রেড রোডে আছড়ে পড়ল জনস্রোত, মেগা শোয়ে ভাসল তিলোত্তমা

কার্নিভালের জন্য সাধারণ মানুষদের যেন অসুবিধা না হয় সেটার দিকে নজর রেখেছিল পুলিশ। প্রতিবারের মতো মূল মঞ্চের জন্য ছিল কড়া নিরাপত্তা।

Must read

প্রতিবেদন : এ-যাবৎকালের মধ্যে সত্যিকারের মেগা পুজো কার্নিভালের সাক্ষী থাকল কলকাতা। কোনও কার্ড, পাস, আমন্ত্রণপত্র ছাড়াই কার্নিভালের দরজা সকলের জন্য খুলে দিয়ে ‘মুড সেট’ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো শুক্রবার দুপুর গড়াতেই রেড রোডে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। অন্যবারের মতো ১৫-১৬ হাজার নয়, পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষের বসার আয়োজন করা হয়েছিল। দুপুর ৩টের আগেই সব আসন কানায় কানায় ভরে যায়। রাস্তায় বসে-দাঁড়িয়ে অপেক্ষা শুরু করেন মানুষ।

আরও পড়ুন-হারতে হারতে হারাধন বিজেপি, দিলীপের মন্তব্য ঘিরে ঝড়, তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের

সাড়ে তিনটে নাগাদ রেড রোডে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। স্পেন ও দুবাই সফর সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ফিরেছিলেন গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়। তার পরের দিনই তিনি গিয়েছিলেন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। তাঁর পায়ের পুরনো জায়গায় নতুন করে চোট পাওয়ায় চিকিৎসা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে গৃহবন্দি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পুজো কাটবে তাঁর বাড়িতে বসেই। একদম ২৭ তারিখ কলকাতার রেড রোডের কার্নিভালে সবার সঙ্গে তাঁর দেখা হবে। সেইমতো শুক্রবার ৩৩ দিন পর তিনি বাড়ির বাইরে পা রাখলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে আজানিয়া ও মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী আসেন রেড রোডে। সেখানে বসেই তিনি দেখেন কার্নিভাল। এদিন রেড রোডের কার্নিভালে মোট ৯৬টি পুজো অংশগ্রহণ করে। এদিনের কার্নিভালে বিশেষ আকর্ষণ ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী তথা নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর স্কুল ‘দীক্ষামঞ্জরী’র ছাত্রছাত্রীদের নাচ। ডোনার ট্রুপের অনুষ্ঠান দিয়েই ঠিক চারটেয় শুরু হয় কার্নিভাল। যে গানটির সঙ্গে ডোনা এবং তাঁর সহশিল্পীরা নাচলেন, সেটি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গেয়েছেন মনোময় ভট্টাচার্য।

আরও পড়ুন-মা তোর একই অঙ্গে এত রূপ দেখিনি

একে একে আসতে থাকল বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, দমদম পার্ক তরুণ দল-সহ বাকিরা। এক একটা পরিচিত মুখ চোখে পড়ছে আর মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারে বসেই হাত নেড়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। সেইসঙ্গে তারিফ করছেন রঙিন চোখধাঁধানো আলোর খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সঙ্গে মনমাতানো গান। মাঝেমধ্যেই নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী। রামমোহন সম্মিলনীর ঠাকুর এল। সঙ্গে ‘দে দোল দোল’ গানের সঙ্গে মহিলাদের অনুষ্ঠান। এবার মঞ্চেই বৈঠা হাতে গানের সঙ্গে তাল মেলাতে শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার দেখা গেল দক্ষিণেশ্বর ডোমেস্টিক এরিয়ার পুজো কমিটির অনুষ্ঠানের মধ্যে থেকে একতারা-সহ বাউল সাজের এক শিশুকে মঞ্চে নিয়ে এলেন। ফিরহাদ হাকিমের কোলে সেই শিশুকে চকোলেট দিয়ে আদর করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশে তখন আর এক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আজ গোটা রেড যেন নক্ষত্র সমাবেশ। সমস্ত দূতাবাসের কর্তারা উপস্থিত।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

কার্নিভালের জন্য সাধারণ মানুষদের যেন অসুবিধা না হয় সেটার দিকে নজর রেখেছিল পুলিশ। প্রতিবারের মতো মূল মঞ্চের জন্য ছিল কড়া নিরাপত্তা। একের পর এক সেরা পুজোর মণ্ডপ তাঁদের প্রতিমা নিয়ে হাজির হয় রেড রোডে৷ তবে, এই কার্নিভালের জন্যপ সাধারণ মানুষদের যেন অসুবিধা না হয়।

Latest article