নয়াদিল্লি: বিপন্ন মণিপুরের পাশে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। সোমবার দিনভর সংসদে এই বার্তাই প্রকাশ পেল বিরোধী সদস্যদের পদক্ষেপে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে মণিপুর নিয়ে রিপোর্ট পেশ করে সদ্য সেখান থেকে ফিরে আসা প্রতিনিধি দল। তৃণমূলের সুস্মিতা দেব, কংগ্রেসের গৌরব গগৈ -সহ সফরকারী অন্য প্রতিনিধিরা ছিলেন। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পরিস্থিতি আগের থেকে আরও খারাপ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সুস্মিতা দেব। তিনি জানান, মণিপুরের মেইতি এবং কুকি উভয় সম্প্রদায়ের প্রতিই আমাদের সংবেদনশীল হতে হবে। এমন কোনও শব্দচয়ন করা যাবে না যাতে কোনও পক্ষের ক্ষতি হয় বা তাদের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। সাংসদ গৌরব গগৈ এবং অধীর চৌধুরী জানান, বিষয়টি সম্পর্কে সংবেদনশীল হতে হবে।
আরও পড়ুন-অনাস্থা এড়িয়ে বিল পাশ কেন?
অন্যদিন সকাল ১০টা থেকে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের ঘরে বৈঠক হলেও সোমবার তা হয়নি। এদিন সংসদ ভবনের মিটিংরুমে বৈঠক হয় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধীও। রাজ্যসভায় মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য ২৬৭ ধারায় অর্থাৎ সমস্ত কাজ বন্ধ রেখে আলোচনার দাবিতে মোট ৬৫টি নোটিশ জমা হয়। তার মধ্যে তৃণমূলের তরফে দেওয়া হয় ১৩টি নোটিশ। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়, মণিপুর নিয়ে ১৭৬ ধারা অর্থাৎ স্বল্প সময়ের আলোচনা হবে। এর প্রতিবাদে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং অসংসদীয় সিদ্ধান্ত। সোমবার ছিল বাদল অধিবেশনের নবম দিন।
আরও পড়ুন-মস্কোয় ড্রোন হামলা নিয়ে ইউক্রেনকে কড়া বার্তা
এদিনও সভা শুরু হতেই তুমুল হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। একাধিকবার সভা স্থগিত করে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়। দুপুর দুটোর সময় ইন্ডিয়া দলগুলির নিজেদের মধ্যে বৈঠক হয় রাজ্যসভার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। সেই বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে আসতে হবে, তিনি জবাবি ভাষণ না দিতেই পারেন তবে তাঁকে লিখিত বিবৃতি জমা দিতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন। তারপর দুপুর আড়াইটে নাগাদ ইন্ডিয়া জোটের সংসদীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জগদীপ ধনকড়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেও কেন স্বল্প সময়ের আলোচনা করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংসদরা।
আরও পড়ুন-আজব শখ বটে! মানুষ থেকে কুকুর
বিস্তারিত আলোচনার এত নোটিশ আসা সত্ত্বেও কোন যুক্তিতে সেগুলি সব খারিজ করা হল, তা জনতে চান তাঁরা। মণিপুরের আলোচনা কীভাবে হবে, তা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত সরকার এবং ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে টানাপোড়েন চলে। ইন্ডিয়ার দাবি, সরকার যেভাবে আলোচনা চাইছে, তাতে ১ ঘণ্টার বেশি হবে না। ফলে সেই সময়ের মধ্যে বিরোধীদের বলা সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীকে এসে বিবৃতি দিতে হবে। সুস্মিতা দেবের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের ইস্যু থেকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মন্ত্রিসভা।