নয়াদিল্লি : জলের বদলে যেন বিষপান করছি আমরা। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে মেনে নিল যে দেশে জলের মান ভয়াবহ রকমের খারাপ হচ্ছে। রাজ্যসভায় সরকার যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তা কেবল হতবাকই করছে না, জনস্বাস্থ্যের নিরিখে ভয়ঙ্কর ও চরম উদ্বেগের। এই পরিসংখ্যান অনুসারে, আমরা এখনও পর্যন্ত যে জল পান করছি তা ‘বিষাক্ত’। দেশের প্রায় সব রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে বিষাক্ত ধাতু পাওয়া গিয়েছে। জলশক্তি মন্ত্রকের একটি নথি অনুসারে, দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ মাটি থেকে জল পায়। তাই ভূগর্ভস্থ জলে বিপজ্জনক ধাতুর পরিমাণ নির্ধারিত মান ছাড়িয়ে গেলে জল কার্যত ‘বিষ’ হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন-দেশের ২৫টি হাইকোর্টে ৫৯ লক্ষের বেশি মামলা এখন বিচারাধীন
কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির আবাসিক এলাকার সংখ্যাও দিয়েছে যেখানে পানীয় জলের উৎসগুলি দূষিত হয়েছে। এই হিসাবে ফ্লোরাইড দ্বারা ৬৭১টি এলাকা, ৮১৪টি এলাকা আর্সেনিক দ্বারা, ১৪,০৭৯টি এলাকা লোহা দ্বারা, ৯,৯৩০টি লবণাক্ত এলাকা, ৫১৭টি এলাকা নাইট্রেট দ্বারা এবং ১১১টি এলাকার জল ভারী ধাতু দ্বারা প্রভাবিত। শহরগুলির তুলনায় গ্রামগুলিতে এই সমস্যা আরও গুরুতর। কারণ ভারতের অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা গ্রামে বাস করে। এখানকার পানীয় জলের প্রধান উৎস হল হাতপাম্প, কুয়ো, নদী বা পুকুর। এখানে জল সরাসরি মাটি থেকে আসে। এছাড়া গ্রামে সাধারণত এই জল পরিষ্কার করার কোনও উপায় নেই। তাই বিষাক্ত জল পান করতে বাধ্য হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ।
আরও পড়ুন-বৈদেশিক ঋণ নিয়ে
কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৫টি রাজ্যের ২০৯টি জেলার কিছু অংশে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের পরিমাণ প্রতি লিটারে ০.০১ মিলিগ্রামের বেশি। ২৯টি রাজ্যের ৪৯১টি জেলার কিছু অংশে ভূগর্ভস্থ জলে লোহার পরিমাণ প্রতি লিটারে ১ মিলিগ্রামের বেশি। ১১টি রাজ্যের ২৯টি জেলার কিছু অংশে ভূগর্ভস্থ জলে ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ প্রতি লিটারে ০.০০৩ মিলিগ্রামের বেশি পাওয়া গিয়েছে। ১৬টি রাজ্যের ৬২টি জেলার কিছু অংশে ভূগর্ভস্থ জলে ক্রোমিয়ামের পরিমাণ প্রতি লিটারে ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি।১৮টি রাজ্যের ১৫২টি জেলা রয়েছে যেখানে ভূগর্ভস্থ জলে প্রতি লিটারে ০.০৩ মিলিগ্রামের বেশি ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে অবস্থা গুরুতর ও উদ্বেগজনক।