প্রতিবেদন : ন্যক্কারজনক। বুধবার বিশ্বভারতীর আক্রমণ আরও নিম্নগামী। মুখ্যমন্ত্রীকে (CM Mamata Banerjee) যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে প্রেস বিবৃতিতে, তাতে আসল উদ্দেশ্য পরিষ্কার। যার মূলে রয়েছে রাজনীতি। রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের বিশ্বভারতীতে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বলছে তারা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলে। বোঝাই যায় বিশ্বভারতীকেও আখড়া বানাতে চাইছে বিজেপি। ফলে বিশ্বভারতীর এই নোংরা প্রেস বিবৃতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ এবং তীব্র সমালোচনা। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এই সব নিয়েই চিঠি দেবেন প্রধানমন্ত্রীকে। বুধবার বোলপুরের প্রশাসনিক জনসভায় দাঁড়িয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, বাংলার ও দেশের গর্বের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গৈরিকীকরণের অপচেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধেও তিনি যে রুখে দাঁড়াবেন, সেকথা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রী, আশ্রমিক, স্টাফ— কেউ ভাল নেই, প্রত্যেকেই কোনও-না-কোনও ভাবে অবহেলিত, অপমানিত।
আরও পড়ুন: ২ কোটি চাকরি, ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ, গেল কোথায়? শ্রমিক-কৃষকদের ভাঁড়ার সেই শূন্য
পদাধিকারবলে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বভারতীর চ্যান্সেলর। তাই তাঁকেই সবটা জানিয়ে চিঠি লিখবেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, আমাদের গর্বের বিশ্বভারতীর কী হাল করেছে! আশ্রমিকদের ভয় দেখাচ্ছে, সুপ্রিয় ঠাকুরের বাড়ির সামনে পাঁচিল তুলে দিচ্ছে, কর্মীদের কাউকে সাসপেন্ড করছে, কাউকে বরখাস্ত করছে। যা খুশি তাই করছে। সবাই জেলে থাকবে আর উনি বিশ্বভারতীর গৈরিকীকরণ করবেন তা হবে না। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, শুনে রাখুন, আমি ছেড়ে কথা বলার লোক নই। অন্যায় হলে ছেড়ে কথা বলব না। বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের পাশে আমি আছি।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাজকর্ম— আশ্রমিকদের ওপর অন্যায় অত্যাচার— দেশের গর্ব অমর্ত্য সেনের মতো শ্রদ্ধেয় নোবেলজয়ীকে অপমান, আচমকা যেখানে-সেখানে পাঁচিল তুলে দেওয়া— এরকম হাজারো ঘটনার ঘনঘটা এখন বোলপুরে। নতুন উপচার্য বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব নিয়ে আসার পরে পরিস্থিতি ব্যাপক জটিল হয়ে আছে। প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে থাকছে, যা কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে একেবারেই কাম্য নয়। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের বাড়ির জমি নিয়ে গত বেশ কিছুদিন যাবৎ উপাচার্য যে-ধরনের পত্রযুদ্ধ চালিয়েছেন ও যে-ধরনের কথাবার্তা বলেছেন এতে অমর্ত্য সেনকে অপমান করা শুধু নয় কবিগুরুর প্রতিষ্ঠিত গোটা বিশ্বে সমাদৃত এই প্রতিষ্ঠানের গরিমা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। এর বিরুদ্ধেই এদিন গর্জে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।