শহরের পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত হয়েছিল সাংবাদিক সম্মেলন। আর তা ছিল রীতিমতো তারকাখচিত। উপলক্ষ স্টার জলসার শো ‘ডান্স ডান্স জুনিয়র: সিজন থ্রি’র ‘আগমনি’ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। হাজির ছিল প্রায় গোটা টিম। প্রত্যেকের উৎসাহ, উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রস্তুতির পরিশ্রম নয়, পর্দায় পৌঁছনোর আকুতিটাই প্রথম থেকে ধরা পড়ছিল প্রত্যেকের কথায়। চ্যানেলের তরফ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, এই শো বাংলার নাচের পরিধি বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। ট্যাগ লাইন ছিল, ‘বাংলা থেকে উঠে আসবে ভারতসেরা ডান্সার’। সেই লক্ষ্যেই দীর্ঘ সময় ধরে চলেছিল তুমুল পরিশ্রম। আজ সেই পরিশ্রমের সার্থকতা পাওয়ার দিন। প্রযোজক-পরিচালক শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় সেই ভাবনাকেই মান্যতা দিয়ে জানালেন, “অডিশন ও যতদূর শ্যুটিং হয়েছে তা দেখে আমরা নিশ্চিত, এবারের সিজন-এ ন্যাশনাল লেভেলের পারফর্মার আছে। যদিও এটা প্রতিবারই হয় যে, যারা এখানে চ্যাম্পিয়ন হয় বা প্রথম পাঁচের মধ্যে থাকে তাদের অনেকেই ন্যাশনাল চ্যানেলগুলোয় গিয়েও দুর্দান্ত পারফর্ম করে। এবার আমরা সে বিষয়ে আরও নিশ্চিত। আর একটু বাড়িয়েই বলছি তাই, শুধু বাংলা সেরা নয়, এই সিজন-এ আমরা ইন্ডিয়া’স নেক্সট ডান্সিং সেনসেশন’ খুঁজছি।”
আরও পড়ুন-শিল্পীদের চোখে নির্মলা
এই সিজন শুরু হচ্ছে ৫-১২ বছরের মোট একুশজন প্রতিযোগী নিয়ে যাদের খুঁজে বের করা হয়েছে দেশের নানা প্রান্ত থেকে। বাংলার পাশাপাশি দিল্লি, কানপুর, বিহার, ওড়িশা, অসম থেকেও প্রতিযোগীরা এসেছে। বয়স অল্প হলেও এরই মধ্যে এদের অনেকেই নাচের বিশেষ বিশেষ ধারায় পারদর্শী। প্রত্যেকে তাদের ট্যালেন্টের প্রমাণ দিয়ে তবেই এই জায়গায় পৌঁছেছে। প্রায় দেড় বছর যাবৎ অডিশন পর্ব চলেছে। শুধু পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন প্রান্ত নয়, বাংলার বাইরেও অডিশন নিতে গিয়েছে টিম ‘ডিডিজে’। সব মিলিয়ে প্রায় লাখ দেড়েক ছেলেমেয়ের মধ্যে থেকে এই একুশ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই মহাযজ্ঞের জন্য একসঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রযোজনার কাজ করছেন নিসপল সিং রানে ও শুভঙ্কর নিজে।
তবে এবারের শো-এর ফরম্যাটের বদল হয়েছে কিছু। মহাগুরুর চেয়ার এবার খালি, কারণ শেষ অবধি মিঠুন চক্রবর্তীকে পাওয়া যায়নি। অন্যতম জাজ দেব এ প্রসঙ্গে জানালেন, “ মিঠুনদাকে আমরা এই সিজন-এ পাইনি কারণ ডেট অ্যাডজাস্ট করা যায়নি কিছুতেই। উনি থাকা মানে একটা বাড়তি গ্ল্যামার নিঃসন্দেহে। কিন্তু সত্যি বলতে কী, আমরা এবার গ্ল্যামারের বাইরেও বাড়তি কিছু প্রেজেন্ট করার কথা ভেবেছি। আমাদের দেশে, আমাদের রাজ্যে কী অসাধারণ সব ডান্সার রয়েছে। সুযোগ পেলে তারা তাদের ট্যালেন্ট নিয়ে বহুদূর এগোতে পারবে। দায়িত্ব নিয়ে সে কাজটাই আমরা করছি এই শো-এর মাধ্যমে। গত সিজন-এ এসেই আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম, এবার তো কিছু পারফরম্যান্স দেখে আমরা জাজ’রা কথাই বলতে পারিনি কিছুক্ষণ। তাই আমি নিশ্চিত যে এটা একটা ভীষণ সাকসেসফুল সিজন হতে চলেছে।”
আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পাওনা প্রায় ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকা মেটানোর দাবি মুখ্যমন্ত্রীর
শুভঙ্কর জানালেন, “এবার ফরম্যাটটা সাজিয়েছি খেলার ধাঁচে। ক্যাপ্টেন, প্লেয়ার, কোচ সবাই আছে। যারা প্রতিযোগী, তারা প্লেয়ার আর ক্যাপ্টেন থাকছেন তিনজন, তৃণা সাহা, অভিষেক বসু ও দীপান্বিতা রক্ষিত। কোচ হচ্ছেন কোরিওগ্রাফাররা। বিচারক তিনজন, দেব, রুক্মিণী ও মনামি ঘোষ। এই প্রথম কোনও ডান্স রিয়েলিটি শো-এর বিচারকের আসনে দেখা যাবে রুক্মিণী মৈত্রকে। সঞ্চালনায় আগের সিজনের মতোই উদিতা এবং লাড্ডু। এছাড়া মজার এক ভূমিকায় থাকবেন রোহন ভট্টাচার্য। তবে ফরম্যাট, গ্র্যানজার এসবের চেয়েও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি যেদিকে তা হল, পারফরম্যান্স। প্রত্যেক প্রতিযোগী জানে তাকে ইউনিক কিছু করে দেখাতে হবে। জাজদের সামনে ‘ওয়ান লেভেল আপ’ পারফরম্যান্স করতে পারলে তবেই সে প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকতে পারবে।”
আরও পড়ুন-কমনওয়েলথ গেমস: প্যারা পাওয়ারলিফটিংয়ে সুধীরের ঐতিহাসিক সোনা জয়, অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীর
শুভঙ্করের দাবি, আজ অবধি বাংলা টেলিভিশনে যা যা ডান্স পারফরম্যান্স দর্শক দেখেছেন, এবার তার বাইরে আলাদা কিছু দেখতে পাবেন। মুভমেন্ট, স্টেপিং, এক্সপ্রেশন, ফর্ম, এর মধ্যে অন্তত তিনটি মাধ্যমে যেসব প্রতিযোগী তিন জাজের কাছ থেকে মিনিমাম তিনটে ‘ওয়াও’ আদায় করে নিতে পারবে, তারাই যাবে প্রতিযোগিতার মূল ধাপে।
শো লঞ্চ অনুষ্ঠান চমকপ্রদ ছিলই, চ্যানেল মুখপাত্রদের দাবি, নাচের মঞ্চেও শুরু থেকেই থাকবে নানা চমক। গ্র্যান্ড ওপেনিং দিয়ে যাত্রা শুরু আজ থেকে। দেখা যাবে প্রতি শনি ও রবি, সাড়ে ন’টায়। ‘ডান্স ডান্স জুনিয়র: সিজন থ্রি’ দর্শকদের ভালবাসা পাবেই, এ ব্যাপারে টিমের প্রত্যেকেই নিশ্চিত।