মুখ্যমন্ত্রীকে ন্যক্কারজনক আক্রমণ বিশ্বভারতীর, ক্ষুব্ধ আশ্রমিক-বুদ্ধিজীবীরা

Must read

প্রতিবেদন : ন্যক্কারজনক, নোংরা এবং বেনজির। রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের বিশ্বভারতীর উপাচার্যের প্রশ্রয়ে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসে বুধবার রাতে সে নিয়ে বাংলা জুড়ে নিন্দার ঝড়। দলমত নির্বিশেষে বাংলার বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, এটা কখনও বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati- Mamata Banerjee) বিজ্ঞপ্তি হতে পারে না। রবীন্দ্রনাথের নাম যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন বিজ্ঞপ্তি লজ্জার। রাতের ঘটনার পরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় ছাত্র বিক্ষোভ হয়েছে বিশ্বভারতীতে। অন্যদিকে আশ্রমিকরা বলেছেন, এই উপাচার্যর কাউকে সহ্য হয় না। বিশ্বভারতীর বারোটা বাজিয়ে তবে তিনি যাবেন। অন্যদিকে, সরাসরি এ-বিষয়ে মন্তব্য না করলেও মুখ্যমন্ত্রী (Visva-Bharati- Mamata Banerjee) বর্ধমানের সভা থেকে বলেন, এটা ভাষা? এরা বাংলা ভাষাটাও জানে না। কোর্টের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। তারপর জনতার আদালতেই বিচার হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট নোংরা আক্রমণের উত্তর নয়, মানুষের আদালতেই এদের বিচার হবে। কী বলছেন আশ্রমিক ও বুদ্ধিজীবীরা?

আরও পড়ুন-টাকা জোগাড় করতে রাতে নেমেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী

সুপ্রিয় ঠাকুর (প্রবীণ আশ্রমিক) : সকলের সমালোচনা করা এই উপাচার্যের কাজ। আমাদের সমস্ত প্রাক্তনীকে সরাসরি অভদ্র বলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে তা থেকেই বোঝা যায়, তাঁর রুচি কতটা নিম্নগামী।

সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় (প্রবীণ আশ্রমিক) : এটা কোনও প্রেস রিলিজ? অবশ্য উপাচার্যের ভাষাই এইরকম। রবীন্দ্রনাথের জোড়াসাঁকোর বাড়িতেও পাঁচিল আছে। পাঁচিল-প্রথা তুলে দিয়েই খোলামেলা আশ্রম করতে চেয়েছিলেন। ঠিক তার উল্টো এই উপাচার্য। উনি শান্তিনিকেতনের ইতিহাস জানেন না। উপাসনা গৃহে বসে অমর্ত্য সেনের সমালোচনা করেন। আসলে রবীন্দ্রনাথকে বোঝা অতো সহজ নয়। সভ্যতার সুক্ষতা ওনার নেই। প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনে চলার কথা বলে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি কোন পথে চলতে চান।

সবুজকলি সেন : পড়ুয়া অবস্থা থেকে শুরু করে সাংবিধানিক পদ— সব মিলিয়ে চল্লিশ বছর বিশ্বভারতীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আমার আমলে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। এই উপাচার্য কী চাইছেন? উনি কি রাজনীতির আখড়া তৈরি করতে চাইছেন?

পবিত্র সরকার : যে ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে বিশ্বভারতী তা রবীন্দ্র-চেতনাকে নস্যাৎ করে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যা আদৌ মানানসই নয়।

রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত : এটাকে এক ধরনের অন্তর্ঘাত বলে মনে হচ্ছে। এ নিয়ে এখুনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

কৌশিক সেন : এই ভাষার প্রয়োগ আমাদের সংস্কৃতিকে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সরব হওয়া উচিত। মনে হচ্ছে যেন ক্লাবের দাদাগিরি চলছে। অমর্ত্য সেন নোবল পেয়েছেন কিনা সে নিয়ে আলোচনা নিকৃষ্টতম।

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী : এসব তো ভাবাই যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এই ধরনের ভাষার প্রয়োগ অন্তত কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপাচার্যের তরফ থেকে আসা উচিত নয়।

Latest article