মণীশ কীর্তনীয়া: সেই প্রভাতে কে বলে গো নেই আমি… যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে…. তখন আমায় নাই বা মনে রাখলে……
তিনি আজ কোথাও নেই কিন্তু সর্বত্রই আছেন। তাঁরই অকাল প্রয়াণে মঙ্গলবার বালিগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচন। ভোটের রোজনামচার ছবির পাশেই আর একটা ছবি ধরা পড়ছে গড়িয়াহাটের একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবে। যা প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ক্লাব বলেই পরিচিত। এ ছবিতে না আছে উত্তেজনা না আছে ভোট নিয়ে মাতামাতি। আছে শুধু বিষণ্ণতা, স্মৃতিচারণা।
আরও পড়ুন-বয়স্কদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন ট্রপিক্যালে
সুুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন ২০২১ এর নভেম্বর। কিন্তু এবারের উপনির্বাচন অন্যরকমের অন্য আবেগের। দীর্ঘ দশকের পর দশক ধরে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন এ অঞ্চলের অভিভাবক৷ সুখে-দুঃখে জড়িয়ে ছিলেন এলাকার মানুষের সঙ্গে। একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাব ছিল তাঁর প্রাণ। সেই তিনি আজ নেই৷ একডালিয়া ক্লাবে গিয়ে দেখা হল ৪৮ বছর ধরে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী স্বপন মহাপাত্রর সঙ্গে। ভোটের সকালে এদিক-ওদিক ঘুরে এসে বসে আছেন একডালিয়া ক্লাবে। সুব্রত মুখোপাধ্যায় যে চেয়ারটিতে বসতেন সেখানে এখন তাঁর বড় মাপের ছবি রাখা। ক্লাব সদস্যরা মাঝে মধ্যে এসে বসেন। কিন্তু আগের সেই জমজমাট আড্ডা আর হয় না৷ যা হত তাদের ‘দাদা’কে ঘিরে৷ স্বপন মহাপাত্র স্মৃতিতে ডুব দিলেন, সুব্রতদা তাঁর জীবনে মোট ১৫ বার ভোটে লড়েছেন।
আরও পড়ুন-নজরদারিতে ই-প্রেসক্রিপশন
প্রথম ভোট এই বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকেই। একটি ভোট বাদ দিয়ে আজীবন সুব্রতদার সঙ্গে থেকেছি। আজ উপনির্বাচন হচ্ছে, মনে পড়ছে ১৯৮৭ সালের মার্চ মাসের আরও একটি উপনির্বাচনের কথা। তৎকালীন জোড়াবাগান বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন একটি জায়গায় রিগিং হচ্ছে শুনে সুব্রতদা আর আমি ছুটে গিয়েছিলাম। রাগে সুব্রতদা দোতলা থেকে ব্যালট বাক্স ফেলে দিয়েছিলেন। আর আজ আর একটা উপনির্বাচন হচ্ছে তাঁরই মৃত্যুর কারণে। এ যে কতবড় যন্ত্রণার বোঝানো যাবে না। চোখে জল ধরে আসে স্বপন মহাপাত্রর। সুব্রত জায়া ছন্দবাণী মুখোপাধ্যায় এদিন সকাল ৮টার মধ্যে ভোট দিয়ে সেই যে বাড়িতে ঢুকেছেন আর বেরোননি৷ পাছে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে হয়।