প্রতিবেদন : বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সামগ্রীর মূল্যমান (Import price) কম দেখিয়ে আমদানি বিরাট অঙ্কের শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা জিনিসের সরকারি পরিসংখ্যানে এই তথ্য ধরা পড়ছে। আর এর মধ্যে সব থেকে বেশি গরমিল দেখা যাচ্ছে চিন থেকে আমদানি করা দ্রব্যের ক্ষেত্রে।
২০২৩-এর প্রথম ১০ মাসে চিনে প্রকাশিত ভারতে রফতানি সংক্রান্ত সরকারি পরিসংখ্যান এবং চিন থেকে আমদানির ভারতীয় রিপোর্টের মধ্যে পার্থক্য ১৫.৪৭ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১২.৭৫ বিলিয়ন ডলার। আমদানিকৃত পণ্যের আন্ডার-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বিদেশি রফতানিকারককে প্রকৃত মূল্যের কম আমদানি মূল্য (Import price) দেখানোর ফলে এই গরমিল তৈরি হয়।
চিনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-এর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে রফতানি করা হয়েছে ৯৭.৯৭ বিলিয়ন ডলারের সামগ্রী। অথচ ভারত সরকারের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, আলোচ্য সময়ে চিন থেকে আমদানির পরিমাণ ৮২.৫০ বিলিয়ন ডলার। একই গরমিল দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালেও। গত বছর একই সময়ে চিনের পরিসংখ্যানে রফতানি ছিল ৯৯.২৯ বিলিয়ন ডলারের। আর ভারতের তথ্য অনুযায়ী, আমদানি হয়েছিল ৮৬.৫৪ বিলিয়ন ডলারের। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর, ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) এবং কাস্টমস আমদানিকৃত সামগ্রীর অবমূল্যায়নের ৮৯৬টি ঘটনা শনাক্ত করেছে। এক্ষেত্রে তদন্ত এবং শুল্ক ও জরিমানা আদায়ের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও, আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের এই ধরনের কেসগুলি পরীক্ষা করার জন্য, ডিআরআই এবং কাস্টমস ফিল্ড অফিসগুলি ক্রমাগত নজরদারি বজায় রেখে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কিন্তু পরিস্থিতি একটুও বদলায়নি। বরং সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুল্ক ফাঁকি বেড়েই চলেছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এই জাতীয় পার্থক্য রয়েছে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈষম্যের মাত্রা এবং ব্যবধানের ক্রমবৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ। ২০২২ সালে ইনভয়েসিংয়ে কারচুপির ফলে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি যা ২০১৬ সালে ভারতে মোট কর রাজস্ব সংগ্রহের প্রায় ৫.৫ শতাংশের সমান।