প্রতিবেদন: কোভিড নিয়ে এখনই কড়াকড়ির পথে না হাঁটলেও ফের সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে স্থায়ী কোভিড ওয়ার্ড তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যে ৩০৭ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার কোর্ভিভ্যাক্স নামে আরও একটি ভ্যাকসিন বাজারে নিয়ে আসার ছাড়পত্র দিয়েছে। প্রিকশনারি ডোজ হিসেবে এই ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হবে। নির্দিষ্ট অ্যাপে এই ভ্যাক্সিন পেতে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। ১৮ বছরের বয়সীরা এই ভ্যাক্সিন পাবে। এই টাকায় বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে স্থায়ী কোভিড ইউনিট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য সব রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বাংলার প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেখানে তিনি সম্ভাব্য কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের প্রস্তুতির বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরেছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে চন্দ্রিমা জানান, কোভিড নিয়ে রাজ্য সতর্কই আছে। তবে মানুষের মধ্যে যাতে অহেতুক আতঙ্ক না ছড়ায় সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এরাজ্যে এখনও কোভিড নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। একদিনে আক্রান্ত মাত্র পাঁচজন। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে রাজ্য সরকার মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন। রাজ্যে ২৮টি স্বাস্থ্য জেলা রয়েছে। ৩৫টি আরটিপিসিআর নমুনা পরীক্ষার ল্যাব রয়েছে। কল্যাণীতে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ব্যবস্থা আছে।
আরও পড়ুন-সিকিমে পথ দুর্ঘটনায় জওয়ানদের মৃত্যু, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আগামী ২৭ ডিসেম্বর একটি মহড়া করা হবে কেন্দ্রীয় ভাবে। এরাজ্যও তাতে অংশ নেবে। বৈঠকে চন্দ্রিমা এদেশে দেওয়া টিকাগুলি নতুন ভ্যারিয়েন্টের ওপর কতটা কার্যকর সে-বিষয়েও জানতে চান।
এদিকে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ১৬টি হাসপাতালে ১০০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও ৪টি হাসপাতালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড ওয়ার্ড এবং ১১৩টি হাসপাতালে ২০ শয্যা বিশিষ্ট ওয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বিস্ফোরণ, নিহত ১ , আহত একাধিক পুলিশকর্মী
রাজ্যের মোট ১৩৩টি হাসপাতালে স্থায়ী কোভিড ওয়ার্ড গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ধাপে ধাপে। এর মধ্যে ১৬টি হাসপাতালে ১০০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে। সেজন্য পূর্ব বর্ধমানের তিনটি, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি করে এবং আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একটি করে হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কোচবিহার, পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ ও পুরুলিয়া— এই চারটি জেলায় গড়ে তোলা হচ্ছে আরও চারটি কোভিড ওয়ার্ড যেখানে ৫০টি করে শয্যা থাকবে। সব জেলা মিলিয়ে আরও ১১৩টি ব্লক অথবা গ্রামীণ হাসপাতালে ২০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড তৈরি হবে।