বেড়াতে কার না ভাল লাগে!
ভ্রমণ মানে অজানাকে জানা, অদেখাকে দেখা, যাকে কোনওদিন শুনিনি তাকে মন দিয়ে শোনা। ভ্রমণ মানে সমস্ত ক্লান্তি ভুলে ওই সুদূরের পথ হাসিমুখে চলা; আড়ালে থাকা কোনও রহস্যের মোড়ক খুলে ফেলা। ভ্রমণ মানে নির্ভেজাল আনন্দ। ভ্রমণ ছাড়া এই সুন্দর জীবনটা ঠিক উপভোগ করা যায় না। এখন এই ভ্রমণ যদি পৃথিবীর নদীনালা, গাছ-প্রকৃতি, আকাশ-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর পেরিয়ে ওই মহাশূন্যে পাড়ি দেয়, তাহলে কেমন হয়? তার উপর ডেস্টিনেশন যদি হয় মঙ্গল গ্রহ!
মঙ্গল গ্রহ নিয়ে সাধারণ মানুষের অসীম আগ্রহ সেই বহু যুগের; মঙ্গলের বুকে মানুষ পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পড়াশোনা এবং প্রচেষ্টা সেই ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয়েছে। ওই গ্রহটিকে পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য করে তোলা যায় কি না, সে-বিষয়ে আজও চলছে জোরকদমে বৈজ্ঞানিক গবেষণা।
গ্রহটিকে কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করার উদ্দেশ্যে প্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন ১০ অক্টোবর, ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে মহাশূন্যে স্পেসক্রাফ্ট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল; দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেদিন ওই স্পেসক্রাফ্টবাহী রকেটটির অন্তরীক্ষে উৎক্ষেপণই ব্যর্থ হয়।
সেদিন ছিল ১৫ জুলাই, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দ, নাসা প্রেরিত ‘মেরিন ৪’ নামের মহাকাশযানটি প্রথমবারের জন্য মঙ্গল গ্রহকে অত্যন্ত পাশ থেকে লক্ষ্য করেছিল। এরপর ২৭ নভেম্বর, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়নের পাঠানো ‘মার্স ২’ স্পেসক্রাফ্ট সাফল্যের সঙ্গে এই গ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং এর চারদিকে ৩৬২টি আবর্তন সম্পূর্ণ করে। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই নাসার পাঠানো ‘ভাইকিং ১’ ল্যান্ডার প্রথমবারের মতো মঙ্গলের বুক স্পর্শ করে এবং সেখানে ২২৪৫ সল কাটান। ‘সল’ হল মঙ্গল গ্রহের একদিন, পৃথিবীর একদিনের চেয়ে একটু বড়, এক সল অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। বলতে গেলে ওই ল্যান্ডারটি মঙ্গলের মাটিতে পৃথিবীর প্রায় ২৩০৩.৩৮ দিন কাটিয়েছিল, আর পৃথিবীকে দিয়েছিল অসংখ্য দুর্মূল্য চিত্র-তথ্য, যা বিজ্ঞানীদের গবেষণার পথ সহজ করেছে।
এরপর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে সূচনা হয় রোবোটিক্স এবং বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে নতুন যুগের, নাসার মঙ্গল-মিশন পাথফাইন্ডারের সাফল্যে। সেদিন সুন্দর ভাবে প্রথমবারের জন্য মঙ্গলের মাটিতে হেঁটেছিল ‘সোজার্নার’ রোভার, ঘুরে বেড়িয়ে ছিল প্রায় ৮৪ দিন, সংগ্রহ করেছিল বহুসংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্য। তবে ভারতবর্ষও এ-ব্যাপারে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই, মার্স অর্বিটার মিশনের আওতায় ইসরো ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৫ নভেম্বর ‘মঙ্গলায়ন’কে ওই নিসর্গে উৎক্ষেপণ করে; ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল, ২০২২ অবধি এই যন্ত্রটি মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে ঘুরে বেড়িয়েছে। বৈজ্ঞানিক কসরত নিরন্তর জারি রয়েছে, পূর্বে প্রাপ্ত তথ্য ও অনুসন্ধানের ভিত্তিতে চলছে পৃথিবী জুড়ে মঙ্গল-রহস্য উন্মোচন যজ্ঞ!
