প্রতিবেদন : বিচারবিভাগের স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে অবসরের পর বিচারপতিদের নানারকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হোক। এবার এই দাবিতে সরব হলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি দীপক গুপ্ত। তাঁর দাবি, এই সুবিধা দেওয়া বন্ধ হলেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে দেশের বিচার বিভাগ। অবসরের পর অন্য সুবিধাপ্রাপ্তির অঙ্ক না থাকলে কোনও চাপ তৈরি করাও যাবে না। সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল পদে নিয়োগ করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস আবদুল নাজিরকে।
আরও পড়ুন-মনরেগায় বরাদ্দ কম, ব্লকস্তরে আন্দোলন
এই সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা করেছে একাধিক বিরোধী দল এবং রাজনৈতিক- সামাজিক সংগঠন। বলা হয়েছে, অবসরের পর আকর্ষণীয় পুনর্বাসনের টোপ দিয়ে বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করতে চায় মোদি সরকার। অবসরের পর অন্য পুনর্বাসনের সুযোগ থাকলে বহুক্ষেত্রে মামলার রায় প্রভাবিত হতে পারে। বিচারপতি নাজিরের একাধিক রায়ে বিজেপি সরকারের সুবিধা হয়েছে বলে মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। এই প্রেক্ষাপটেই এমন মত জানালেন শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি দীপক গুপ্ত।
আরও পড়ুন-বিশ্বভারতী সমাবর্তনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী
বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত এক আলোচনাসভায় বিচারপতি গুপ্ত বলেন, আদালতের বিচারপতি ও বিচারকদের জন্য অবসরের পর একাধিক সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কারণ স্বাধীন বিচারব্যবস্থার সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না এই ব্যবস্থা। সংবিধানকে রক্ষা করার দায়িত্ব বিচারপতিদেরই। তাই মেরুদণ্ড বিকিয়ে না দিয়ে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে হবে তাঁদের। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা কলেজিয়াম বিতর্ক নিয়েও মুখ খোলেন বিচারপতি। বলেন, বিচারবিভাগের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত অত্যন্ত বিপজ্জনক। এইভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছতেই পারবেন না যোগ্য বিচারকরা।
আরও পড়ুন-বাংলার সমস্ত শ্রমজীবী মানুষ আসবেন একছাতায়
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক রাম মন্দির মামলার অন্যতম বিচারপতি এস আবদুল নাজির তাঁর অবসরের ৪০ দিনের মাথায় কেন্দ্রের তরফে বিশেষ রাজনৈতিক পুরস্কার পেয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করেছে বিজেপি সরকার। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এপ্রসঙ্গেই দীপক গুপ্তর মত, সংবিধান রক্ষা করতে বিচারপতিদের সুবিধা দেওয়া বন্ধ করতে হবে সরকারকে। সরকারের তরফে এইরকম সুযোগ সুবিধার আশ্বাস দেওয়া হলে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না বিচারকরা।