নিতান্তই সহজ সরল মানুষ তিনি। রাজনীতির মারপ্যাঁচ বোঝেন না একেবারেই। বাড়ির অতি সাধারণ গৃহবধূ সুমিতা বর্মন। যাঁর জগৎ বলতে ছিল চান্দামারি গ্রামটুকু ঘিরে, সেই তিনিই কিনা কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি। স্বপ্নেও ভাবেননি এমন গুরু দায়িত্ব পাবেন। দায়িত্ব পেয়ে জেলার সিনিয়র নেতৃত্বদের বাড়ি যাচ্ছেন। পা ছুঁয়ে প্রণাম করে তিলে তিলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছেন সভাধিপতি। রাজনীতির কৌশল ও উন্নয়নের কাজ কী করে সামঞ্জস্য রেখে করতে হয় তা অবশ্য তাঁকে শেখাচ্ছেন তাঁর ব্লক সভাপতি স্বামীও।
আরও পড়ুন-প্রথম ইতিহাস তৈরি হয় সেই ২০০৮ সালেই, চন্দ্রযান-১
n কেমন আছেন?
F (এক গাল সহজ সরল হাসি )
খুব ভাল আছি।
n হঠাৎ করে সভাধিপতির পদ পেলেন, কী বলবেন?
F আমি সভাধিপতি হব তা স্বপ্নেও ভাবিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক ধন্যবাদ।
n কত ভোটে জিতেছিলেন আপনি?
F (আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উঁচু স্বরে উত্তর ) ২৯ হাজার। বিজেপির প্রার্থী মনোরমা বর্মনকে হারিয়ে ১৫ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হয়েছি।
আরও পড়ুন-দুই বিমানের দূরত্ব মাত্র ১.৮ কিমি, মহিলা পাইলটের দক্ষতায় প্রাণ বাঁচল ৩০০ যাত্রীর
n কী কায়দায় এমন প্রচার করলেন যে এত ভোট পেলেন?
F জানেন তো একমাত্র আমি ভাগ্যবতী যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর একটি মাত্র জনসভা হয়েছিল আমার জেলা পরিষদ আসনে। হয়তো সেজন্যই এত ভাল ফল। এমনিও আমি কর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়েছি। ছোট-বড় সভা করেছি।
n আপনার স্কুল জীবন?
F আমি চান্দামারি প্রাণনাথ হাইস্কুলে পড়া শেষ করে দেওয়ানহাট কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছি।
আরও পড়ুন-আইসিইউতে জুতো খোলার কথা শুনে বুলডোজার-হুমকি, লখনউ মেয়রের কীর্তি
n এরপর?
F বিয়ের পরে সবার মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমার কুড়ি মাসের পুত্রসন্তান আছে। তাকে সামলাতেই সারাদিন কাটত। কখনও রাজনীতি করিনি। স্বামী জ্যোতির্ময় দাস কোচবিহার ১ ব্লকের সভাপতি। এবারই প্রথম জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হয়েছিলাম। সভাধিপতির দায়িত্ব দিয়েছে দল। এই দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করব।
আরও পড়ুন-আর কত মিথ্যে বলবেন মোদিজি?
n আপনার প্রথম কাজ কী হবে বোর্ড গঠনের পরে?
F আমার প্রথম কাজ হবে পানীয় জলের ব্যবস্থা সব গ্রামে। পথশ্রী, রাস্তাশ্রী প্রকল্পে যেগুলি বাকি, গ্রামের সেই রাস্তাগুলির কাজ দ্রুত শেষ করতে চাই। মহিলা স্বনির্ভর দলগুলি নিয়ে কী কী উন্নতির কাজ করা যায় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেব।
n সভাধিপতি হয়ে দেখছি অনেক নেতার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রণাম করছেন। কী আলোচনা হচ্ছে?
F তাঁদের থেকে পরামর্শ নিচ্ছি। শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তাঁরা। পরামর্শ নিচ্ছি সিনিয়র নেতাদের থেকে। মূলত কীভাবে উন্নয়নের কাজ করব সে ব্যাপারেই। সবার সঙ্গে কথা বলে কাজ করব।
আরও পড়ুন-রাজ্য সরকারের জেলাভিত্তিক ট্যুর প্যাকেজ
n আপাতত কী করছেন?
F আমি এখন সবার ফোন নম্বর জোগাড় করছি। জেলা পরিষদ সদস্য, প্রধান, উপপ্রধানদের ফোন নম্বরগুলি সংগ্রহ করে ডায়েরিতে নোট করছি। তাঁদের সবার সঙ্গেও কথা বলব।
n একদিকে সংসার, এদিকে সভাধিপতির দায়িত্ব, কী করে সামলাচ্ছেন?
F আমি গ্রামের মহিলা,আমার কাছে গ্রামের মানুষের প্রত্যাশা তো অনেক। ধীরে ধীরে সব উন্নয়নের কাজ করব।
আরও পড়ুন-যাদবপুর-কাণ্ডে অরিত্রকে জেরা, ডেকে পাঠানো হল ক্যান্টিন কর্মীদের
n অবসর সময়ে কী করতে ভাল লাগে?
F রাজবংশী গান শুনতে ভাল লাগে। তবে ইদানীং খবরের কাগজ পড়ছি নিয়মিত। জাগোবাংলা পত্রিকাও পড়ছি নিয়মিত।