একসঙ্গে ৩৮ জনকে ফাঁসির সাজা, আমেদাবাদে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ মামলা

২০০৮ সালের ২৬ জুলাই আমেদাবাদে ৭০ মিনিটের মধ্যে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে ৫৬ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হন।

Must read

অনন্ত গুছাইত, নয়াদিল্লি : ২০০৮ সালে গুজরাতের আমেদাবাদে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ মামলায় শুক্রবার ৪৯ জন দোষীর মধ্যে ৩৮ জনকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভারতে এই প্রথম কোনও একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া এতজন অপরাধীকে একসঙ্গে ফাঁসির সাজা শোনানো হল। এই মামলায় বাকি ১১ জন দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত তাদের কারাগারে শাস্তি ভোগ করতে হবে। ধারাবাহিক বিস্ফোরণ কাণ্ডের এই মামলাটিকে বিশেষ আদালত ‘বিরলতম মামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। এর আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় একসঙ্গে ২৬ জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল চেন্নাইয়ের টাডা কোর্ট। আমেদাবাদ বিস্ফোরণ মামলায় বিশেষ আদালত গত সপ্তাহে ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ২৮ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয়।

আরও পড়ুন:এক ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ ভারতের, বিরাট-মঞ্চে রুদ্ধশ্বাস জয়

২০০৮ সালের ২৬ জুলাই আমেদাবাদে ৭০ মিনিটের মধ্যে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে ৫৬ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হন। যার মধ্যে রাজ্য সরকার-চালিত সিভিল হাসপাতাল, আমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন পরিচালিত এলজি হাসপাতাল, বাস, পার্ক করা সাইকেল ও গাড়িতে লাগাতার মোট ২২টি বোমা বিস্ফোরণ হয়। কলোল এবং নরোদায় একটি করে বিস্ফোরণ ঘটে। ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধি, ইউএপিএ, বিস্ফোরক পদার্থ আইন এবং জনসম্পদ ক্ষতি আইনের বিভিন্ন ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একজন অভিযুক্তকে অস্ত্র আইনেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৭৭ জন অভিযুক্তর বিরুদ্ধে বিচার শেষ করেছিল আদালত।

আরও পড়ুন:অভিমান ভুলে ফিরলেন দলে

বিচারাধীন ৭৮ জন অভিযুক্তর মধ্যে একজন, আয়াজ সৈয়দ রাজসাক্ষী হয়েছিলেন। পুলিশ দাবি করেছিল, সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম) এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (সিমি)-র সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃতদের। ২০০২ সালে গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার প্রতিশোধ নিতেই আইএম জঙ্গিরা এই ভয়ঙ্কর ‘সিরিয়াল’ বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছিল। আমেদাবাদে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের কয়েক দিন পরে পুলিশ সুরাটের বিভিন্ন অংশ থেকে বোমা উদ্ধার করে। পরবর্তীকালে আমেদাবাদে ২০টি এবং সুরাটে ১৫টি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছিল।

আদালত সমস্ত এফআইআর একত্রিত করার পরে বিচার শুরু করে। এই মামলার রায় ঘোষণা করে বিচারক এ আর প্যাটেল বিস্ফোরণে নিহতদের ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি গুরুতর আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং নাবালকদের জন্য ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ আদালত।

Latest article