আরও পড়ুন-আলাদিনদের থামানোর পরীক্ষা মোহনবাগানের
মঙ্গল গ্রহের আকর্ষণ
সূর্য থেকে চতুর্থ, পৃথিবীর চেয়ে ছোট, সৌরজগতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম গ্রহ মঙ্গল। আজ থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে সূর্যের চারদিকে আবর্তনশীল গ্যাস ও ধূলিকণার পুরু চাকতির থেকে বাইরের দিকে এলোমেলোভাবে বেরিয়ে যাওয়া পদার্থের থেকেই নাকি এই গ্রহের উৎপত্তি। এই গ্রহ সৃষ্টির পরপরই অভ্যন্তরীণ সৌরজগতে, যেখানে সাধারণত বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের বসবাস সেখানে উপস্থিত গ্রহাণু এবং ধূমকেতুর মধ্যে বীভৎস সংঘর্ষ হয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে মঙ্গল গ্রহের উপর। এই গ্রহে উপস্থিত খাল, খাদ, গিরিখাত, উপত্যকার গঠন ওই মহাজাগতিক ঝঞ্ঝার সাক্ষ্য দেয়। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে, এইসব প্রণালী, গিরিখাত নাকি জলের স্রোতে ভূমিক্ষয়ের দরুণ সৃষ্টি হয়েছে। তাই মনে করা হয়, মঙ্গল গ্রহে হয়তো রয়েছে গভীর সমুদ্র কিংবা প্রাণের অস্তিত্ব!
এই গ্রহের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্তের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রার বৈসাদৃশ্য, যা বিভিন্ন স্থানের আলো এবং অন্ধকারকে সুষ্পষ্টভাবে চিহ্নিত করে, তাই পৃথিবীর বুক থেকে দূরবিন দিয়ে খুব সহজেই এই গ্রহটিকে দেখা যায়। আয়রন অক্সাইডের কমলা-লাল রঙের ধুলো দিয়ে মোড়ানো এই গ্রহটিকে বিজ্ঞানীরা মিষ্টি করে নাম দিয়েছেন ‘লাল গ্রহ’। সমগ্র মঙ্গল-পৃষ্ঠ জুড়ে সারাবছর পৃথিবীর মতোই গ্রীষ্ম-শীতের তফাতটা পরিষ্কার, প্রায় –৭৮.৫° থেকে ৫.৭° সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রার হেরফের হয়ে থাকে। সৌরজগতে এর অবস্থানের জন্য এখানে পৃথিবীর চেয়েও বেশি পরিমাণে ক্লোরিন, ফসফরাস ও সালফারের মতো অনেক রাসায়নিক পদার্থ উপস্থিত। মাঝেমধ্যে এই গ্রহের ভিতরে ও বাইরে ভূমিকম্পের কাঁপুনি অনুভব করা যায়, যাকে বলে মার্সক্যুয়াক! উপস্থিত ধূলিঝড় ‘মার্সিয়ান ডাস্ট ডেভিল’ ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে। পৃষ্ঠতলের প্রায় ৪০ ভাগ জুড়ে রয়েছে বোরিয়ালিস বেসিন অঞ্চল, একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব প্রায় ৫৩০০ মাইল। ফোবোস ও দেইমোস নামের দুটি উপগ্রহ সহ এই গ্রহটির ভৌগোলিক পরিচিতি গ্রহটিকে বিজ্ঞানী তথা সাধারণ মানুষের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। রয়েছে নানা বিচিত্র স্থান ও গঠন।
মনকাড়া মেরু অঞ্চল
মঙ্গল গ্রহের বেশকিছু ভৌগোলিক কাঠামো তার আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যের জন্য ভবিষ্যৎ অন্তরীক্ষ ভ্রমণকারীদের জন্য পছন্দসই জায়গা হয়ে উঠেছে। তার মধ্যে অন্যতম হল মঙ্গলের দুই মেরু অঞ্চল এবং তাদের বৈপরীত্য। জল, বরফ এবং ধূলিকণার সমন্বয়ে মোটামুটিভাবে আলাদা বৈচিত্র্যের পুরু বরফের চাদরে মোড়া এই গ্রহের দক্ষিণ এবং উত্তর মেরু; বৈজ্ঞানিক মহলে এরা যথাক্রমে প্ল্যানাম অস্ট্রাল এবং প্ল্যানাম বোরিয়াম নামে পরিচিত। উপস্থিত কার্বন ডাই অক্সাইড শীতের সময় জমে গিয়ে শুষ্ক বরফে রূপান্তরিত হয়, আবার গ্রীষ্মের সময় বাষ্পীভূত হয়ে উপরে উঠে যায়। তবে এই প্রক্রিয়ায় সবসময়ই দুই মেরুতে বরফের টুপি পরানো থাকে, দক্ষিণ মেরুতে প্রায় ৮ মিটার পুরু বরফের আস্তরণ সবসময় দেখতে পাওয়া যায়। এরফলে এখানে সৃষ্ট বাতাস গ্রহের জলবায়ুকে খুবই প্রভাবিত করে। তবে বরফে ঢাকা মঙ্গল-মেরুর সৌন্দর্য নজরকাড়া!
