অলোক সরকার : আজকাল তিনি হাসলে খবর। রাগ করলেও। শুক্রবার এর কোনওটাই করেননি! তবু ভারত জিতল (India vs West Indies)। রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে ৮ রানে জয়। এক ম্যাচ বাকি রেখেই টি-২০ সিরিজ এখন রোহিতদের দখলে। তবে বিরাট-মঞ্চে পাওয়েল আর পুরানের এই লড়াই অনেকদিন মনে রাখবে ইডেন।
কী করলেন বিরাট কোহলি? এটাই যে একদম নিজের মতো ব্যাট করলেন। ৪১ বলে ৫২ রানের ছোট্ট ইনিংস। তাতে রাজার মতো ব্যাট ঘোরালেন। ভরসন্ধ্যায় ইডেনে তখন ভয়ানক পরিস্থিতি। দিশাহারা পোলার্ড যাঁকে পারছেন বল দিচ্ছেন। গুনে দেখা গেল সাত বোলার! ইদানীং টেমপ্লেট শব্দটা খুব ব্যবহার হচ্ছে। রোহিতের ম্যাচ ও সিরিজ জয়ের টেমপ্লেট বোধহয় তখনই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তা সে যতই পরে রুদ্ধশ্বাস লড়াই হোক।
এক ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ জিতল ভারত (India vs West Indies)। কিন্তু ৮ রানের নাটকীয় জয়? নাকি কিং কোহলির রাজকীয় প্রত্যাবর্তন, কোনটা বেশি নজর কাড়ল এই প্রশ্নে বিরাটই বোধহয় এগিয়ে থাকলেন। চেজকে যখন উইকেট উপহার দিয়ে ফিরে আসছেন, বিরক্তিতে নিজেকেই ধিক্কার দিলেন। শরীরী ভাষা সেটাই জানাল। তবে দিনের দেশে জয়। পকেটে ম্যাচ ও সিরিজ। ভিকের জন্য এটাই যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: অভিমান ভুলে ফিরলেন দলে
কাইল মেয়ারসকে (৯) চাহাল যখন ফেরত পাঠালেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৪ রানে দাঁড়িয়ে। ব্রেন্ডন কিং আর নিকোলাস পুরান মিলে এরপরও রান টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমস্যা হল এদের সঙ্গে ধারাবাহিকতা শব্দটা একদম যাচ্ছে না। না হলে জায়ান্ট স্ক্রিনের দিক থেকে এসে তৃতীয় বলেই রবি বিষ্ণোই কিংকে (২২) তুলে নিতে পারতেন না। বিষ্ণোই একই অ্যাকশনে উল্টো মারেন। প্রথম ম্যাচে দেখার পরও ক্যারিবিয়ানরা শিক্ষা নেয়নি! কিন্তু এরপর যা হল, সেটাই ক্রিকেটের মজা। পুরান (৬২) আর পাওয়েল (৬৮ নট আউট) মিলে ঠিক ১০০ রানের পার্টনারশিপ খেলে জয় প্রায় তুলে এনেছিলেন। কিন্তু শেষ দুই ওভারে ভুবনেশ্বর আর হরশল মিলে ক্যারিবিয়ানদের দৌড় থামিয়ে দিলেন।
চেজকে কিন্তু অ্যাক্রস খেলার দরকার ছিল না। বলটা স্পিন করে ভিতরে এসেছিল। বিরাট ফ্লিক করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনলেন। লাইন মিস করে বোল্ড কোহলি!
তার আগে মনে হচ্ছিল কোথায় তিনি ফর্ম হারিয়েছেন। চাবুকের মতো ব্যাট ঘোরালেন। বিরাট সম্পর্কে সানি গাভাসকর ক’দিন আগে বলেছিলেন, ওর ব্যাটিংয়ে কোনও সমস্যা নেই। শুধু কপালটা সঙ্গে থাকছে না। এদিন অবশ্য কপালের দোষ দেওয়া যাবে না। সেট ব্যাটসম্যানের কাছে লম্বা ইনিংস দেখছিল ইডেন।
পোলার্ড এদিন টসে জিতে রোহিতকে আগে ব্যাট করতে দিলেন। অতঃপর শেলডন কট্রেল ১০ রানে ঈশান কিসানকে (০) তুলে নিয়ে ভালই ধাক্কা দেন। তবে রোহিত (১৯) আর বিরাট মিলে সেটা সামলে নিয়েছিলেন। কিন্তু ৫৯/১ থেকে খুব তাড়াতাড়ি ভারত ১০৬/৪ হয়ে গেল আগের ম্যাচগুলোর মতোই। মিডল অর্ডার ব্যর্থতা চলছেই। রোহিতের পর ফিরলেন সূর্যকুমার যাদব(৮)। তারপর বিরাট।
পঞ্চম উইকেটে ঋষভ পন্থ ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার ৮৪ রান যোগ না করলে ভারত কিন্তু ২০ ওভারে ১৮৬/৫ তুলতে পারত না। ভেঙ্কটেশ ৩৩ রান করে গেলেন। তবে পরের দিকে আসল কাজটা করে গেলেন ঋষভ। ২৮ বলে ৫২ নট আউট। সাতটি চার ও একটি ছয়। অবিশ্বাস্য শট নিয়ে ইডেন মাতিয়েছেন তিনি।