গাজনের শোভাযাত্রায় সম্প্রীতির সুর কাটোয়ায়

Must read

সংবাদদাতা, কাটোয়া : সম্প্রীতির নজির মিলল গাজন (Gajan Festival) সন্ন্যাসীদের শোভাযাত্রায়। প্রথা অনুযায়ী কেতুগ্রামের ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৬টি গাজন কমিটির ‘ভক্ত’ সন্ন্যাসীরা এদিন নিজের নিজের গ্রাম থেকে শিব ঠাকুরকে নিয়ে খালি পায়ে শোভাযাত্রা করে উদ্ধারণপুরের কালো রুদ্রতলায় জমায়েত হন। সেখানে ভাগীরথীর ঘাটে স্নান করে আবার একই পথে ফেরেন। যাওয়ার পথে অভিনব দৃশ্য দেখা গেল স্থানীয় আগরডাঙা পঞ্চায়েতের আরনা গ্রামে। মুসলিম অধ্যুষিত এই গ্রামের মহিলারা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে সন্ন্যাসীদের ডাবের জল, দুধ খাওয়ান। ভক্তরাও নির্দ্বিধায় তা পান করে সম্প্রীতির সুরে সুর মেলান।

আরও পড়ুন-সংকটমোচনে দুয়ারে মন্ত্রী

গাজন (Gajan Festival) উপলক্ষে কেতুগ্রামে আজও দেখা যায় পোড়ো বোলান। কান ফাটানো চিৎকার, শকুনিদের চিঁহি চিঁহি আওয়াজের সঙ্গে ডাকিনী-যোগিনীদের বেলাগাম উল্লাস। শিঙা ফুঁকছেন মহেশ্বর। পাশেই নাচছেন কালী, আক্ষরিক অর্থে রণচণ্ডী। মাঝে পড়ে থাকা নরমুণ্ডের পাশে পুড়ছে সস্তার ধূপ। রাতের স্তব্ধতা ছিঁড়ে কখনও মৃদু, কখনও চড়ায় বেজে উঠছে ঢাক। সঙ্গে কাঁসির যোগ্য সঙ্গত। এভাবে  গড়ে তোলা হয় শ্মশানের আবহ। এমন বোলান গানের আজও দেখা মেলে কাটোয়া মহকুমা ও লাগোয়া বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামে। বোলানের এই রীতিকে ‘পোড়ো বোলান’ বা ‘শ্মশান বোলান’ বলা হয়। বোলান গানের ৪ রীতি দাঁড়া, পালা, সখি ও পোড়ো বা শ্মশান। পোড়ো বোলান ঘরানাটি লুপ্তপ্রায়। তবু কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর, মৌগ্রাম, মুর্শিদাবাদের এঁড়েরা-সহ হাতে-গোনা কয়েকটি জায়গায় আজও এই ভয়াবহ পোড়ো বোলান দেখা ও শোনা যায়। এই গানের আরাধ্য মহাদেব।

Latest article