ক’দিন আগে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি বিজেপির ন্যক্কারজনক রাজনীতি প্রমাণ করছে জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমানে নরেন্দ্র মোদির একমাত্র বিকল্প যদি কেউ থাকেন, তিনি হলেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ জন্যই বিজেপির এত ভয়।
এজন্যই ওদের অসভ্য আচরণ।
সোজা কথ, ওরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভয় পেয়েছে। তাঁর উন্নয়ন প্রকল্পের জনপ্রিয়তা টের পেয়ে ভয় পেয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার জন্য যা যা উন্নয়ন করেছেন বা বলা ভাল সমস্ত উন্নয়নের কর্মযজ্ঞগুলো এত আকর্ষক, এত জনমুখী, যে অন্য রাজ্যের মানুষজনও এই পরিষেবাগুলো পেতে মুখিয়ে বসে আছে।
আরও পড়ুন-বীণাপাণি দেবীর প্রয়াণে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধার্ঘ্য
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। আমার বহু বন্ধু-বান্ধব ভিন রাজ্যে বসবাস করেন। তাঁদের সঙ্গেও যখন কথা হয় তাঁরাও বলেন যে সবাই জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশনেত্রী হিসেবে চায়। অন্য কোনও কারণে নয়, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চান আগামী দিনে দেশের প্রয়োজনের জন্য, ভারতবর্ষের আম জনতার উন্নতির জন্য।
এটা বিজেপিও বুঝতে পারছে। আর পারছে বলেই যেন তেন প্রকারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকাতে উঠে পড়ে লেগেছে।
বিজেপি বুঝতে পারছে, ভারতবর্ষে তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র দল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র নেত্রী, যিনি বিজেপিকে পরাস্ত করতে পারেন। তার শিক্ষা বিজেপি বাংলায় পেয়েছে। আর সেই সূত্রে তারা এটাও হাড়ে হাড়ে বুঝে গিয়েছে, তিনিই একমাত্র নেত্রী যাকে এজেন্সি দিয়ে বা ধমকে চমকে কিছুই করা যায় না।
আরও পড়ুন-পুণেতে শিবির, দলে ৮ নতুন মুখ
২ মার্চের ঘটনাটা দেখে আমার বাংলার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। বিজেপি তখন বাংলায় এই কর্মকাণ্ডগুলো করছিল। ভেবে দেখুন, একজন জননেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ভারতেরই একটি রাজ্যে গিয়েছেন আর তাতেই এই মাত্রায় অসভ্যতামি। এর কি আদৌ প্রয়োজন ছিল? ঠিক এই কথাটাই আমি বলেছিলাম যখন আমিও ভুল সিদ্ধান্তে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। তখন প্রত্যেক অভ্যন্তরীণ মিটিং-এ এমনকী সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মিটিং-এও আমি বলেছিলাম যে বাংলায় এই ঘটনাগুলোই আসলে বিজেপির বিরুদ্ধে যাবে। বাংলার মানুষ এসব কিছুতেই ভালভাবে নেবে না। তখন অনেক নেতাই ভুরু কুঁচকেছিলেন। সেই সঙ্গে আমি এটাও বলেছিলাম যে ভবিষ্যতে নেত্রীকে এই ধরনের আক্রমণ করাল দলের ক্ষতিই হবে। সেদিন কেউ কেউ শুনলেও বেশিরভাগ নেতাই শোনেননি। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে যে গোপন মিটিং ছিল, সেখানেও আমি সমানভাবে এই বক্তব্য রেখেছিলাম। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখলাম বেশীরভাগ জায়গায় তার উল্টোটাই হল। যার ফল বাংলার নির্বাচনে বিজেপি হাতেনাতে পেয়েছে। তাই আজ বাংলায় বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবং সদ্য সমাপ্ত সকল পুরসভার ফলাফল প্রমাণ করছে যে বিজেপি আগামীদিনের অবস্থা আরও শোচনীয় হবে। কারণটা খুব পরিষ্কার। ভোট প্রাপ্তির শতাংশের হিসাবে তারা বামেদের থেকেও নীচে নেমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-জামশেদপুর ম্যাচই ফাইনাল : কৃষ্ণ
কিন্তু এত কিছুর পরেও কি বিজেপির কোনও শিক্ষা আছে?
এখনও এত দম্ভ!
এখনও এত অহংকার!
আমি বাংলার বিজেপি নেতাদের দেখলাম যে তারা বারাণসী কাণ্ডে আনন্দিত। এজন্যই আমার মনে হচ্ছে ঠিক এই নোংরামির জন্যই বিজেপি বাংলা থেকে মুছে গিয়েছে এবং বারাণসীর ঘটনা দেখার পর বলতে পারি, আগামীদিনে ভারতবর্ষ থেকেও বিজেপি ধীরে ধীরে মুছে যাবে। এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আরও পড়ুন-শেষ ম্যাচের আগে ক্ষমা চাইলেন মারিও
সেই সঙ্গে এটাও জোর গলায় বলতে পারি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র নেত্রী যিনি আগামীদিনে বিজেপির বিরুদ্ধে সার্বিক সংগ্রাম করে জাতীয় রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারবেন।
পারবেন। তিনিই পারবেন।