দক্ষিণ গোলার্ধের হেল ক্রেটার
মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ প্রান্তে উপস্থিত, গরমকালে সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান খাড়া জ্বালামুখীর ঢালু গা বেয়ে নেমে আসা রেখাগুলো অত্যন্ত মনোগ্রাহী। জ্যোতির্বিদ জর্জ এলারি হেল এগুলো আবিষ্কার করেন। অদ্ভুত দেখতে এই উতরাইয়ের নিবিড় গবেষণায়, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে নাসা জানিয়েছে, ওই রেখাগুলো খুব সম্ভবত বায়ুমণ্ডলের জল কিংবা শুষ্ক বালির প্রবাহে সৃষ্টি হয়েছে। ওদের প্রবাহপথে সিক্ত লবণের নমুনা পাওয়া গেছে, যা ওই গ্রহে জল এবং জীবনের অস্তিত্বের ঈঙ্গিত দেয়।
আরও পড়ুন-অরাজকতা বাংলাদেশে, বন্ধ হল বাস-পরিবহণ
অলিম্পাস মন্স
মঙ্গল গ্রহের অন্যতম আকর্ষণ এই অলিম্পাস মন্স, সৌরজগতের সবচেয়ে বড় ঢালু আকৃতির আগ্নেয়গিরি। আগ্নেয়গিরি-প্রবণ এলাকা ‘থার্সিসে’র অন্তর্ভুক্ত এই আগ্নেয়গিরিটির উচ্চতা প্রায় ২৫ কিলোমিটার, মাউন্ট এভারেস্টের প্রায় তিনগুণ। নাসার মতে, এর আকার অ্যারিজোনার সমান। মৌনা লোয়ার প্রায় ১০০ গুণ এই আগ্নেয়গিরিটি সম্ভাব্য কয়েক মিলিয়ন বছরের পুরনো, তাই বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, হয়তো এটি এখন সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে, ভবিষ্যতে উদ্গীরণ হতেও পারে। এর উপরে রয়েছে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার চওড়া সমতল অংশ যা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়!
থার্সিস ভলক্যানিক রিজিয়ন
অলিম্পাস মনসের গা বেয়ে ওঠার সময় চোখে পড়ে থার্সিস অঞ্চলের অন্য আকর্ষণীয় আগ্নেয়গিরিগুলো। চার হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকা জুড়ে রয়েছে ১২টি দৈত্যাকার আগ্নেয়গিরি, যার প্রত্যেকটি পৃথিবীতে উপস্থিত আগ্নেয়গিরিগুলোর চেয়ে বড়। রয়েছে অ্যাক্রিয়াস মন্স, প্যাভোনিস মন্স, আর্সিয়া মন্স, এবং থার্সিস থোলাসের মতো প্রায় ২৫ কিলোমিটার উঁচু আগ্নেয়গিরি। প্রায় ২০০ কোটি বছরের পুরনো এই প্রাকৃতিক গঠনগুলো মঙ্গল গ্রহের দুর্বল গ্র্যাভিটির জন্যই হয়তো এত উঁচু। যাইহোক এই প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শনার্থীদের মন কাড়বে এ-কথা বলাই যায়।
ভূতুড়ে বালিয়াড়ি
গোলকধাঁধার মতো দেখতে বৃহৎ এবং জটিল গিরিখাত ও উপত্যকা অঞ্চল ‘নকটিস ল্যাবিরিন্থস’ এবং ৭ কিলোমিটার গভীর ও ২৩০০ কিলোমিটার ব্যাস বিশিষ্ট হেলাস অববাহিকা অঞ্চলে উপস্থিত ভূতুড়ে বালিয়াড়ি বা ঘোস্ট ডিউনস মঙ্গল গ্রহের অন্যতম আকর্ষণ। প্রায় কয়েক দশক উঁচু এই বালির ঢিবিগুলোর অস্তিত্ব ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় উঠে এসেছে, এগুলো এখন লাভা কিংবা জলের বন্যায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। তবে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, এদের অভ্যন্তরে মাইক্রোবস-এর থাকার সম্ভাবনা প্রবল, যা প্রাণের অস্তিত্বকে স্বীকার করে।
এডিস মন্স
