠিক করে ওই জেটির ওরপেই একটি পাম্প হাউস তৈরি করা হবে। যার মাধ্যমে গঙ্গা থেকে জল তুলে সরাসরি পদ্মপুকুর মূল প্রকল্পে জল পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর জন্য কেএমডিএ ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করে। এর জন্যেও অর্থও বরাদ্দ করা হয়। বিষয়টি বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ পরিবেশ দূষণ নানা অনৈতিক যুক্তি দেখিয়ে কাজ শুরুর অনুমতি দিচ্ছে না। এই ব্যাপারে হাওড়া কর্পোরেশনের তরফে একাধিক বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষকে আবেদন করা হয়েছে। চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-বেনাচিতির বাঙালি বিজ্ঞানীর বড় আন্তর্জাতিক সাফল্য
হাওড়া কর্পোরেশন ও কেএমডিএ’র আধিকারিকরা একাধিকবার বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তবুও তিনমাস ধরে অনুমতি না দিয়ে কাজ আটকে রেখে দিয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। পানীয় জলের মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজের অনুমতি না দেওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে জনমানসে।