প্রতিবেদন : মোদি জমানায় দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও দলিতদের উপর লাঞ্ছনার ভয়াবহ চিত্র ফাঁস হল কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যেই৷ চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো এই পরিসংখ্যান। ভারতে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাত্র চার বছরে ৩,৩৯৯টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। সংসদে এই তথ্য পেশ করেছেন মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। বিজেপি জমানায় দেশ যে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, এই পরিসংখ্যানেই তা প্রমাণিত।
আরও পড়ুন-দলিত–তথ্যই নেই!
কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এবং বিজেপি সাংসদ চন্দ্রপ্রকাশ যোশীর প্রশ্ন ছিল, সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেশে সংঘটিত দাঙ্গা এবং গণধোলাইয়ের রেকর্ড বজায় রেখেছে কি না। লিখিত জবাবে এই তথ্যপরিসংখ্যান পেশ করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্টকে ভিত্তি করে কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০২০ সালে ৮৫৭টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ৪৩৮, ২০১৮ সালে ৫১২, ২০১৭ সালে ৭২৩ এবং ২০১৬ সালে ৮৬৯। কেন্দ্রের দাবি, গণপিটুনির ঘটনায় আলাদা করে কোনও রেকর্ড রাখা হয় না। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বর্তমান ভারতে কি আদৌ সুরক্ষিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়?
আরও পড়ুন-দাম না কমলে বড় আন্দোলন, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের মহামিছিল মহানগরীতে
এদিকে, শুধু দাঙ্গাই নয়৷ বিভাজনের নীতি নিয়ে চলা মোদির ভারতে বিপন্ন অনগ্রসর ও দলিত শ্রেণির মানুষও৷ কেন্দ্রের পরিসংখ্যানেই উঠে এসেছে এই নির্মম বাস্তবতা। আর এক্ষেত্রে অগ্রগণ্য বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিই৷ দলিত নির্যাতনে রেকর্ড গড়ে প্রথম স্থানে বুলডোজার বাবার উত্তরপ্রদেশ। দ্বিতীয় স্থানে বুলডোজার মামার মধ্যপ্রদেশ। খট্টরের শাসনে থাকা হরিয়ানাও দলিতদের অত্যাচারে পিছিয়ে নেই। বিজেপিশাসিত এই রাজ্যটিতে তফসিলি জাতি ও উপজাতির মানুষের উপর অত্যাচারের মামলা গত তিন বছরে লাফ দিয়ে বেড়েছে। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে গোটা দেশে তফসিলি জাতি ও উপজাতির উপর হামলার নথিভুক্ত মামলার সংখ্যা ছিল ৪৯ হাজার ৬৪টি।
আরও পড়ুন-বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা
২০১৯ সালে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৫৩ হাজার ৫১৫। ২০২০ সালে আরও বেড়ে হয় ৫৮ হাজার ৫৩৮। সংসদে সামাজিক ন্যায়বিচার মন্ত্রকের তরফে এই তথ্য পেশ করা হয়েছে। তাদের হিসেবে, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০— এই তিন বছরে যোগীর রাজ্যে দলিতদের উপর নির্যাতনের মামলার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ৮৪১, ১১ হাজার ৮৬৫ এবং ১২ হাজার ৭১৭টি। দেশের ফার্স্ট বয়। সেকেন্ড বয় মধ্যপ্রদেশ। সেখানে শুধু ২০২০ সালেই দলিত নির্যাতনের মামলার সংখ্যা ৯ হাজার ৩০০টি। এই ব্যাপারে হরিয়ানাও কড়া টক্কর দিচ্ছে ইউপি-এমপিকে। বিরোধীদের প্রশ্ন, এর পরেও কি বলতে হবে, সবকা সাথ-সবকা বিকাশ?