২০১২ খ্রিস্টাব্দে কিউরিওসিটি রোভার মঙ্গল গ্রহের সবচেয়ে উঁচু স্থানের মধ্যে অন্যতম মাউন্ট সার্পের উপর পা রাখে, ওই স্থানের নামই এডিস মন্স। উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সাহায্যে নাসার রোভারটি ওই স্থানে উপস্থিত প্রায় ৩৫০ কোটি বছরের পুরনো একটি পাথরের মধ্যে কোনওপ্রকার জীব-যৌগের জটিল অণুর সন্ধান পায়, সঙ্গে খোঁজ মেলে ঋতুকালীন মিথেন এবং প্রাচীন জলের। এডিস মন্স-এ এইসবের উপস্থিতি এবং তাদের উৎস-বৃত্তান্ত পরিষ্কারভাবে মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা দাবি করে। এ-ব্যাপারে দিন দিন মানুষের উৎসাহ বেড়েই চলেছে।
আরও পড়ুন-বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে নিয়ে সমাধান খুঁজলেন মুখ্যসচিব
মেডুসা ফোসা
মঙ্গল গ্রহের অন্যতম উদ্ভট জায়গাগুলোর মধ্যে একটি, থার্সিস এবং ইলিসিয়াম জ্বালামুখের মাঝখানে, ছাই এবং নুড়ি দিয়ে তৈরি, আমেরিকার প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগের সমান আকৃতির, পাথুরে স্থাপত্যের নিদর্শনে ভরা এই মেডুসা ফোসা গ্রহীয় গঠন। মনে করা হয় এখানেই নাকি ‘ইউএফও ক্রাশ’ ঘটেছিল। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন বছরের পুরনো এই বিরল প্রাকৃতিক গঠন যা কিনা গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমণ করে এবং ওই গ্রহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, বিজ্ঞানীদের কাছে এর জন্মবৃত্তান্ত আজও রহস্যময়ী!
মঙ্গলের গ্রান্ড ক্যানিয়ন
মঙ্গল গ্রহের অনন্য বৈজ্ঞানিক খোঁজ, ভ্যালেস মেরিনারিস, মঙ্গল গ্রহের একটি বিশাল ক্যানিয়ন সিস্টেম। এটি সৌরজগতের বৃহত্তম ক্যানিয়ন, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার, প্রস্থ প্রায় ৬০০ কিলোমিটার এবং গভীরতা প্রায় ৭ কিলোমিটার। এই ক্যানিয়নটি মঙ্গলের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস ও প্লেট টেকটোনিক ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটি প্রাচীন ভূপৃষ্ঠীয় ফাটলের কারণে সৃষ্টি হয়েছিল। কোনও সন্দেহই নেই, মঙ্গলের এই অনন্য ভূ-আকৃতির অংশ পর্যটকদের মুগ্ধ করবে।
ফিউচার প্ল্যানিং
মঙ্গলের যা প্রাকৃতিক পরিবেশ, তাতে ওই গ্রহে বেড়াতে যেতে পর্যটকদের হয়তো কিছু মহাজাগতিক ঝক্কি পোহাতে হবে ঠিকই, তবে বেড়ানোর আনন্দ কিন্তু ভরপুর মিটবে। প্ল্যানিং জারি আছে, যখন আমরা প্রথম লাল গ্রহে উপনিবেশ স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করব, তার পর থেকেই মঙ্গল-যাত্রা শুরু হবে। পৃথিবী জুড়ে বিজ্ঞানীরা সেই চেষ্টায় লিপ্ত। ভারতবর্ষও দ্বিতীয় মঙ্গল অভিযানের প্রচেষ্টায় রত, আগামী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে মিশন এস্কাপেড, ২০২৬ খ্রিস্টাব্দে মিশন মার্সিয়ান মুন এক্সপ্লোরেশনের প্রস্তুতিও চলছে জোরকদমে। নাসার বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহ এবং ব্রহ্মাণ্ডের অন্য জায়গায় প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে ক্রু হেল্থ অ্যান্ড পারফরম্যান্স এক্সপ্লোরেশন অ্যানালগ মিশনের আওতায় আগামী ২০৩০ খ্রিস্টাব্দে মঙ্গলের বুকে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। আশা করি আগামীতে আমরা আরও গভীরভাবে মঙ্গলকে আবিষ্কার করব।