মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে রক্ষা পেলেন একাধিক শ্রমিক ,গাফিলতির জন্যই দুর্ঘটনা

Must read

সংবাদদাতা, হলদিয়া : ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে উঠে আসছে গাফিলতির অভিযোগ। অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে শ্রমিক মৃত্যুর সংখ্যা আড়াল করছে কতৃর্পক্ষ উঠছে এমন অভিযোগও। এমনই অভিযোগ এবং দাবি নিয়ে বুধবার শ্রমিকসংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখায়। তাঁরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে গেটে সিআইএসএফ আটকায় বলে অভিযোগ। শ্রমিক সংগঠনের দাবি, মৃতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা এবং একজনকে চাকরি দিতে হবে। পাশাপাশি জখমদের ১০ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। বুকে কালো ব্যাজ পড়ে আইওসি কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন৷ টুইটে তিনি নিহতদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানান। দুর্ঘটনায় জখমদের কলকাতায় আনার কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকার তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সমস্ত রকম সাহায্য করবে।” তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেন। তাঁর নির্দেশে বুধবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। কতৃর্পক্ষ এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আইওসির হাসপাতালে কোনও বার্ন ইউনিট ছিল না বলে অভিযোগ করেন তিনি। কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বার্ন ইউনিট তৈরির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মৃত শ্রমিক পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণের কথা বলেন। কর্তৃপক্ষকে মন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘ঘটনার দু’ঘণ্টা পর কেন উদ্ধার কাজের জন্য বাইরের লোকজনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে? কেন পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা ছিল না?’ মন্ত্রীর প্রশ্নের কোনওরকম জবাব দিতে পারেনি কতৃর্পক্ষ। মন্ত্রী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগ না নিলে আরও অনেক শ্রমিক প্রাণ হারাতেন। তাঁর উদ্যোগেই গ্রিন করডর করে অগ্নিদ্বগ্ধ শ্রমিকদের কলকাতায় আনা হয়েছে চিকিৎসার জন্য।’ তবে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর চাপে পড়ে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথা জানায় আইওসি । এ ছাড়া এজেন্সি দেবে আরও ৩ লক্ষ টাকা। কতৃর্পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী।

আরও পড়ুন : কলকাতা জয়ের উচ্ছ্বাস ত্রিপুরায়

এদিন আইএনটিটিইউসি শ্রমিক সংগঠনের এক সদস্য বলেন, ‘নিজেদের পিঠ বাঁচাতে মৃতের সংখ্যা আড়াল করছে কতৃর্পক্ষ। এতবড় দুর্ঘটনায় আমাদের অনুমান ২৬-২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে কিন্তু কতৃর্পক্ষ বলছে মাত্র তিনজন মৃত। আমরা আসল সংখ্যা জানতে চাই।’ মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার পর বুধবার বন্ধ রাখা হয় হলদিয়া ন্যাপথা ইউনিটের সমস্ত কাজ। ঘটনার তদন্তে দিল্লি থেকে পৌঁছায় উচ্চপর্যায়ের ফরেন্সিক দল। এদিনই হলদিয়া থেকে আইওসি-র আধিকারিকদের একটি দল পৌঁছান কলকাতার দফতরে। দুর্ঘটনার সমস্ত রিপোর্ট দেন তাঁরা। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে হলদিয়ার আইওসি রিফাইনারিতে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩ কর্মীর। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে গাফিলতির প্রমাণ। ওয়েল্ডিং করতে গিয়েই গ্যাস না থাকায় এই দুর্ঘটনা বলে অনুমান।

Latest article