প্রতিবেদন : যে-প্রকল্পকে তীব্র কটাক্ষে বঙ্গ বিজেপির জোকাররা বলেছিল ‘যমের দুয়ারে’— বাংলার সরকারের সেই দুয়ারে সরকার প্রকল্পই আজ কেন্দ্রীয় সরকারের সেরার সেরা প্রকল্পের পুরস্কার পাচ্ছে। তা-ও আবার রাষ্ট্রপতির দুয়ারে। একে কী বলবেন! এ তো বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের জোড়া ট্র্যাজেডি। দুয়ারে সরকার-কে নানা ন্যক্কারজনক ভাষায় কটাক্ষ করেছে বিজেপির ‘চার আনার নেতারা’। সেই দুয়ারে সরকার প্রকল্প আজ শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে পুরস্কৃত হচ্ছে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে প্ল্যাটিনাম পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। উজ্জ্বল উপস্থিতি থাকবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের। এই ঘটনায় ফের মুখ পুড়ল বঙ্গ-বিজেপির জোকারদের।
আরও পড়ুন-নবম-দশমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দিল্লিতে প্রোটোকল সম্পর্কিত মহড়ায় যোগ দেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর করোনার সময় মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে দুয়ারে সরকার প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও পর্যন্ত মোট ৫ দফায় ওই প্রকল্পের ক্যাম্প বসেছে গ্রাম-বাংলায়। রাজধানী দিল্লিতে এসে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁর দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বুঝেছিলেন, সেই সময় করোনার কারণে মানুষ যেহেতু সরকারের কাছে পৌঁছতে পারছেন না, সুতরাং সরকারকেই মানুষের দরবারে পৌঁছতে হবে। সেই ভাবনা থেকেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত দুয়ারে সরকার প্রকল্পের শিবির হয়েছে ৩ লক্ষ ৮০ হাজারটি। রাজ্যের প্রায় ৯ কোটি মানুষ এই শিবিরে এসেছেন। নানা পরিষেবা পাওয়ার জন্য ৭ কোটি ৮০ লক্ষ আবেদন ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে দুয়ারে সরকার শিবিরের মাধ্যমে। দুয়ারে সরকার প্রকল্প থেকে রাজ্যের মোট ৬ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন। এখনও পর্যন্ত দুয়ারে সরকার প্রকল্পে সাফল্যের হার ৯৮ শতাংশ বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর রাজ্যে শুরু হয় এই পরিষেবা। তার পর গত দু’বছরে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এই দুয়ারে সরকার প্রকল্প। এর আগে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে ২৫টি পরিষেবা মিলত এখন পাওয়া যায় ২৭টি পরিষেবা। দুয়ারে সরকার প্রকল্পটি চলে রিয়েল টাইম আপডেটের ভিত্তিতে। অর্থাৎ যে কেউ চাইলে নির্দিষ্ট পোর্টাল থেকে দুয়ারে সকারের সমস্ত তথ্য পেতে পারবেন। ডিজিট্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ধরনের উদ্যোগ দেশের মধ্যে প্রথম।
আরও পড়ুন-সেটের প্রশ্ন এবার বাংলাতেও
এদিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, বাংলার এই কৃতিত্ব সারা দেশের কাছে একটি দৃষ্টান্তস্বরূপ। তবে শুধু সরকারেরই নয়, এই সাফল্যের কৃতিত্ব রাজ্য সরকারের আধিকারিকদেরও দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, নেতৃত্ব ভাল হলে সামগ্রিক কাজ ভাল হয়। সেই অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্ব দিয়ে কাজ করে দেখিয়েছেন রাজ্যে একের পর এক প্রকল্পের সাফল্য।