প্রতিবেদন : লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন৷ পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়ির দলীয় সভা থেকে জোড়া ফুলে জোড়া আসনের ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ একইসঙ্গে এই জেলার গ্রামে গ্রামে চাটাই বৈঠক ফেরানোর কথাও উঠে এল সভা থেকে৷ তমলুক সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও চেয়ারম্যান চিত্ত মাইতি–সহ জেলা নেতৃত্বকে সামনে রেখে এদিন নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধ হলে সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস৷
আরও পড়ুন-শিলাবৃষ্টির জের, নাসিকে পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৩০%
ভিড় উপচে পড়া এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বেশ কিছু বার্তা দিয়েছেন৷ সেই সঙ্গে দলবদলু কাঁথির নেতা গদ্দার অধিকারীকে তুলোধোনা করেছেন কুণাল৷ তাঁর কথায়, সামনেই লোকসভা নির্বাচন৷ দিল্লিতে সরকার পরিবর্তন হওয়ার একমাসের মধ্যেই গদ্দার গ্রেফতার হবে৷ এই জেলা থেকে দুটি আসন জিতলে তবেই গণতান্ত্রিকভাবে গদ্দারকে ঠাটিয়ে থাপ্পড় মারা হবে৷ সেখানেই কুণাল ডাক দেন, জোড়া ফুলে জোড়া আসন৷ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দলের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বেন মাঠে–ময়দানে৷ টিম তৃণমূল কংগ্রেস একযোগে মানুষের কাছে যাবে৷ এই জেলায় গ্রামে গ্রামে যে চাটাই বৈঠক একসময় ব্যাপকভাবে হয়েছিল সেই চাটাই বৈঠক আবার শুরু করতে হবে৷ কুণালের কথায়, শ্রোতা যদি মাটিতে বসে শোনেন, বক্তাও মাটিতে দাঁড়িয়েই বলবেন৷ তাঁর সংযোজন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ ও সামাজিক প্রকল্পগুলোকে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে৷ মানুষের কথা শুনতে হবে৷ তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে৷
আরও পড়ুন-যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর চাপ, পাল্টা শর্ত দিয়ে ‘কৌশল’ ইজরায়েলের
এদিন গদ্দারকে ধুয়ে দিয়ে কুণাল বলেন, ও পরিবারতন্ত্রের কথা বলে বারবার৷ কোন মুখে বলে? নিজের পরিবারের সবাইকে সব পদ পাইয়ে দিয়েছে৷ তার থেকেও বড় কথা, যে নিজের বাবার ভাল চায় না, সে পূর্ব মেদিনীপুরের ভাল কী করে করবে? ও তো শিশির অধিকারীর শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করেছিল৷ এত বড় নির্লজ্জ, বেহায়া৷ ওর সব চাই৷ দলের কর্মীদের প্রতি কুণালের বার্তা, এখন থেকেই কোমর বেঁধে নামুন৷ বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না৷ নতুন বক্তা তুলে আনুন৷ নতুনদের সুযোগ দিন৷ সিনিয়ররা মাথার উপর থেকে তাদের গাইড করুন৷ পূর্ব মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে যাঁরা গদ্দারকে চোর, চিটিংবাজ, জালিয়াত যদি না বলতে পারেন তবে তৃণমূলের সৈনিক হওয়ার অধিকার তাঁদের নেই৷ গদ্দার বারবার ১৯৫৬–র কথা বলে৷ কিন্তু পঞ্চায়েতে ও জেলাপরিষদে ১০ হাজার ৪০০–র বেশি ভোটে তৃণমূলের কাছে হেরে বসে আছে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কাজ করছেন৷ দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বাকিটা আমাদের করতে হবে৷ অভিষেক কথা দিলে কথা রাখেন৷ আজকেই বঞ্চিতদের বাড়িতে আর্থিক সাহায্য পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি৷
আরও পড়ুন-তৃণমূল কর্মী খুনে গ্রেফতার হল বিজেপির বুথ সভাপতি
রাজ্যওয়াড়ি বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরছে না৷ কোনও কোনও জায়গায় তারা সর্বোচ্চ ভাল ফল করেছে, কিন্তু আর এগোতে পারবে না ওরা৷ কংগ্রেস–সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি বিভিন্ন রাজ্যে যদি তারা দায়িত্ব পালন করে তৃণমূল কংগ্রেসও বাংলায় বিজেপিকে বুঝে নেবে৷ প্রধানমন্ত্রী এখন তেজস ওড়াচ্ছেন, বিশ্বকাপ দেখছেন অথচ সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের সামনে গিয়ে একবার দাঁড়াতে পারলেন না৷ এদিনের সভায় নতুন সভাপতি ও চেয়ারম্যান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র, ফিরোজা বিবি, তিলক চক্রবর্তী, মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, সুকুমার দে, জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিক ও দলের অন্যতম মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ–সহ অন্যরা৷