নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি: ৯৬ বছর পর নতুন ইতিহাস রচনা করতে চলেছে দিল্লির পাহাড়গঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন। প্রতিষ্ঠার এত বছর পর এই প্রথম দিল্লি রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপুজো (Durga Puja) হবে পূর্ণাঙ্গ প্রতিমায়। এতদিন সেখানে ঘটে পুজো হত এবং শুধুমাত্র অষ্টমীর দিনে সংক্ষিপ্তভাবে দুর্গার ছবিতে পুজো করা হত। সেই প্রথা ভেঙে এবারের দুর্গাপুজোয় মৃন্ময়ী প্রতিমার আবাহন করে নতুন পথচলা শুরু করতে চলেছে দিল্লির রামকৃষ্ণ মিশন। জন্মাষ্টমীতেই দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো পুজো অনুষ্ঠিত হয়েছে এখানে। প্রথম প্রতিমা পুজোর আনন্দে রামকৃষ্ণ মিশনে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মণ্ডপ বাঁধা এবং প্রতিমা তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে হচ্ছে। চূড়ান্ত ব্যস্ততা আশ্রমের মহারাজদের মধ্যেও। দিল্লি রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক সর্বলোকানন্দ মহারাজ জানান, ভক্তদের অনুরোধ, উৎসাহ এবং ইচ্ছাতেই এবার মূর্তিপুজোর সূচনা হচ্ছে দিল্লির পাহাড়গঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে।
আরও পড়ুন- তন্ত্রমতে দশ পুুরুষের পুজো আমতার গাজিপুরে
মিশনের এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত ভক্তরা সকলেই নিজেদের সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তৈরি করা হচ্ছে দেবীর বেদি। মিশনের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে বাঁ দিকে তৈরি করা হচ্ছে বেলুড়মঠের ধাঁচে এক চালার মৃন্ময়ী মূর্তি । বসিরহাটের শিকরা থেকে আসছেন পুজোর পুরোহিত। উল্লেখ্য, এই শিকরা গ্রামই স্বামী ব্রহ্মানন্দের জন্মস্থান। এছাড়াও বীরভূম থেকে আসছেন ঢাকিরা। পুজোর (Durga Puja) আনুষঙ্গিক অন্যান্য জিনিসপত্র আসছে কলকাতা থেকে। পুজোর চারদিন সবার জন্য ভোগ ও প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা থাকছে। মিশনের সম্পাদক স্বামী সর্বলোকানন্দ মহারাজ জানান, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মোট ১৯টি শাখায় বর্তমানে দুর্গোৎসব হয়। দিল্লির রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে আমাদের অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল দুর্গাপুজো করার। সম্প্রতি আমি রামকৃষ্ণ মিশনের এই শাখার সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সেই সিদ্ধান্ত ত্বরান্বিত করতে পেরেছি। মহারাজ জানান, প্রতিমা পুজো শুরু করার সিদ্ধান্তের আগে বেলুড়মঠের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। খুব দ্রুত সেখান থেকে অনুমতি মেলে। মিশনের বক্তব্য, বাহ্যিক আড়ম্বর নয়। সকলের মধ্যে শুভশক্তির আবাহন করাই এখানকার পুজোর মাহাত্ম্য। স্বামী সর্বলোকানন্দ মহারাজের কথায়, দুর্গাপুজো রাজসিক পুজো। এই পুজোয় ঢাক, ঢোল, ভোগ খাওয়ানো, ধুমধামের পাশাপাশি ভক্তি-শ্রদ্ধা সহকারে দেবীর অর্চনা করা হয়। মহারাজ বলেন, সমাজে আসুরিক প্রবৃত্তি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়ছে। সেই আসুরিক শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির আরাধনাই হবে মৃন্ময়ী মায়ের পুজোর মূল উদ্দেশ্য।