প্রতিবেদন : তাঁর অপরাধ ছিল চলন্ত বাস থামিয়ে দুই মুসলিম যাত্রীকে নামাজ পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তাই কোনও কারণ না দেখিয়েই উত্তরপ্রদেশ স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের এক বাস কন্ডাক্টরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ করে চাকরি হারিয়ে প্রবল আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়তে হয় তাঁকে। এরপর মানসিক অবসাদে চলে যান। সোমবার ভোররাতে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন সেই বাস কন্ডাক্টর মোহিত যাদব। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কট্টর হিন্দুত্ববাদী নীতিকে দুষছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন-চাঁদের বুকে পা রেখে, সূর্যের দিকে চোখ
ঘটনার সূত্রপাত ৩ জুন। ইউপিএসআরটিসি দিল্লিগামী একটি বাস যাত্রীদের সুবিধার্থে বেরিলিতে কিছুক্ষণের জন্য থামিয়েছিলেন মোহিত এবং বাস চালক কে পি সিং। দু’দিন পর সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপরই দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। ইউপিএসআরটিসি কর্মচারী কে পি সিংকে সাসপেন্ড করা হয় এবং ১০ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক কর্মী মোহিতকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। মোহিতের পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, চাকরি হারিয়ে মানসিক এবং আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মোহিত। সোমবার ভোররাতে মৈনপুরী জেলায় তাঁকে তাঁর নিজ গ্রামের কাছে রেললাইনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবারের দাবি, ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মোহিত।
আরও পড়ুন-পায়ে পায়ে পাহাড়ে
মোহিত যাদবের ভাই টিঙ্কু যাদব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘মোহিতের মনে হয়েছিল যে তাকে বিনা কারণে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু যাত্রী সেদিন বাথরুমে যাওয়ার জন্য বাস থামানোর অনুরোধ করেন। সেইমতো বাস থামাতে দুই যাত্রী বাস থেকে নেমে নামাজ পড়া শুরু করেন। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা মোহিত বা বাস ড্রাইভারের কাছ থেকে সেই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যাও চায়নি। চাকরি হারিয়ে মানসিক অবসাদে চলে গিয়েছিল মোহিত।” মোহিতের স্ত্রী রিঙ্কি বলেন, ‘‘আমার স্বামীর বেতনের উপরেই আমাদের সংসার চলত। পরিবারের বড় হওয়ায় তাঁর কাঁধেই ছিল সব দায়িত্ব। চাকরি হারিয়ে হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি।”