প্রতিবেদন: ফের রেলের বঞ্চনা বাংলাকে। রাজ্যকে না জানিয়ে একটি ট্রেনই তুলে দিল রেলমন্ত্রক। বলা ভালো নিঃশব্দেই। রাঢ বঙ্গের মানুষের যাতায়াতের জন্য এই ট্রেন চালু করেছিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরঙ্গানা রানি শিরোমনিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ট্রেনের নামকরণ করেছিলেন রানি শিরোমনি ফাস্ট প্যাসেঞ্জার। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এক হিন্দু রানির রুখে দাঁড়ানোর অকথিত কাহিনি আজও গবেষণার বিষয়। কিন্তু রানি শিরোমনির নামাঙ্কিত এই ট্রেন তুলে দিয়ে বাংলাকে বঞ্চনার পাশাপাশি ইতিহাসকেও অস্বীকার করলে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২০-র প্রথমদিকে করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই গোটা দেশে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন পরিষেবা। চালু ছিল কিছু স্পেশাল ট্রেন।
আরও পড়ুন-শ্রেয়ার ঘােষালের নামে প্রতারণা
কিন্তু অভিযোগ, তারপর ট্রেন পরিষেবা শুরু হলেও শিরোমনি ফাস্ট প্যাসেঞ্জার আর চালু করেনি রেল। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন হাওড়া-আদ্রা শাখায় এই ট্রেন চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চোয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী রানি শিরোমনিকে সম্মান জানানোর জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তে আহত হয়েছে স্থানীয় জঙ্গলমহলবাসীর আবেগ। তাই ক্ষুব্ধ তাঁরাও। পরাধীন ভারতে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের আদিম অধিবাসীদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাত ব্রিটিশরা। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাঁদের জমি।
আরও পড়ুন-বহরমপুরে রাতে কড়া নিরাপত্তা
ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে একাই রুখে দাঁড়ান স্থানীয় কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি। তাঁর নেতৃত্বেই জ্বলে উঠেছিল বিদ্রোহের আগুন। ইতিহাসে যা চোয়াড় বিদ্রোহ নামেই খ্যাত। পরে ব্রিটিশরা বন্দি করে রানিকে। ১৮১২ সালে বন্দি অবস্থাতেই রহস্যমৃত্যু হয় ইতিহাসের এই অগ্নিকন্যার। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর শিরোমনির স্মৃতি বিজড়িত কর্ণগড়কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় মা মাটি মানুষের সরকার। তবে খুব শীঘ্রই রেলের কাছে ট্রেনটি চালু করার দাবি জানাতে চলেছেন স্থানীয় মানুষ।