ভোট দিতে এসে কেউ তুললেন সেলফি, কেউ আড্ডায়

লবিতে ততক্ষণে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। হইহই করে এসে পড়লেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বিধায়ক দেবাশিস কুমার ও মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।

Must read

প্রতিবেদন : যাঁদের ভোট দিতে আমজনতা লাইনে দাঁড়ায় তারাই সোমবার দাঁড়ালেন ভোটের লাইনে। রাজ্য বিধানসভায় সকল দশটা থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ভোট পর্ব শুরু হয়েছে। দশটার কিছু পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ-বিধায়করা একে একে হাজির হন বিধানসভা চত্বরে। লাইন ততক্ষণে অনেকটাই লম্বা। বিধানসভার লবি ছাড়িয়ে লাইন চলে এসেছে গাড়ি বারান্দায়। তখন লাইনে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, ইন্দ্রনীল সেন, সাংসদ মহুয়া মৈত্ররা। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েই চলছে তোফা আড্ডা। এরপর এসে যোগ দিলেন বিধায়ক জুন মালিয়া, অদিতি মুন্সি। জমে গেল আড্ডা। গাড়ি বারান্দার অন্যদিকে তখন একান্ত আলাপচারিতায় মগ্ন দুই সাংসদ গোয়ার লুই জিনহো ফালেরিও ও অসমের সুস্মিতা দেব।

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাট নিয়ে রিপোর্ট তলব

একটু বেলা বাড়তেই এসে ঢুকলেন সাংসদ শতাব্দী রায়। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা চিরঞ্জিতের সঙ্গে শুরু হয়ে গেল তুমুল আড্ডা। শতাব্দী বললেন, আমার আর চিরঞ্জিতদার এরকমই হয়। আমরা যেখানে আড্ডা শেষ করি, আবার যখন দেখা হয় সেখান থেকেই শুরু করি। আজও তাই হচ্ছে। এরই মধ্যে হাজির বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। আচমকাই রাজ চিরঞ্জিত, শতাব্দী, জুনকে নিয়ে সেলফি তুলতে লাগলেন লাইনে দাঁড়িয়ে। এক্কেবারে তারকা ফ্রেম। বিধানসভার লবির এদিকে যখন সেলফি চলছে অন্যদিকে তখন বীরবাহা হাঁসদা, জোৎস্না মান্ডি আদিবাসী ভাষায় শুরু করেছেন গান। মুগ্ধতার সঙ্গে যা শুনছেন লাভলি মৈত্র ও অসীমা পাত্র।

আরও পড়ুন-জুনে জিএসটি বকেয়া ১৬৩৭ কোটি, কেন্দ্রের কাছে বাংলার প্রাপ্য

এরই মধ্যে বিধানসভায় এসে পড়লেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় ঢুকেই তিনি চলে গেলেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে। সেখানে তখন রয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায়, সৌগত রায়, ডাঃ শান্তনু সেন সহ আরও অনেকে। চা-সহযোগে জমিয়ে চলে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে চোখ রাখছেন টিভির পর্দায়। বিধানসভা ছাড়ার আগে তিনি একবার সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে। সঙ্গে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-সংসদে এবার একগুচ্ছ বিল

লবিতে ততক্ষণে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। হইহই করে এসে পড়লেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বিধায়ক দেবাশিস কুমার ও মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। লাইনে দাঁড়িয়েই শুরু হয়ে গেল একে অপরের সঙ্গে খুনসুঁটি। একের পর এক বিধায়ক এসেই চলেছেন। দুপুর একটা নাগাদ ঢুকলেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুক্ষণ পরে বিধানসভায় তাঁর ঘরে মুখ্যমন্ত্রী ডেকে নিলেন সাংসদদের। তারপর সব বিধায়কদের। সকলের সঙ্গে কথাবার্তা সেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়ে যান বিধানসভা ছেড়ে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এরকমই বিভিন্ন টুকরো মুহূর্ত ধরা পড়ল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলের সাংসদ-বিধায়করা একসঙ্গে বিধানসভায় ভোট দিতে আসায় তৈরি হয়েছিল এই ধরনের বিরল মুহূর্ত, বিধানসভার অলিন্দে যা চর্চিত হবে বহুকাল।

Latest article