পে-স্লিপ দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে

রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

Must read

প্রতিবেদন : রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক শ্রমিককে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই পে-স্লিপ দিতে হবে বলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ না মানা হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে ১৫ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের শ্রম দফতর পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করে দেবে বলে দফতরের মন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন। স্থায়ী শ্রমিকের পাশাপাশি ঠিকা শ্রমিকদেরও পে-স্লিপ দিতে হবে বলে শ্রম দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন-আরও সংকটে ঐন্দ্রিলা

রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পে-স্লিপ না দেওয়ার ফলে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার প্রসঙ্গ উঠে আসে। এই প্রেক্ষিতেই শ্রমমন্ত্রী পে-স্লিপ নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত ও কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন। পরে এই মর্মে শ্রম দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে। যেখানে বলা হয়েছে শ্রমিক-কর্মচারীদের পে-স্লিপে তাঁদের বেতনের পরিমাণের পাশাপাশি প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ইএসআই সংক্রান্ত তথ্য এবং তার বিনিময়ে মাসে কত টাকা তাঁর বেতন থেকে কাটা হচ্ছে তা উল্লেখ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মী যদি মহার্ঘভাতা বা অন্যান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পান তাহলে তাও জানাতে হবে ওই পে-স্লিপে। রাজ্য সরকারের এই নির্দেশ কার্যকর হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ শ্রমিক ও কর্মচারী উপকৃত হবেন। বেসরকারি সংস্থায় যে সব শ্রমিক ও কর্মচারীরা কাজ করেন তাঁরা যদি পে-স্লিপ পান তাহলে প্রথমত তাঁরা প্রমাণ করতে পারবেন যে তাঁরা ওই সংস্থার কর্মী। দ্বিতীয়ত, পে-স্লিপ দিলে সেখানে ওই শ্রমিক বা কর্মচারীর বেতন কত তা জানাতে হবে।

আরও পড়ুন-পরিষেবা বন্ধ করে তাণ্ডব চালাল বিজেপি

তৃতীয়ত, সেই পে-স্লিপে উল্লেখ করতে হবে ওই শ্রমিক বা কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিএফ এবং ইএসআই বা মেডিক্যাল সুবিধা পাচ্ছেন কি না। পেলে প্রতি মাসে কত টাকা তাঁর বেতন থেকে কাটা হচ্ছে তাও জানাতে হবে। তিনি যদি ডিএ বা অনান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পান তাহলে তাও জানাতে হবে ওই পে-স্লিপে। এতদিন এই পে-স্লিপ দেওয়া বাধ্যতামূলক না থাকায় বেসরকারি শিল্পসংস্থার মালিকরা খাতায়-কলমে কর্মীদের সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা দেখালেও শতকরা ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখে যেত ওই সব সংস্থার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মীরা সবরকমের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন। কোথাও কোথাও কম দিয়ে খাতায়-কলমে বেশি বলেও দেখানো হত। এবার এই ছবিটাই বদলে যেতে চলেছে বঙ্গে।

আরও পড়ুন-শুভেন্দুর মন্তব্যে ক্ষমা চাইতে পারবেন মোদি- শাহ? বিজেপিকে তোপ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের  

রাজ্যের শ্রম দফতরের মন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল নতুন বেতন চুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সেখানেই মলয়বাবু পে-স্লিপ নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত ও কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন। সেই সঙ্গে বলে দেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের বেতনেই সবাইকে পে স্লিপ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, ঠিকাদারদেরও পে-স্লিপ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়ে দেন। তবে ওই বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনগুলি প্রতি বছর ন্যূনতম ১৫০০ টাকা বেতন বৃদ্ধির দাবি তোলে যা মানতে রাজি হননি মালিক প্রতিনিধিরা।

Latest article