প্রতিবেদন : মোদি জমানায় ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা মাত্রাছাড়া হয়ে উঠেছে বলে মনে করে মার্কিন প্রশাসন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। ওই বৈঠকেই মার্কিন বিদেশসচিব ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। এই বিষয়ে সতর্ক নজর রাখছে আমেরিকা। যদিও এ ধরনের মন্তব্য করে মার্কিন প্রশাসন সরাসরি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন-গণ-আন্দোলনের ডাক তৃণমূলের সিবিআই কি নিরেপক্ষ ?
ভারতের প্রতিরক্ষা ও বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর দুদেশের এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন বিদেশসচিব বলেন, সম্প্রতি ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঊর্ধ্বমুখী। সেদেশের কিছু সরকারি আধিকারিক, পুলিশ এবং জেল আধিকারিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পুরো বিষয়টির দিকে নজর রাখছে আমেরিকা। বিষয়টি নিয়ে আমরা আমাদের ভারতীয় বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। তবে নির্দিষ্টভাবে কোন কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন এই মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। ব্লিঙ্কেন যখন এই গুরুতর অভিযোগ করছেন সেই সময়ে সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অস্টিনও।
আরও পড়ুন-সংশোধনাগার সংস্কারে চিঠি
ওই মঞ্চে তাঁদের পাশেই ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। এভাবে কেন্দ্রের শীর্ষস্তরের মন্ত্রীদের সামনে আমেরিকা ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশের পর অস্বস্তিতে মোদি সরকার। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ব্লিঙ্কেন অভিযোগ জানানোর সময় দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই মন্ত্রী কোনও পাল্টা জবাব দেননি।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই বাইডেনের দলের সদস্য ইলহান ওমর ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হওয়া সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। ইলহান বলেছেন, ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য মোদি সরকার এমন কোনও কাজ করেনি যার জন্য আমরা ভারতকে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার অভিযানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গী হিসেবে ভাবতে পারি। ইলহানের ওই মন্তব্যের পর ব্লিঙ্কেনের সমালোচনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল।