প্রতিবেদন : হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত এড়াতে এবং হাতিকে সুরক্ষিত রাখতে রাজ্যে ১৪টি হাতির করিডর তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। এরজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করার জন্য দাবি জানানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। প্রতিটি করিডরের ব্যাপ্তি অন্তত ৫ কিমি। এক-একটির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার নিউটাউনে কেন্দ্রীয় বন দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। তিনি বলেছেন, হয় টাকা দিন নাহলে জঙ্গলের অধিকার ছাড়ুন। উপস্থিত ছিলেন বন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda)। কলকাতা সফররত আইজি ফরেস্ট রমেশ পাণ্ডের সঙ্গে এই বৈঠকে মতবিনিময় করেন পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশার বনবিভাগের শীর্ষকর্তারা। বাংলায় হাতি এবং মানুষকে একইসঙ্গে সুরক্ষিত রাখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিক উদ্যোগের কথা এদিন দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা হয় বৈঠকে। বনমন্ত্রী (Jyotipriya Mallick) জানান, একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই মারা হয় না হাতিকে। মানুষের জীবনকে সুরক্ষিত রাখার জন্যও নেওয়া হয় জরুরি ব্যবস্থা। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ৭টি এবং দক্ষিণবঙ্গে ৪টি হাতির করিডর তৈরি হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীরই উদ্যোগে। এই করিডরের সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য রাজ্য বন দফতরের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয় কেন্দ্রকে। মনে করিয়ে দেওয়া হয়, পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের আরও ৫টি রাজ্য ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশে হাতির করিডর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই উদ্যোগে। এরাজ্যে হাতির আক্রমণে মানুষের মৃত্যু হলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের পক্ষ থেকে তাঁর বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৫ লক্ষ টাকা। পরিবারের একজন সদস্যকে দেওয়া হয় ফরেস্ট গার্ডের চাকরি। হাতি কৃষকদের ফসল নষ্ট করলে দেওয়া হয় ক্ষতিপূরণ। ঘরবাড়ি ভাঙলেও একই ব্যবস্থা। অন্য কোনও রাজ্যে ভাবা যায় না এটা। বনমন্ত্রীর হিসেব বলছে, হাতির হামলায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ক্রমশই নিম্নমুখী। ২০১৯-২০ তে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৩৪। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৭। ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ফলেই সম্ভব হয়েছে তা। এই বিষয়টাই তুলে ধরেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমার এবং মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত।
আরও পড়ুন-ওবিসি পড়ুয়াদের ‘মেধাশ্রী’ প্রকল্পে ভাতা দেবে রাজ্য, ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী