ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad) -এর সরাসরি কোনও প্রভাব নেই পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal)। ঘূর্ণিঝড়ের কোনও সম্ভাবনা নেই বঙ্গে জানিয়ে দিলেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Sanjib Banerjee)। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্ক থাকা প্রয়োজন। উপকূলবর্তী জেলা দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং বর্ধমানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সমুদ্র এবং উপকূলের উপর ঝোড়ো হওয়া বইলেও তার গতিবেগ খুব বেশি থাকবে না। ৩৫ থেকে ৪৫ কিমি বেগে এই হাওয়া বইবে। সর্বোচ্চ তার গতিবেগ হতে পারে ৫০কিমি। এবং সেটাও রবিবার বিকেলের পর আর থাকবে না।
সৌদি আরবের (Saudi Arabia) নাম দেওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ (Cyclone Jawad)। অবশেষে এই বাংলার জন্য স্বস্তির খবর শোনালো আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে সর্বশেষ খবরে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডফলের কোনও সম্ভাবনা নেই জওয়াদের। তা ক্রমশ শক্তি হারাচ্ছে। প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে জওয়াদ। উত্তুরে শুষ্ক ও ঠান্ডা হাওয়ায় ‘সিস্টেম’ ভেঙে গিয়েছে। ফলে তা যত স্থলভাগের দিকে এগোবে তত দুর্বল হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ধীরে ধীরে। আগামিকাল দুপুরে পুরীতে (Puri) অবস্থান করবে জওয়াদ। তারপর এরাজ্যে ঢোকার আগেই তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। যার জেরে বৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন: জোর করে ভোট নয় ,প্রার্থীদের কড়া নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
তবে একটানা তিনদিন অকাল বৃষ্টির ফলে ফসলের উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। বৃষ্টির জন্য ধান, আলু, সরষে সহ সবজি চাষে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেকারণে ফসল কাটার নির্দেশিকা বহাল থাকছে। মৎস্যজীবীদের রবিবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
হঠাৎ কীভাবে শক্তি ক্ষয় হল ঘূর্ণিঝড়ের?
এ প্রসঙ্গে সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভারতে সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে যত ঘূর্ণিঝড় হয়, তারমধ্যে ৯০ শতাংশ জলভাগের নীচ দিয়ে তামিলনাড়ুর দিকে অগ্রসর হয়। আর ১০ শতাংশ জলভাগের উপরদিকের বাতাসের সঙ্গে উপর দিয়ে ‘কার্ভ’ করে সুন্দরবন (Sundarban) ও বাংলাদেশের (Bangladesh) দিকে এগোয়। এই সময়টাতেই উত্তুরে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস ‘সিস্টেমে’ ঢুকে পড়ায়, তা ‘জাওয়াদ’কে শক্তিশালী হতে বাধা দেয়। ফলে ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ দুর্বল হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যাবে। এরাজ্যে ঢোকার আগেই তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। সোমবার বিকেলের পর থেকে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে।
তবে শীত আবার কবে পড়বে তা এখনই স্পষ্ট করতে পারেনি হাওয়া অফিস। সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই বৃষ্টির পর পারদ কিছুটা নামলেও, সঙ্গে সঙ্গে যে জাঁকিয়ে শীত পড়বে তার কোনও মানে নেই। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণত নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে জানুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত শীতকাল বিরাজ করে। ফলে অকাল বৃষ্টির জন্য রাতারাতি প্রবল ঠান্ডা পড়বে তেমনটি এখনই বলা যাচ্ছে না।