নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : মানোন্নয়নের নাম করে ঘুরপথে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ভারতীয় রেল (Indian Railway)। স্টেশনের মানোন্নয়ন সহ একাধিক পরিকাঠামো উন্নয়নের নাম করে ফি নিয়ে রেলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল দফতর (Indian Railway)। স্টেশন ডেভেলপমেন্ট ফি যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে ভারতীয় রেলবোর্ড। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই সরব তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) সহ বিরোধী দলগুলি। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার কৌশল করে একদিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছে রেলকে, অন্যদিকে ঘুরপথে সাধারণ মানুষের উপর বাড়তি বোঝা চাপাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক বিপন্নতা যখন বাড়ছে তখন রেলের এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত জনস্বার্থবিরোধী।
ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি সামনে এসেছে। এটি সব জোনের জেনারেল ম্যানেজারদের কাছে পৌঁছেও গিয়েছে। এতে উল্লেখ আছে স্টেশন মানোন্নয়ন ফি বাবদ লেভি গ্রহণ করা হবে। আর সেই লেভি আদায় করা হবে যাত্রীদের কাছ থেকেই। যাত্রাপথের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে এই লেভি। রেলের প্যাসেঞ্জার মার্কেটিং বিভাগের ডিরেক্টর বিপুল সিংহলের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অসংরক্ষিত আসন থেকে বাতানুকূল আসনের জন্য টিকিটের দামের সঙ্গে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা অতিরিক্ত মূল্য গুনতে হবে যাত্রীদের। ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে জারি করা ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, অসংরক্ষিত যাত্রায় স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের, দ্বিতীয় শ্রেণির যাত্রীদের, এক্সপ্রেস ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের ও প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের ক্ষেত্রে যাত্রার সময় অতিরিক্ত ১০ টাকা ভাড়া বাবদ দিতে হবে। অন্যদিকে নন এসির ক্ষেত্রে, দ্বিতীয় শ্রেণির, সাধারণ স্লিপার ক্লাসের, এক্সপ্রেস স্লিপার ক্লাসের ও প্রথম শ্রেণির জন্য দিতে হবে অতিরিক্ত ২৫ টাকা করে। একইভাবে সংরক্ষিত এসি কামরায়, এসি চেয়ারকার, এসি থ্রি- টায়ার, এসি টু-টায়ার, এসি প্রথম শ্রেণি, এক্সিকিউটিভ চেয়ারকার ও ভিস্টাডোমের জন্য লেভি বাবদ অতিরিক্ত ৫০ টাকা দিতে হবে যাত্রীদের৷ এছাড়াও ভাড়া বাড়ছে প্ল্যাটফর্ম টিকিটেরও।
আরও পড়ুন-ভারতে কোভিড মৃত্যু সরকারি সংখ্যার চেয়ে ৬ গুণ বেশি! সমীক্ষা
ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, রেলের ক্ষেত্রে যদি বেসরকারীকরণ করার সিদ্ধান্তই নেওয়া হয় তাহলে আগ বাড়িয়ে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন? আসলে এটা নতুন করে রাজস্ব আদায়ের আরেকটি কৌশল মাত্র। অন্যদিকে রেলের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, এর ফলে বেশ কিছু স্টেশনের মানোন্নয়ন করা সম্ভব হবে। আর প্রশ্নটা এখানেই। প্রতি বছর রেল বাজেটে স্টেশনের মানোন্নয়ন ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য এক বিশাল অঙ্কের টাকা অনুমোদন করে সরকার। তাহলে যাত্রীদের থেকে ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের জন্য এই নতুন বিজ্ঞপ্তির অর্থ কী?